ঈদে খুলনা মহানগরীতে বাসা-বাড়ি, ব্যাংক, বীমা প্রতিষ্ঠান ও বিপণি বিতানের নিরাপত্তায় সতর্কতামূলক নির্দেশনা জারি করেছে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ।
শনিবার (২২ মার্চ) কেএমপির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়-
পবিত্র ঈদুল ফিতর উৎসবমুখর ও নিরাপদ পরিবেশে উদযাপনের লক্ষ্যে এবং ঈদে বাসা-বাড়ি, ব্যাংক, বীমাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণি-বিতানের সার্বিক নিরাপত্তায় খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ সকল ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। কেএমপি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে পুলিশের গৃহীত পদক্ষেপের পাশাপাশি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে নিরাপত্তা সচেতনতাবোধ তৈরি করা গেলে সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে ও অপরাধ দমনে অধিকতর সফল হওয়া সম্ভব। কেএমপির গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি ঈদে বাসা-বাড়ি, ব্যাংক, বীমাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণি-বিতানের অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিম্নবর্ণিত নির্দেশনাসমূহ মেনে চলার জন্য সম্মানিত নগরবাসীকে অনুরোধ করা হলো:-
বাসা-বাড়ির নিরাপত্তায় করণীয়ঃ
(ক) বাসা-বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্টের নিরাপত্তায় নিয়োজিত নিরাপত্তা রক্ষীদেরকে অধিকতর সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। অপরিচিত লোক যাতে প্রতারণার মাধ্যমে তাকে ম্যানেজ করে বাসা-বাড়িতে প্রবেশের সুযোগ না পায়, সেজন্য তদারকির ব্যবস্থা নিতে হবে।
(খ) বাসা-বাড়ি ত্যাগের পূর্বে দরজা-জানালা সঠিকভাবে তালাবদ্ধ করি। প্রয়োজনে একাধিক তালা ব্যবহার করি। দরজা-জানালা দুর্বল অবস্থায় থাকলে তা মেরামত করে যথাসম্ভব সুরক্ষিত করি।
(গ) বাসা-বাড়িতে পর্যাপ্ত সংখ্যক সিসি ক্যামেরা স্থাপন করি এবং স্থাপিত সিসি ক্যামেরাসমূহ সচল থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করি।
(ঘ) বাসা-বাড়ির মূল দরজায়/ ফটকে অটোলক ও নিরাপত্তা এ্যালার্মযুক্ত তালা ব্যবহার করি।
(ঙ) রাতে বাসা-বাড়ির চারপাশ পর্যাপ্ত আলোকিত রাখার ব্যবস্থা করি।
(চ) অর্থ, মূল্যবান সামগ্রী ও দলিল নিরাপদ স্থানে বা নিকট আত্মীয়ের হেফাজতে রাখি। প্রয়োজনে ব্যাংক লকারের সহায়তা নিই।
(ছ) বাসা-বাড়ি ত্যাগের পূর্বে যে সকল প্রতিবেশী/ পাশের ফ্ল্যাটের অধিবাসী খুলনায় অবস্থান করবেন তাদেরকে বাসা/বাড়ির প্রতি লক্ষ্য রাখতে অনুরোধ করি এবং ফোনে তাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখি।
(জ) ভাড়াটিয়াগণকে পূর্বেই বাসার মালিককে ঈদ উপলক্ষে বাসা ত্যাগের বিষয়টি অবহিত করি।
(ঝ) অনুমতি ব্যতীত কেউ যেন বাসায় প্রবেশ করতে না পারে এ বিষয়ে বাসা-বাড়ির নিরাপত্তাকর্মীকে সতর্ক করি।
(ঞ) বাসা-বাড়ি ত্যাগের পূর্বে লাইট, ফ্যানসহ অন্যান্য ইলেকট্রিক লাইনের সুইচ, পানির ট্যাপ, গ্যাসের চুলা ইত্যাদি বন্ধ রাখি।
(ট) বাসা-বাড়িতে গাড়ির গ্যারেজ সুরক্ষিত রাখি।
(ঠ) বাসার জানালা/ দরজার পাশে কোন গাছ থাকলে অবাঞ্ছিত শাখা-প্রশাখা কেটে ফেলি, যাতে অপরাধীরা গাছের শাখা-প্রশাখা ব্যবহার করে বাসায় অনুপ্রবেশ করতে না পারে।
(ড) বাসা-বাড়ির সামনে সন্দেহজনক/ দুস্কৃতকারীকে ঘোরাফেরা করতে দেখলে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি ও থানাকে অবহিত করি।
(ঢ) বাসা-বাড়িতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে বা ঘটার সম্ভাবনা থাকলে তা স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি ও থানাকে অবহিত করি।
(ণ) ইলেকট্রিশিয়ান, প্লাম্বার, ইন্টারনেট বা ডিস লাইন সংযোগকারী ইত্যাদি ছদ্মবেশে বাসা-বাড়িতে প্রবেশ করে চুরি, ডাকাতি সংঘটিত করতে পারে।
(ত) প্রতারকরা কাঁসা বা পিতলকে মোডিফাই করে স্বর্ণের বার বলে কৌশলে বিক্রি করে থাকে। তাদের থেকে সাবধানে থাকি।
(থ) বিদেশী মুদ্রার লোভনীয় রেট শুনে প্রতারিত না হই। মনে রাখবেন লোভ ও সরলতা আপনাকে নিঃস্ব করে দিতে পারে।
(দ) স্বর্ণালংকার দ্বিগুণ করে দেওয়ার কথা বলে প্রতারণা করতে পারে।
(ধ) জাল মুদ্রা বিনিময় করে প্রতারণা করতে পারে।
জুয়েলারি দোকান/ বিপণি বিতান/ ব্যাংক, বীমা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তায় করণীয়ঃ
(ক) জুয়েলারি/ বিপণি বিতান/ ব্যাংক, বীমা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত নিরাপত্তা রক্ষীদের ডিউটি জোরদার করি।
(খ) প্রতিষ্ঠান ত্যাগের পূর্বে দরজা-শার্টার সঠিকভাবে তালাবদ্ধ করি। প্রয়োজনে একাধিক তালা ব্যবহার করা যেতে পারে। দরজা-শার্টার দুর্বল অবস্থায় থাকলে তা মেরামত করে যথাসম্ভব সুরক্ষিত করি।
(গ) ব্যাংক, বীমা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণি বিতানে পর্যাপ্ত সংখ্যক সিসি ক্যামেরা স্থাপন করি এবং স্থাপিত সিসি ক্যামেরাসমূহ সচল রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করি।
(ঘ) ব্যাংক, বীমা প্রতিষ্ঠান ও বিপণি বিতানের মূল দরজা/ ফটকে অটোলক ও নিরাপত্তা এ্যালার্মযুক্ত তালা ব্যবহার করি।
(ঙ) রাতে ব্যাংক, বীমা প্রতিষ্ঠান ও বিপণি বিতানের চারপাশ পর্যাপ্ত আলোকিত রাখার ব্যবস্থা করি।
(চ) ব্যাংক, বীমা প্রতিষ্ঠান ও বিপণি বিতানের সামনে সন্দেহজনক কাউকে/ দুস্কৃতকারীকে ঘোরাফেরা করতে দেখলে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি ও থানাকে অবহিত করি।
(ছ) ব্যাংক, বীমা প্রতিষ্ঠান ও বিপণি বিতানে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে থাকলে বা ঘটার সম্ভাবনা থাকলে তা স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি ও থানাকে অবহিত করি।
ঈদ উপলক্ষে পরিবহনে যাতায়াতে করণীয়ঃ
(ক) বাস/ ট্রেন বা অন্য কোন পরিবহনে অতিরিক্ত যাত্রী হিসাবে উঠবো না।
(খ) রাস্তায় অপরিচিত কারো দেওয়া খাবার/ পানীয় গ্রহণ করবো না।
(গ) বাস/ মাইক্রোবাস/ কারে উঠার পূর্বে ড্রাইভারের নাম, মোবাইল নম্বর এবং গাড়ির নম্বর সংগ্রহ করে নিকটজনের কাছে দিয়ে রাখি।
(ঘ) এসময় অতিরিক্ত টাকা-পয়সা বা স্বর্ণালংকার বহন না করি।
(ঙ) মাইক্রোবাস/ কারে অপরিচিত কারো সাথে শেয়ারে যাত্রী না হই।
(চ) মাইক্রোবাস/ কার ভাড়া করার পূর্বে পরিচিত না হলে ভালো করে জেনে শুনে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি।
(ছ) যাতে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে না পড়ি সেজন্য অপরিচিত লোকজনকে এড়িয়ে চলি।
(জ) পকেটমার/ ছিনতাইকারীদের থেকে সতর্ক থাকি।
(ঝ) পরিবহনের কতিপয় অসাধু লোকজন তাদের স্ব স্ব গাড়িতে নেওয়ার জন্য ল্যাগেজ/ব্যাগ টানাটানি করে, অথবা তাতে ল্যাগেজ/ব্যাগ খোয়া যাওয়ার সম্ভবনা থাকে। তাদের থেকে সাবধানে থাকি।
জরুরী প্রয়োজনে পুলিশি সহায়তার জন্য যোগাযোগের নম্বরসমূহ:
কেএমপি কন্ট্রোল রুম: ০১৩২০-০৬০৯৯৮ এবং জাতীয় জরুরি সেবা: ৯৯৯