যশোরের চৌগাছার ঐতিহ্যবাহি পশুহাট দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পর রবিবার চালু করেছেন কর্তৃপক্ষ। এক দিকে ঈদুল আযহা অন্যদিকে প্রায় মাসের ধাক্কা হাট বন্ধ, তাই সকাল থেকেই পশুর আগম ঘটতে থাকে হাটে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে পশু আর মানুষের সরব উপস্থিতি সামাল দিতে হাট কর্তৃপক্ষকে রীতিমত হিমশিম খেতে হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে বাধ্য করা হয়েছে সকলকে। সোমবারও হাট বসবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে একটানা লকডাউনে বন্ধ হয়ে যায় চৌগাছার পশুহাট। ঈদের মাত্র তিন দিন আগে রবিবার হাট চালায় কর্তৃপক্ষ। হাট বসছে এমন খবরে খুব সকাল থেকেই ক্রেতা বিক্রেতার ব্যাপক উপস্থিতি ঘটে হাটে। হাটের মূল জায়গা ছাড়িয়ে পশু বেচাকেনা চলে আশপাশের বিভিন্ন খালি জায়গাতেও। চৌগাছা-মহেশপুর সড়কের পাশে এই হাট বসার কারণে ওই সড়কে সকাল ৯ টা হতে যানজটের সৃষ্টি হয় যা দিনের বেশির ভাগই একই অবস্থায় চলতে থাকে।
হাট কর্তৃপক্ষ হাটের প্রবেশ মুখে প্রচার মাইক বেঁধে আগত সকল ক্রেতা বিক্রেতাকে মুখে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনাবেচার জন্য অনুরোধ করতে থাকেন। দুপুরে উপজেলা প্রশাসন হাট এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জোর তাগিদ দেন।
এ দিকে ঈদুল আযহার মাত্র ৩ দিন আগে হাট বসায় পশুর কোন কমতি ছিলনা। যশোরের বিভিন্ন উপজেলা সহ পাশ্ববর্তী জেলা উপজেলা হতে পশু ক্রেতা ও বিক্রেতা ব্যাপক উপস্থিত ঘটে। তবে পশুর দাম নিয়ে উভয় নানা অভিযোগ করেন।
পৌর এলাকার রমজান আলী বলেন, কুরবানীর জন্য একটি গরু কিনতে এসেছি কিন্তু বিক্রেতারা দাম হাকাচ্ছে অনেক বেশি। ফলে পশু কেনা নিয়ে বেশ দুঃশ্চিন্তায় আছি। মশলেম আলী বলেন, একটি গরুর দাম সর্বোচ্চ ৮৫ হাজার টাকা হবে, সেই গরুর দাম হাকাচ্ছে ১ লাখ ৫ হাজার টাকা। এই পরিস্থিতিতে গরু কেনা নিয়ে সমস্যায় পড়েছি।
গরু বিক্রেতা হাফিজুর রহমান বলেন, প্রায় দেড় বছর ধরে ২টি গরু পালন করেছি। এক একটি গরুর পিছনে কত ব্যয় যে ব্যক্তি গরু পালন করেন সেই ভাল জানেন। কিন্তু কাংখিত দাম হচ্ছে না। ক্রেতা যে ভাবে দাম বলছেন তাতে অনেক লোকসান গুনতে হবে।
এদিকে হাটে অসংখ্য ছাগলের সমারহ ঘটে। ছাগলের দাম নিয়ে ক্রেতা বিক্রেতা সকলই খুশি। ১২ হাজার থেকে শুরু করে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত এক একটি ছাগল বিক্রি হতে দেখা গেছে।
হাট কর্তৃপক্ষ বলেন, দীর্ঘদিন হাট বন্ধ থাকার কারনে মহা দুঃশ্চিন্তায় ছিলেন গরু পালনকারীরা। অবশেষে হাট বসায় খুশি বিক্রেতারা তবে দাম নিয়ে ক্রেতা বিক্রেতার মধ্যে রয়েছে নানা প্রশ্ন। ঈদের বিষয়টি বিচেনা করে আজ সোমবারও হাট বসানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যদি পশুর আগমন ঘটে তাহলে হাট চলবে বলে তারা জানিয়েছেন।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি