ঘূর্ণিঝড় ইয়াস বিদায় নিলেও রয়ে গেছে ক্ষত। ইয়াসের তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত পাইকগাছার লতা ইউনিয়নের হাড়িয়া আঁধারমানিক রাস্তাটি ৬ মাসেও সংস্কার হয়নি। ফলে ইউনিয়নের ৬ গ্রামের ১২ হাজার মানুষের চলাচলে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রাস্তাটি সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী। তবে দ্রুত রাস্তাটি সংস্কার করা হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্টরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার লতা ইউনিয়নের পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়াপদার উপর হাড়িয়া হতে আঁধারমানিক অভিমুখে এক কিলোমিটার রাস্তা প্রায় ২ বছর আগে ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়। গত ২৬ মে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধির ফলে ওয়াপদা ছাপিয়ে পোল্ডার অভ্যন্তরে পানি প্রবেশ করে। হাড়িয়া নদীর ঢেউ ও রাস্তার উপর দিয়ে পানি ছাপানোর ফলে রাস্তাটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ঘূর্ণিঝড় ইয়াস পরবর্তী বিভিন্ন রাস্তা সংস্কার হলেও হাড়িয়া আঁধারমানিক রাস্তাটি ৬ মাসেও সংস্কার করা হয়নি।
স্থানীয় হাড়িয়া গ্রামের মৃত্যু সুকুমার রায়ের ছেলে শিলাদিপ্ত রায় জানান, আমাদের এ ইউনিয়নটি খুবই অবহেলিত। কাঁদা মাটি ও প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলা করে আমাদের বসবাস করতে হয়। যদিও একটু রাস্তা পাঁকা হয়েছিল, সেটি আবার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সাবেক চেয়ারম্যান দিবাকর বিশ্বাসের চেষ্টায় রাস্তাটি হয়েছিল, কিন্ত আমরা তা সংরক্ষণ করে রাখতে পারলাম না।
তিনি আরো বলেন, সাবেক চেয়ারম্যানের মৃত্যুর পর এ ইউনিয়নের খুব বেশি উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। যদি ইউনিয়ন পরিষদের ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসুচির লোক দিয়ে রাস্তা সংস্কার করতো তাহলে এত ক্ষতি হতোনা।
একই এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা ভূদর চন্দ্র বিশ্বাস জানান, ইয়াসের ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তা প্রায় ৬ মাস অতিবাহিত হতে গেল কিন্তু রাস্তাটি এখনও সংস্কার হয়নি। রাস্তার মাটি ক্ষয়ে যাওয়ার ফলে ইট ঝরে পড়ছে। সরকারি ইট, যে যা পারছে নিয়ে চলে যাচ্ছে।
সাবেক ইউপি সদস্য দেবাশিষ বিশ্বাস বলেন, কাজটি উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার অফিসের, আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের কাজ না। তবে আমি কয়েকবার ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসুচির লোক দিয়ে রাস্তার পাশে মাটি দিয়েছি, যাতে ইটগুলো ঝড়ে না পড়ে।
নব-নির্বাচিত ইউপি সদস্য সুকুমার সরকার বলেন, আমি রাস্তাটির বিষয় নিয়ে চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলেছি। তিনি আশ্বস্ত করেছেন সংস্কার করবেন।
ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান কাজল কান্তি বিশ্বাস বলেন, সবে ইউনিয়ন পরিষদে বসেছি। বিষয়টি ইউপি সদস্য আমাকে জানিয়েছেন, খুব তাড়াতাড়ি রাস্তাটি সংস্কার করবো।
পাইকগাছা উপজেলা প্রকৌশলী মো. হাফিজুর রহমান বলেন, এ কাজটি আমাদের। হাড়িয়া ব্রিজ হতে আঁধার মানিক বাজার পর্যন্ত কার্পেটিং হবে। খুব তাড়াতাড়ি টেন্ডার হয়ে যাবে। সে কারণে রাস্তাটি সংস্কার করা হয়নি।
পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ বেগম বলেন, রাস্তাটি সরকারের। কিন্তু রক্ষাণাবেক্ষণের জন্য সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিদের এগিয়ে আসতে হবে। তবে আমি যখন জেনেছি, রাস্তাটি যাতে সংস্কার হয় সে ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
খুলনা গেজেট /এমএম