রশিদ ঢালীর গলায় প্রথমে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়। এরপর মোটরসাইকেলে চাবির দিয়ে শ্বাসনালী ছিড়ে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। এমনই রোমহর্ষক হত্যাকান্ডের বর্ণনা দিয়ে দু’জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো: রফিকুল ইসলাম।
মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে তিনি খুলনা সিএমএম আদালতে এ হত্যা মামলার চার্জশিট দাখিল করেন।
অভিযুক্ত আসামিরা হলেন- খুলনা মহানগরীর দৌলতপুর এলাকার দৌলতখান রোডের শেখ তোজামের দু’ছেলে শেখ রাশেদ ও শেখ রকিবুল। আসামি রাশেদ নিহত রশিদ ঢালীর জামাতা।
আড়ংঘাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মো: আনিসুজ্জামান বলেন, শেখ রাশেদ বগুড়ার একটি দোকানে কর্মচারি ছিল। ছুটিতে বাড়িতে আসে। রশিদ ঢালীর মেয়েকে দেখে তার পছন্দ হয়। মেয়েকে বিয়েরও প্রস্তাব দেয়। বাবার সম্মতি ছাড়া বিয়েতে রাজি হয় না মেয়ে। এরপর মেয়ের পিতা রশিদ ঢালীর কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়। মেয়ের পরিবারকে দেখাশুনার দায়িত্ব নেওয়ার কথা বললে রাশেদ রাজিও হয়।
রশিদের কর্মসংস্থানের জন্য তার জামাই রাশেদ ৮০ হাজার টাকায় একটি ইজিবাইক ক্রয় করে দেয়। কিছুদিন সেটি চালানোর পর ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয় সে। বিক্রির টাকা দিয়ে সে ইয়াবার ব্যবসায় খাটায়। এরপর উভয়ের মধ্যে ইজিবাইকের টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বের একপর্যায়ে রশিদকে শায়েস্তা করার পরিকল্পনা করে রাশেদ ও রকিবুল। পরিকল্পনা অনুযায়ী গেল বছরের ২৩ অক্টোবর রশিদকে আড়ংঘাটা থানা এলাকার জনৈক রিপনের ঘেরে ডেকে নেওয়া হয়। তিনজনের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। রকিবুলের ছুরির আঘাতে রশিদের মৃত্যু হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও আড়ংঘাটা থানার এসআই মো: রফিকুল ইসলাম বলেন, ২৩ অক্টোবর মাগরিবের নামাজের পর আসামিরা দু’ভাই রশিদকে ডেকে নেয় রিপনের ঘেরে। তাদের মধ্যে টাকার বিষয়কে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্ব হয়। একপর্যায়ে রাকিবুল ভিকটিমের গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে মাটিতে পড়ে যায়। পরবর্তীতে জামাই রাশেদ গলায় চাবি ঢুকিয়ে শ্বাসনালী ছিড়ে দিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে। ঘটনার পরের দিন মাছের খাবার দিতে গিয়ে ঘের মালিক রিপন লাশ দেখতে পেয়ে স্থানীয় মেম্বারকে বিষয়টি জানায়। ওই মেম্বার পুলিশকে খবর দেয়।
এ ব্যাপারে নিহতের স্ত্রী ফারজানা বাদী হয়ে অজ্ঞাতানামা অসামিদের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামিদের দৌলতপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডে নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে তারা দু’ভাই। নিজেদের দায় স্বীকার করে ২৫ অক্টোবর খুলনার একটি আদালতে জবানবন্দি দেয় তারা।