খুলনায় স্বামীর সাথে ঘুরতে বেরিয়ে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক গৃহবধু। মঙ্গলবার রাতে নগরীর আড়ংঘাটা বাইপাস সড়কে এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। তিনি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি রয়েছেন। এ সময়ে ধর্ষণের ভিডিও চিত্র ধারণ করে গৃহবধুকে হুমকিও দেওয়া হয়। তবে ভুক্তভোগী পরিবার ধর্ষকদের ভয়ে থানায় এখনও মামলা করেনি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ফুলবাড়িগেট এলাকার এক দম্পতি বুধবার সন্ধ্যায় হাটতে বের হন। হাটতে হাটতে তারা বাইপাস এলাকায় চলে যান। রাত সাড়ে ৮ টার দিকে বাইপাস হতে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলে দু’টি মোটরসাইকেলে চারজন লোক এসে তাদের গতিরোধ করে।
প্রথমে তারা প্রশাসনের সদস্য বলে নিজেদেরকে পরিচয় দেয়। পরে দু’জনের দেহ তল্লাশী করে ওই চারজন ব্যক্তি। তাদের কাছে কিছুই পায়নি তারা। পরবর্তীতে ভিকটিম ও তার স্বামী সেখান থেকে চলে আসার জন্য তাদের কাছে অনুমতি চান। কিন্তু ওই চার ব্যক্তি তাদের ছাড়েনি।
পরে তাদের কাছে জনতে চাওয়া হয় তারা উভয়ে স্বামী স্ত্রী কি না। তাদের প্রশ্নে ভিকটিম পরিবার হ্যাঁ জবাব দেয়ার পরও তাদের কিছু দুরে একটি পরিত্যাক্ত বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রথমে প্রশাসনের সদস্য পরিচয় দেওয়া ব্যক্তিরা ভিকটিমের স্বামীর চোখ বেঁধে ফেলে। পরবর্তীতে ওই পরিত্যাক্ত বাড়ির ছাদে নিয়ে চারজন পালাক্রমে গৃহবধুকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের সময়ে দুর্বৃত্তরা ভিডিও চিত্র ধারণ করে।
ভিকটিমের স্বামী বলেন, রাত সাড়ে ৮ টা থেকে সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত তার স্ত্রীর ওপর চলে অমানষিক নির্যাতন। স্ত্রীর মুখে ঘটনার বিবরণ জেনে তিনি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। কিন্তু কাছে টাকা না থাকায় রাত ২ টা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করার পর বাড়ি চলে যান। নিরীহ মানুষ হওয়ায় ভয়ে কারও কাছে তারা মুখ খোলেনি। পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে র্যাবের সদস্যরা এসে ভিকটিমের স্বামীর ফোন নম্বর সংগ্রহ করে হাসপাতালে আসতে অনুরোধ করার পর সেখানে আসেন তারা।
ভিকটিমের স্বামী ভয়ে প্রথমে কোন কিছু বলতে রাজি হয়নি। পরবর্তীতে অভয় দিলে ওই গৃহবধু জানান, ধর্ষণের সময় দুর্বৃত্তরা ভিডিও চিত্র ধারণ করে। পরে হুমকি দেয় এবং ফোন নম্বর দিয়ে তাকে বলা হয়, যখন প্রয়োজন হবে তখন তাদের সাথে দেখা করতে হবে। পরবর্তীতে সকালে র্যাব উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ওই নম্বরের ব্যবহারকারীকে শনাক্ত করে।
ভিকটিমের স্বামী আরও বলেন, বৃহস্পতিবার খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে রিপোর্ট সংগ্রহ করে থানায় মামলা দায়ের করা হবে।
এ ব্যাপারে জানতে আড়ংঘাটা থানার অফিসার ইনচার্জের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি। পরে থানার ডিউটি অফিসারের ব্যবহৃত নম্বরে যোগাযোগ করা হলে ডিউটি অফিসার এস আই সুর্বণা বলেন, এরকম কোন ঘটনা তার জানা নেই।
এ ব্যাপারে খুলনা র্যাব ৬ এর সিনিয়র এএসপি পহন চাকমা বলেন, সোর্সের মাধমে বিষয়টি জানতে পেরেছি। ভিকটিমদের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। যেহেতু থানায় এ বিষয়ে কোন লিখিত অভিযোগ বা মামলা হয়নি। তবে আমরা ওই এলাকায় ছায়া তদন্ত করছি এবং অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
খুলনা গেজেট/ এসজেড