রাজনীতিতে বিশেষ অবদান রাখায় একুশে পদক পেয়েছেন অ্যাডভোকেট মঞ্জুরুল ইমাম (মরণোত্তর)। সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একুশে পদক প্রদান করেন। ১৯ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও দুটি প্রতিষ্ঠানকে ‘একুশে পদক ২০২৩’ প্রদান করা হয়।
খুলনার সন্তান মঞ্জুরুল ইমাম ১৯৩৯ সালের ৯ নভেম্বর নওয়াপাড়ায় নানা বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। জীবনের অধিকাংশ সময় সাউথ সেন্ট্রাল রোড ও সামছুর রহমান রোডে কাটিয়েছেন। তার বাবার নাম শেখ মো. ইউনুস। মায়ের নাম ফাতেমা বেগম। ১৯৫৬ সালে জিলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক, ১৯৫৯ সালে বিএল কলেজ থেকে আইএ, ১৯৬১ সালে একই কলেজ থেকে বিএ ও ১৯৬৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬৬ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। মুক্তিযুদ্ধে প্রতিরোধ সংগ্রামে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন।
১৯৬৭ সালে খুলনা শহর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক, ১৯৮২ থেকে ২০০৩ পর্যন্ত মহানগর শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫২ সালে জিলা স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়াকালীন ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ১৯৯৫ সালে খুলনা সেন্ট্রাল ল কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ। ১৯৯৬-৯৮ সাল পর্যন্ত সমবায় ব্যাংকের ডিরেক্টর, ল্যান্ড মর্টগেজ ব্যাংকের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিস ট্রাস্টের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে খুলনা-২ আসনে সংসদ সদস্য প্রার্থী ছিলেন মঞ্জুরুল ইমাম । ২০০৩ সালের ২৫ আগস্ট নিজ বাসভবনের অদূরে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন তিনি। তার স্ত্রীর নাম মেহেরুননেছা।
অ্যাডভোকেট মঞ্জুরুল ইমাম মরণোত্তর একুশে পদক পাওয়ায় তার ছোট ভাই খুলনার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর মো. জাফর ইমাম বলেন, একুশে পদক দেওয়া শুরু হয়েছে অনেক আগে। প্রতিবারই আমরা আশা করছিলাম যে আমার ভাইয়ের নামটা পদকপ্রাপ্তদের তালিকায় আসবে। যাই হোক এবার এসেছে। তাতে আমরা খুব খুশি হয়েছি।
তিনি বলেন, এই খুলনা শহরটাকে সুন্দর করার জন্য ঢাকা থেকে অর্থ সংগ্রহ করায় তার ভূমিকা ছিল। খুলনার জন্য আরও অনেকেই কাজ করেছেন।
জাফর ইমাম বলেন, আমার বড় ভাই মঞ্জুরুল ইমাম মুক্তিযুদ্ধের সময় কলকাতা যেতে পারেননি। খুলনার আশপাশে ফুলতলা, বেজেরডাঙ্গা, নওয়াপাড়ার গ্রামে গ্রামে গিয়ে যুবকদের সংগঠিত করেছেন। আমরা দুই ভাই একসঙ্গে লেখাপড়া করতাম। দুজনের মধ্যে বন্ধুর মতো সম্পর্ক ছিল। বড় ভাই অনেক কষ্ট করেছেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার একটা বড় ভূমিকা ছিল। রাজনীতিতে অবদান রাখায় আজ তিনি একুশে পদক পেয়েছেন। এটা আমাদের জন্য অনেক আনন্দের ও খুশির।
খুলনা গেজেট/ এসজেড