সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার চম্পাফুল গ্রামের মোনায়েম গাইন হত্যা মামলাটি অধিকতর তদন্ত করে আগামি ২৮ মার্চের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সাতক্ষীরার পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন এর (পিবিআই) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে আদেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১০ জানুয়ারি) সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম ইয়াসমিন নাহার বাদির নারাজির আবেদন শুনানী শেষে এ আদেশ দেন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০১৯ সালের পহেলা মে রাত সাড়ে ১২টার দিকে নুরুজ্জামান ও আনিছের নেতৃত্বে ১৬ জন সন্ত্রাসী আশাশুনি উপজেলার শোভানালী ইউনিয়নের বালিয়াপুর মৌজার খোলচক বিলে রুহুল আমিনের ইজারা নেওয়া ১২ বিঘা চিংড়ি ঘেরের দখল নেয়।
পর দিন সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নজরুল ইসলাম, মোনায়েম গাইন, নয়ন গাইনের নেতৃত্বে ৪০/৪৫জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী বেদখল হওয়া ঘেরে হামলা চালায়। নুরুজ্জামান ও আনিছ বাহিনীর সদস্যরা বারআনি পার হয়ে লতাখালি আব্দুল জলিলের ঘেরের মধ্য দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় আত্মরক্ষার্থে মোনায়েম গাইনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে মৃত ভেবে পানিতে ফেলে রেখে যায়।
পরদিন দুপুর ১২টার দিকে মোনায়েম গাইন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে পুলিশ আশাশুনির শোভনালী ইউপি চেয়ারম্যান গোদাড়া গ্রামের বদরউদ্দিন সানার ছেলে মোনায়েম সানা (৫৫), তার ভাই আশরাফ সানা (৬২) ও একই গ্রামের নুর আলী সরদার ওরফে আশু সরদারের ছেলে টুটুল ওরফে বাবুকে (৩৮) গ্রেপ্তার করে।
নিহতের স্ত্রী মরিয়ম খাতুন বাপের বাড়ি থেকে শ্বশুর বাড়িতে আসার আগেই নজরুল গাইন তড়িঘড়ি করে মোনায়েম হত্যা মামলায় তার দূর সম্পর্কের আত্মীয় গোদাড়া গ্রামের রুহুল আমিনকে বাদি করে শোভনালী ইউপি চেয়ারম্যান মোনায়েম গাইনসহ ১৯জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২০ জনের বিরুদ্ধে আশাশুনি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
পরে পূর্ব নলতা গ্রামের সুশান্ত ঘোষ ২০২০ সালের ২৬ জুলাই হত্যার সঙ্গে নিজেকে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জ্যেষ্ট বিচারিক হাকিম ইয়াসমিন নাহারের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
মামলাটি আশাশুনি থানার উপপরিদর্শক ইসমাইল হোসেনের হাত ঘুরে গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক বাবুল আক্তারের উপর ন্যস্ত হয়। মামলার তদন্ত শেষে গত বছরের ২৬ জানুয়ারি এজাহারভুক্ত ১৯ জনের মধ্যে ১নং আসামী মোনায়েম সানাসহ ১৪জনের নাম বাদ দিয়ে ও নতুন ১০ জনের নাম সম্পৃক্ত করে ১৫ জনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন পুলিশ পরিদর্শক বাবুল আক্তার।
মামলার বাদি এই অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে আদালতে গত বছরের ৮ মার্চ নারাজির আবেদন করেন। সোমবার বাদির নারাজির আবেদন শুনানী শেষে সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম ইয়াসমিন নাহার হত্যা মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পবিআই এর উপর ন্যাস্ত করেন।
মামলাটির তদন্তভার পিবিআইতে যাওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত করেন সংশ্লিষ্ট আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপপরিদর্শক নিখিল চন্দ্র বিশ্বাস।