খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  কক্সবাজারের টেকনাফ সমুদ্র সৈকতে গোসলে নেমে নিখোঁজ দুই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
  সাবেক আইজিপি মামুনের ফের ৩ দিনের রিমান্ড
  অ্যান্টিগা টেস্ট: তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশ ২৬৯/৯, পিছিয়ে ১৮১ রানে
চরম ভোগান্তিতে যাত্রীরা

আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি, আজ থেকে সাতক্ষীরা রুটেও দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ

বেনাপোল প্রতিনিধি

জেলা প্রশাসকের সাথে ফলপ্রসূ আলোচনা না হওয়াতে আজও বেনাপোল থেকে ঢাকাসহ দুরপাল্লার সকল পরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

সমস্যার সমাধান না হওয়ায় আজ সোমবার (২৫ নভেম্বর) সকাল থেকে বেনাপোল-ঢাকা এবং ঢাকা-বেনাপোলগামী সব পরিবহন অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দেয় পরিবহন ব্যবসায়ী এবং মালিক সমিতি।

গতকাল রবিবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসনের সাথে বাস মালিকদের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ফলপ্রসূ কোন সমাধান হয়নি। এতে চরম ভোগান্তি ও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে পড়তে হচ্ছে সাধারণ যাত্রী এবং পাসপোর্টযাত্রীদের। যাদের কাছে টাকা আছে তারা বিকল্প ব্যবস্থায় অতিরিক্ত খরচ করে বাড়ি ফিরছেন। আর যারা অর্থের সমস্যায় আছেন তাদের ভোগান্তিটা বেশি হচ্ছে।

মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দরা বলেন, প্রশাসনের সাথে বৈঠকের পর থেকে সকল পরিবহনের বাসগুলো পৌরসভার নির্দেশনা মত চলছিল। ঢাকা থেকে রাতে ছেড়ে আসা বাস গুলো পাসপোর্টযাত্রীদের বেনাপোল চেকপোস্টে নামিয়ে দিয়ে খালি বাস পৌরবাস টার্মিনালে চলে যাচ্ছিল। হঠাৎ করে গত শুক্রবার রাত তিনটার দিকে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা বাসগুলো আসার পর বাসের যাত্রীদের জোরপূর্ব টার্মিনালে নামিয়ে দেয়া বাস টার্মিনালে নিয়োজিত পৌরসভার লোকজন। এ সময় যাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে এবং হয়রানির শিকার হয়। পরে সেই যাত্রীগুলো লোকাল বাসে করে চেকপোষ্টে পাঠান টার্মিনালের থাকা পৌরসভার লোকজন। কোন কিছু না জানিয়ে প্রশাসনের এ ধরনের সিদ্ধান্তের কারণে বাস মালিক সমিতি চারদিন ধরে সকল ধরনের বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। সাতক্ষীরা থেকেও কোন বাস তারা ছাড়বেনা বলে জানিয়েছেন।

এদিকে গতকাল রবিবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে যশোরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে দুই পক্ষই তাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকায় ফলপ্রসূ কোন সমঝোতা হয়নি। প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে যানজট নিরসনে নৌ-পরিবহন উপদেষ্টা সাহেবের নির্দেশে এটা করা হয়েছে। উপদেষ্টা সাহেবের নির্দেশ ব্যথিত আমাদের পক্ষে কোন কিছু করা সম্ভব নয়। পৌরবাস টার্মিনাল থেকেই যাত্রী ওঠাতে হবে এবং নামাতে হবে। এ সময় পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে আগের নিয়মে বাস চলাচলের সুযোগ দিতে হবে। তা না হলে তারা রাস্তায় বাস চালাবেন না।

অনেক পাসপোর্টযাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, পার্শ্ববর্তী ভারতের পেট্রাপোলে যাত্রীদের সুবিধার্থে ইমিগ্রেশনের সাথেই নির্মাণ করা হয়েছে যাত্রী টার্মিনাল এবং পাশেই বাসের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের বর্ডারে চালু টার্মিনাল বন্ধ করে দিয়ে ৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত টার্মিনালে পাঠানো হচ্ছে যাত্রীদের। এতে চরম ভোগান্তি ও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে পড়তে হচ্ছে পাসপোর্টযাত্রীদের।

ভারত থেকে আসা ঢাকার বাবুল হোসেন নামের একজন পাসপোর্টযাত্রী জানান, চিকিৎসার জন্য পরিবারসহ ভারত গিয়েছিলাম। আজ ফিরে শুনছি বাস বন্ধ। সে কারণে ট্রেনে যাচ্ছি।

অপর যাত্রী মোকলেছুর রহমান জানান, আমি প্রাইভেট ভাড়া করে যশোরে এক আত্মীয়ের বাড়ি যাচ্ছি। ওখান থেকে পরে ঢাকায় যাবো। বেনাপোলে বাস বন্ধ না থাকলে সরাসরি ঢাকায় যেতাম।

জানতে চাইলে যশোরের শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাজী নাজীব হাসান বলেন, কী কারণে তারা (পরিবহন মালিক-শ্রমিক) ধর্মঘট ডেকেছে সে বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। তাদের কোনোকিছু বলার থাকলে বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করতে পারতো।

তিনি বলেন, নতুন পৌর বাস টার্মিনালের নিরাপত্তার জন্যে আনসার সদস্য মোতায়েন, নারী-পুরুষের জন্যে পৃথক নামাজের স্থান, ব্রেস্ট ফিডিংয়ের জন্যে কর্নার সবকিছুই রয়েছে। আমরা বলেছি, পাসপোর্টযাত্রীদের নিরাপত্তার জন্যে রাত ১২টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত তারা সীমান্তে যাত্রী নামিয়ে দিতে পারবে। কিন্তু কোনো বাস আমরা সেখানে থাকতে দেবো না।

দেশ ট্রাভেল পরিবহনের ম্যানেজার আতিকুজ্জামান সনি বলেন, আগে বেনাপোল চেকপোস্টে কোন পরিবহন কাউন্টার ছিল না। ১/১১ সরকার যাত্রীদের দূর্ভোগের কথা চিন্তা করে বন্দরের সাথে যোগাযোগ করে স্থলবন্দর বাস টার্মিনাল নির্মাণ করে। সেই থেকে পরিবহন মালিকরা চেকপোস্টে কাউন্টার নেয় এবং যাত্রী সেবা দিয়ে আসছে। ৪ কিলোমিটার দূরে পৌরবাস টার্মিনাল থেকে কোন যাত্রী চেকপোস্টে আসার পথে যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এর দায়ভার কে নেবে? কোন পরিবহন এ দায়িত্ব নেবেনা। পৌরবাস টার্মিনাল কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে।

এ ব্যাপারে বেনাপোল পরিবহন সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান জানান, প্রশাসনের সাথে বৈঠকের পর কোন সমঝোতা হয়নি। তারা তাদের সিদ্ধান্তে অনড়। যাত্রীদের নিরাপত্তাসহ হয়রানির হাত থেকে রক্ষার জন্য আমরা আমাদের সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছি। আমাদের পরিবহন বাসগুলো তো কোন যানজটের সৃষ্টি করে না বা রাস্তায় দাঁড়িয়ে অহেতুক ঊযানজট সৃষ্টি করে না। তাহলে কেন আমাদের সাথে এ ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণ করছে প্রশাসন?

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!