অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘ছাত্র জনতার আত্মত্যাগের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন হয়েছে। এই দেশে আর কোনো ফ্যাসিবাদী দোসরদের জায়গা দেওয়া হবে না। আমরা চাঁদাবাজ,সন্ত্রাস থেকে দেশকে মুক্তি দিতে চাই।’
‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিকেলে নড়াইল শহরের পুরাতন বাস টার্মিনালে মুক্ত মঞ্চে এনসিপি আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন,জুলাই অভ্যুত্থানে হয়েছিল নতুন দেশ গড়ার জন্য,প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ার জন্য। তরুনরা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে দেশ গড়ার আহবান নিয়ে মাঠে নেমেছিল। তার মাত্র এক বছর জুলাই শহীদ ও আহতদের আমরা সম্মান দেখাতে পারিনি। আমাদের স্বপ্ন ছিল দলমত নির্বিশেষে নতুন করে দেশ গড়বো। কিন্তু আমরা আস্থা রাখতে পারিনি। অনেকেই এখন গণ অভ্যুত্থানকে স্বীকার করতে চায় না। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে নতুন দেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে মাঠে নেমেছি। দেশে নতুন করে আর যেন কোন স্বৈরাচারের জন্ম না হয়। আমরা চাই মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে আমাদের ছেলেরা চাকরি পাবে। দেশে কোন অন্যায় দূর্নীতি থাকবে না।
নাহিদ ইসলাম বলেন,‘আপনাদের সন্তানরা জীবন দিয়ে ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান ঘটিয়েছে। আমরা আর কোনো দখলদার, চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজদের হাতে এই দেশের শাসনভার তুলে দেব না। ভিনদেশী প্রভুদের ইশারায় যারা কথা বলে, আমরা তাদের রাজনৈতিকভাবে পরাজিত করব।
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন,‘বিগত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা দেশের মানুষকে খুন-গুম করে দেশে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি করেছিল। আপনাদের সন্তানেরা রক্তের বিনিময়ে সেই ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় করেছে।’
নাহিদ ইসলাম বলেন,‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে এই নড়াইলে দুই তিনজন শহীদ হয়েছেন। আপনাদের সেই সন্তানদের রক্তের মর্যাদা আজ আমাদের সবাইকে মিলে দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, তাঁরা রক্ত দিয়েছেন একটা নতুন বাংলাদেশের জন্য, বাংলাদেশকে নতুনভাবে গড়ে তোলার জন্য। সে কারণেই আমরা মাঠে নেমেছি।’
এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন,আমরা শুনেছি নির্বাচন কমিশনরা দিনের ভোট রাতে করেছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে স্বাক্ষী রেখে ভোট কেটেছে। সেই নির্বাচন কমিশনার হুদার অবস্থা কি তা আপনারা জানেন। জুতার মালা গলায় নিয়ে কারাগারে গিয়েছে। আমরা শুনছি শাপলা প্রতিক আমাদের দেওয়া হবে না। নির্বাচন কমিশন মিটিং করার আগেই কিভাবে এই খবর প্রচার হলো ? ধিক্কার জানাই নির্বাচন কমিশনকে। আপনাদের রিমোট কন্ট্রোল কাদের হাতে তা আমরা জানি।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, খুলনাঞ্চলের অঞ্চল পরিচালক, মোল্যা রহমতউল্লাহ, অ্যাডভোকেট শিরিন আক্তার শেলী, মাহবুবা সুলতানা রিমি। এ সময় এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, জাতীয় নাগরিক পার্টি নড়াইল জেলার প্রধান সমন্বয়ক মোঃ শরিফুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পদযাত্রা ও পথসভা শেষে যশোরের উদ্দেশে যাত্রা করেন এনসিপির নেতারা।
খুলনা গেজেট/এসএস