পৃথিবীর সবচেয়ে লম্বা প্রাণী বলা হয় জিরাফকে। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের তথ্য অনুযায়ী, একটা পূর্ণবয়স্ক জিরাফ ১৪ থেকে ১৯ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। জন্মের সময়ই এদের উচ্চতা হয় ৬ ফুট আর ওজন গড়ে ৬৮ কেজি।
তবে বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, তারা প্রথমবারের মতো ‘বামন’ আকৃতির জিরাফের খোঁজ পেয়েছেন। সাধারণ জিরাফের চেয়ে এই জিরাফগুলো আকার প্রায় অর্ধেক। মানুষের মধ্যে খর্বাকার কিংবা বামনের দেখা মিললেও এই প্রথম কোনো প্রাণীর মধ্যে এটি দেখা গেল। ৫০০ কোটি বছরের পৃথিবীর ঠিক কোন সময় থেকে বামন মানুষের শুরু তার সঠিক কোনো তথ্য নেই। তবে মিশরীয় ফারাও নেফারকারের সময় দক্ষিণ সাহারা মরুভূমির এক অঞ্চলে বামন মানুষের দেখা পাওয়া যায়। এর আগেকার বামন মানুষের ব্যাপারে ইতিহাসে তেমন কিছু পাওয়া যায়নি।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, আফ্রিকা মহাদেশের নামিবিয়া ও উগান্ডায় দুটি ‘বামন জিরাফের’ সন্ধান মিলেছে। সাধারণ জিরাফের পালের মধ্যেই এই দুটি পুরুষ ‘বামন জিরাফ’ রয়েছে। একই বয়সের সাধারণ জিরাফের চেয়ে এই জিরাফ দুটির পা অনেক খাটো। বিজ্ঞানীরা আফ্রিকাজুড়ে বিভিন্ন এলাকায় থাকা জিরাফের সংখ্যা বের করতে ফটোগ্রাফিক জরিপ করছিলেন। সেই জরিপ করতে গিয়েই এই জিরাফ দুটি চিহ্নিত করেন। ২০১৪ সাল থেকে জিরাফের সংখ্যা গননায় এই জরিফ চালানো হচ্ছিল।
জিরাফ দুটির নাম রাখা হয়েছে ‘জিমলি’ ও ‘নাইজেল’। মাইকেল ব্রাউন বলেন, জিমলি ও নাইজেল ‘স্কেলেটাল ডিসপ্লেসিয়া’ সমস্যার শিকার, যা বন্য প্রাণীর ক্ষেত্রে খুব কম দেখা যায়। ২০১৮ সালে নামিবিয়ার একটি ব্যক্তিগত ফার্মে ৮ ফুট ৬ ইঞ্চি লম্বা নাইজেলের খোঁজ পান গবেষকেরা।
২০১৫ সালের ডিসেম্বরে উগান্ডার মারচিসন ফলস ন্যাশনাল পার্কে ৯ ফুট ৪ ইঞ্চি উচ্চতার জিমলির সন্ধান মেলে। জিরাফ নিয়ে কাজ করা বৈশ্বিক সংগঠন জিরাফ কনজারভেশন ফাউন্ডেশনের (জিসিএফ) কর্মকর্তা মাইকেল ব্রাউন বলেন, জিরাফ দুটির বিকাশের ক্ষেত্রে হয়তো কিছু অস্বাভাবিকতা ছিল, যার ফলে হাড় ও তরুণাস্থির বৃদ্ধিতে পার্থক্য তৈরি হয়েছে। যে দুটি বামন জিরাফ শনাক্ত করা হয়েছে, সেগুলোর বয়স এক বছরের কিছু বেশি।
খুলনা গেজেট/এনএম