খুলনা, বাংলাদেশ | ৪ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ১৮ মে, ২০২৪

Breaking News

  করোনায় একজনের মৃত্যু, শনাক্ত ১১
  তিন জেলায় বজ্রপাতে প্রাণ গেল ৭ জনের
  রাঙামাটিতে সশস্ত্র হামলায় ইউপিডিএফ সদস্যসহ নিহত ২
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি সাতক্ষীরার সংবাদ সম্মেলন

আন্তঃ ক্যাডার বৈষম্য নিরসনের দাবিতে কর্মবিরতি ২ অক্টোবর

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

কৃত্য পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয়সহ ক্যাডার কম্পোজিশনের সুরক্ষা, পদোন্নতি, পদসৃজন, স্কেল আপগ্রেডেশন ও আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনের দাবি জানিয়েছেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি সাতক্ষীরা জেলা ইউনিট। একই সাথে দাবি আদায়ে আগামী ২ অক্টোবর কর্মবিরতি পালন ও শিক্ষা ক্যাডারের দাবি পূরণে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে ১০, ১১ ও ১২ অক্টোবর টানা তিনদিন কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।

মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সাতক্ষীরা কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলন এই ঘোষনা দেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি সাতক্ষীরা জেলা ইউনিটের সভাপতি ও সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর বসুদেব বসু।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষা থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত সার্বিক শিক্ষা ব্যবস্থা পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের জন্য শিক্ষা ক্যাডার সৃষ্টি করা হয়। কিন্তু দীর্ঘ দিনেও শিক্ষা ক্যাডারকে বিশেষায়িত পেশা হিসেবে গড়ে তোলা হয়নি। বঞ্চনা আর বৈষম্যের মাধ্যমে এ পেশার কার্যক্রমকে সংকোচিত করা হয়েছে। এ পেশাকে গ্রাস করছে অদক্ষ অপেশাদাররা। যা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দর্শনের পরিপন্থী।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার যে সকল লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সেগুলো অর্জনে তিনিও শিক্ষাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে তাই তিনি স্মার্ট শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন। এগুলো বাস্তবায়নে প্রয়োজন জাতির পিতার দর্শনের বাস্তবায়ন। বঙ্গবন্ধু শিক্ষা প্রশাসন পরিচালনায় শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব প্রদানের মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন। একই ব্যবস্থা গ্রহণ বর্তমান বাস্তবতায় সবচেয়ে বেশি প্রাসঙ্গিক। শিক্ষায় জাতীয় লক্ষ্য অর্জনে উপজেলা, জেলা, অঞ্চলে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট দপ্তর, অধিদপ্তর ও প্রকল্পসমূহ পরিচালনায় শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের নিয়োগ দিতে হবে।

বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) কম্পোজিশন অ্যান্ড ক্যাডার রুলস ১৯৮০ মোতাবেক দেশের প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা স্তরে শিক্ষা প্রদান, পরিচালনা, ব্যবস্থাপনা, পরিকল্পনা, গবেষণা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পর্যন্ত শিক্ষা ক্যাডারের কার্যপরিধি ব্যাপৃত। প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা স্তর সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে নবম গ্রেডের উপরে সকল পদ শিক্ষা ক্যাডারের তফসিলভুক্ত। এসব পদে শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা বাদে অন্য কারো পদায়নের সুযোগ নেই। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা ক্যাডারের তফসিলভুক্ত পদ থেকে শিক্ষা ক্যাডার বহির্ভূতদের অপসারণের দাবি জানানো হচ্ছে। কিন্তু সেটি করা হয়নি। উপরন্তু লিখিতভাবে আপত্তি জানাবার পরেও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের তফসিলভুক্ত প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ৫১২টি পদ শিক্ষা ক্যাডারের তফসিল বহির্ভূত করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নিয়োগবিধি চূড়ান্ত করা হয়েছে। এটি সুস্পষ্টতই শিক্ষা ক্যাডারের অস্তিত্বের উপর আঘাত। শিক্ষা ক্যাডারকে অন্ধকারে রেখে এই বিধি করার এখতিয়ার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নেই। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষা ক্যাডার বিরোধী এসকল কর্মকান্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে তা বাতিলের দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, শিক্ষা ক্যাডারের ১৬ হাজার কর্মকর্তা বর্তমান সরকারের ভিশন-২০৪১ তথা স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণে একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু প্রাপ্য অধিকার ও সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কোনো কারণ ছাড়াই পদোন্নতি বন্ধ আছে দুই বছর। এই মুহূর্তে শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতিযোগ্য কর্মকর্তার সংখ্যা ৭ হাজারের বেশি। এই কর্মকর্তাদের পদোন্নতির জন্য সরকারের কোনো অতিরিক্ত অর্থ প্রয়োজন নেই। সবাই পদোন্নতিযোগ্য পদের বেতন স্কেলের সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছে গেছেন। ক্যাডার সার্ভিসে শূন্য পদ না থাকলে পদোন্নতি দেয়া যাবে না এমন কোনো বিধান নেই। অথচ, শিক্ষা ক্যাডারকে শূন্য পদের অজুহাতে পদোন্নতি বঞ্চিত রাখা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী সকল ক্যাডারের জন্য সুপারনিউমারারি পদে পদোন্নতি দিয়ে ক্যাডার বৈষম্য নিরসনের নির্দেশনা দিলেও তা পালিত হয়নি। প্রধানমন্ত্রী আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনের নির্দেশও দিয়েছেন বারবার। কিন্তু সেই নির্দেশনা মানা হচ্ছে না। অন্য ক্যাডারের মত শিক্ষা ক্যাডারে ব্যাচভিত্তিক পদোন্নতি অনুসৃত না হওয়ায় অন্যান্য ক্যাডারের তুলনায় শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাগণ পিছিয়ে আছেন। বেতন স্কেল অনুযায়ী ৪র্থ ও ৬ষ্ঠ গ্রেড প্রাপ্য কর্মকর্তাগণের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে ১ বছর পূর্বে। কিন্তু এ বিষয়েও কোনো অগ্রগতি নেই। এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে অবিলম্বে শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকালকে নন ভেকেশন সার্ভিস ঘোষণা করে পূর্ণ গড় বেতনে অর্জিত ছুটি প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি সাতক্ষীরা জেলা ইউনিটের সহসভাপতি প্রফেসর এসএম আনোয়ারুজ্জামান, সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আমানুল্লাহ আল হাদী, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অলিউর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক শফিকুর রহমান, নির্বাহী সদস্য প্রফেসর আবুল কালাম আজাদ, প্রফেসর আবুল হাসেম, প্রফেসর বলাই চন্দ্র ঘোষ প্রমুখ।

খুলনা গেজেট/ টিএ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!