তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হত্যা করা হয় স্কুলছাত্র শুভ হাওলাদারকে। প্রায়ই তাকে হিজড়া বলে ডাকতো সজল। এ নিয়ে শুভ প্রতিবাদ করত। এর প্রেক্ষিতে শুভকে দেখে নেওয়ার হুমকিও দেয় সজল। সুযোগের অপেক্ষায় থাকে সে। সেদিন শুভ মাঠে খেলতে যায়। আর বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে ডেকে নিয়ে খুন করা হয় শুভকে। মঙ্গলবার এমনি বর্ণনা দিয়ে শুভ হত্যায় নিজের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে সজল ব্যাপারী। জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলাম। জবানবন্দি শেষে কারাগারে পাঠানো হয় তাকে। ময়লাপোতা মুনসুর খাঁর বাড়ির ভাড়াটিয়া নুর মোহাম্মদের ছেলে সে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সোনাডাঙ্গা থানার এসআই সুকান্ত দাস জানান, রোববার সকাল সাড়ে আটটার দিকে সজল বাবার কাছ থেকে কুড়ি টাকা নিয়ে ময়লাপোতা এলাকার একটি হোটেলে নাস্তা করে। পরে বালুর মাঠের দিকে খেলতে যায়। এসময় সজল ব্যাপারী ওই স্থানে হাজির হয়ে শুভকে হিজড়া বলে ডাকতে থাকে। এতে শুভ ক্ষিপ্ত হয়ে আসামি সজলকে গালিগালাজ করতে থাকে। পরে সজল ক্ষুব্ধ হয়ে শুভকে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে প্রথমে লাথি মারে। এরপর ইট দিয়ে আঘাত করে। ঘটনাটি জানাজানি হয়ে গেলে সমস্যা হতে পারে বলে সজল তাকে ইট দিয়ে ক্রমাগত আঘাত করতে থাকে। শুভর মৃত্যুর পর সেখান থেকে বের হয়ে ঘুরে বেড়ায়। মানুষের মধ্যে এসেও ঘুরে বেড়ায়। পরবর্তীতে পুলিশ আসলে পালিয়ে গোপালগঞ্জ গিয়ে আত্মগোপন করে। ঘটনার দিন ঘর থেকে বিকেলে সজলের রক্তমাখা প্যান্ট ও গেঞ্জি উদ্ধার করে পুলিশ।
পরবর্তীতে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামির অবস্থান নিশ্চিত করা হয়। সোমবার রাতে গোপালগঞ্জের মধুমতি নদীর তীরে মধুপুর গুচ্ছগ্রামে পৌছালে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সজল নদীতে ঝাপ দেয়। পুলিশও সাথে সাথে নদীতে ঝাপ দিয়ে তাকে আটক করে। থানায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে। স্বেচ্ছায় আদালতে জবানবন্দি দিতে চাইলে তাকে সকালে আদালতে হাজির করা হয়। এ মামলায় সজলসহ আরও দু’জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের তিনজনকে আদালত কারাগারে প্রেরণ করেছে। হত্যাকান্ডের সময় সজল ছাড়া আর কেউ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল না বলে তিনি জানিয়েছেন।