খুলনা, বাংলাদেশ | ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ১৯ মে, ২০২৪

Breaking News

  হেলিকপ্টার দূর্ঘটনায় নিঁখোজ ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহীম রাইসি
  বাজারে থাকা এসএমসি প্লাসের সব ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংকস প্রত্যাহারের নির্দেশ, বাজারজাতকারীকে ১৬ লাক টাকা জরিমানা
  ৭ ব্যক্তিকে জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী

আট দিনের সর্বাত্মক লকডাউনে দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে দেশে আট দিনের সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হয়েছে। বুধবার (১৪ এপ্রিল) ভোর ৬টা থেকে শুরু হওয়া এ লকডাউন ২১ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত চলবে। এ সময় স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ১৩ দফা কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এই আট দিন গণপরিবহন-বাস, ট্রেন, লঞ্চ, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল বন্ধ থাকবে। সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানও বন্ধ থাকবে। তবে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজ নিজ কর্মস্থলে (কর্ম এলাকা) থাকতে হবে। শপিংমল ও অন্যান্য দোকানপাটও বন্ধ থাকবে। তবে নির্দিষ্ট সময় খোলা থাকবে কাঁচাবাজার ও নিত্যপণ্যের দোকান। এছাড়া তিন ঘন্টা খোলা থাকবে ব্যাংক।

অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। তবে এই সময়ের মধ্যে শিল্পকারখানাগুলো স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু থাকবে। শ্রমিকদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নিজস্ব পরিবহণ ব্যবস্থাপনায় আনা- নেওয়া নিশ্চিত করতে হবে। কৃষি শ্রমিক পরিবহণ ও গণমাধ্যমসহ সব ধরনের জরুরি পরিষেবা চালু থাকবে।

করোনা মহামারি প্রতিরোধে উলে­খিত বিষয়সহ ১৩ দফা বিধিনিষেধ আরোপ করে সোমবার অফিস আদেশ জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। লকডাউনের ভেতরে ৮টি পণ্যপরিবহন ট্রেন চলবে বলে জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। মঙ্গলবার রেল ভবনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে ই-কমার্সের মাধ্যমে খাদ্য ও অন্যান্য সামগ্রী পরিবহন ও সরবরাহে উৎসাহিত করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় এ জন্য সাত দফা নির্দেশনা দিয়েছে। তবে শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে।

বুধবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ৬টা থেকে ২১ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত চলাচলের ওপর শর্তসাপেক্ষে যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, তার ভিত্তিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ই-কমার্স সেল মঙ্গলবার দেশের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে চিঠি পাঠিয়ে এ নির্দেশনা দিয়েছে। চিঠি পাঠানো হয়েছে দেশের সব বিভাগীয় কমিশনার, সব মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারদের উদ্দেশ্যে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, খাদ্য, কৃষিজপণ্যসহ অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত ট্রাক ও যানবাহন সার্বক্ষণিক চলাচল করতে পারবে। অনলাইন বা ই-কমার্সের মাধ্যমে কেনাকাটাকে উৎসাহিত করা হবে। পণ্য সরবরাহকারী (ডেলিভারিম্যান) দুপুর ১২টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারবেন। পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে পণ্যাগার (ওয়্যারহাউস) খোলা রাখা যাবে।

এ ছাড়া ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রেস্তোরাঁগুলোর রান্নাঘর দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এবং রাত ১২টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। অনলাইনে পার্সেলের মাধ্যমে খাবার সরবরাহ করতে পারবে প্রতিষ্ঠানগুলো। সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্তও রান্নাঘর খোলা রাখা যাবে। কখনোই রেস্তোরাঁয় বসে খাওয়া দাওয়া করা যাবে না। খাবার পৌঁছে দেওয়ার কাজ যাঁরা করবেন, তাঁরা কোনো অবস্থাতেই রেস্তোরাঁর রান্নাঘরে ঢুকতে পারবেন না। রান্নাঘরের বাইরে থেকে খাবার সংগ্রহ করে গ্রাহকের কাছে তা পৌঁছে দিতে হবে।

পণ্য সরবরাহকারী ও পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত ব্যক্তি ও যানবাহনের জন্য প্রয়োজনীয় পরিচয়পত্র দেবে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান। সরবরাহকারী ব্যক্তি ও যানবাহনের জন্য ই-কমার্স এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইক্যাব) লোগো এবং ক্রমিক নম্বরসংবলিত পরিচয়পত্র ব্যবহার করা যেতে পারে। ইক্যাব সদস্যদের পরিচয়পত্রও দেবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, নিত্যপণ্য উৎপাদন, আমদানি, পরিবহন ও বিপণনে সহযোগিতা করতে একটি নিয়ন্ত্রণ সেল গঠন করা হয়েছে। যেকোনো সমস্যা হলে সহযোগিতার জন্য ০১৭১২-১৬৮৯১৭, ০১৭৩৮-১৯৫১০৬ ও ০১৭৫৬-১৭৩৫৬০, এই তিনটি নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

এদিকে ব্যাংক বন্ধ রাখার কথা বলা হলেও সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিধিনিষেধের সাতদিন সীমিত পরিসরে খোলা থাকবে ব্যাংক। সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ব্যাংকের লেনদেন হবে। লেনদেন-পরবর্তী আনুষঙ্গিক কার্যক্রম শেষ করার জন্য ব্যাংক খোলা থাকবে বিকেল আড়াইটা পর্যন্ত।

মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধকল্পে সরকার কর্তৃক আরোপিত বিধি-নিষেধের মধ্যে ব্যাংকিং কার্যক্রম প্রসঙ্গে’ এ সার্কুলার জারি করে।

এর আগে মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) মাঠ প্রশাসন অধিশাখা থেকে বিশেষ প্রয়োজনে ব্যাংক চালু রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে চিঠি দেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। উপ সচিব রেজাউল ইসলাম স্বাক্ষরিত ‘বিশেষ প্রয়োজনে ব্যাংকিং সেবা প্রদান’ সংক্রান্ত এ চিঠিতে বলা হয়, ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারির জন্য আদেশক্রমে অনুরোধ জানানো হয়।

আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিধিনিষেধের সাত দিন সার্বক্ষণিক খোলা থাকবে এটিএম বুথ। একইসঙ্গে চালু থাকবে ইন্টারনেট ব্যাংকিংসহ অনলাইন সেবা। এছাড়া সমুদ্র, স্থল ও বিমানবন্দর এলাকার ব্যাংক শাখা আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমের জন্য খোলা রাখা যাবে। পাশাপাশি স্ব স্ব ব্যাংকের প্রয়োজনে বৈদেশিক মুদ্রায় লেনদেন করা শাখা (এডি) সীমিতসংখ্যক জনবল দিয়ে খোলা রাখতে পারবে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!