প্রায় ১০ মাস পর আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নেমে অল্পের জন্য জয় পাওয়া হয়নি বাংলাদেশের মেয়েদের। এক গোলে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশ নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষে যোগ করা সময়ে গোল খেয়ে নেপালের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছে। সাবিনা খাতুনের গোলে বাংলাদেশ এগিয়ে গেলেও শেষ মুহূর্তে নেপালকে সমতায় ফেরান সাবিত্রা ভান্ডারি। গত বছর সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের পর থেকে শুধু অনুশীলনের মধ্যে ছিলেন এই মেয়েরা। এতে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফেরাটা জয়ের আনন্দে মাতাতে পারেনি মাহবুবুর রহমান লিটুর দল।
কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে নেপালের বিপক্ষে এদিন লাল-সবুজের জার্সিতে অভিষেক হয়েছে তিন ফুটবলারের। শুরুর একাদশে ছিলেন ডিফেন্ডার আফিদা খন্দকার। আর দ্বিতীয়ার্ধে বদলি হয়ে নামেন শাহেদা আক্তার রিপা ও মাতসুশিমা সুমাইয়া।
ম্যাচের শুরুর দিকে বেশ অগোছাল ছিলেন সাবিনা-কৃষ্ণারা। শারীরিক ভাষায় ছিল অনেক দিন ম্যাচ না খেলার ছাপ। তাই নিজেদের গুছিয়ে নিতে বেশ সময় লাগে তাদের। নেপালও পারেনি তেমন আক্রমণ শানাতে।
ম্যাচের ১৫ মিনিটে প্রথমবারের মতো গোলের সুযোগ তৈরি করে বাংলাদেশ। শিউলি আজিমের ক্রসে ডি বক্সের সামনে বল পেয়ে যান সাবিনা খাতুন। সাবিনা গোলপোস্টের বেশ কাছে বিপজ্জনক জায়গায় বল ফেলেন। সেখানে শরীর ঘুরিয়ে শট নেওয়ার চেষ্টা করেন কৃষ্ণা রানি সরকার। তবে প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারের চাপ এড়িয়ে বলের নাগাল পাননি তিনি।
গোলরক্ষক আঞ্জিলা তুমবাপো মুঠোয় নেন বল। ৩৫ মিনিটে অবশ্য বড় বাঁচা বেঁচে যায় লাল-সবুজ জার্সিধারীরা।
ডান প্রান্ত দিয়ে আক্রমণে উঠে দিপা শাহি ক্রস ফেলেন ডি বক্সে। সেখানে ফাঁকা জায়গায় ছিলেন সাবিত্রা। কিন্তু বলে ঠিকঠাকভাবে পা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হন তিনি। এরপর বাংলাদেশের রক্ষণভাগও পারেনি বল ক্লিয়ার করতে। ফলে ডি বক্সের ঠিক বাইরেই থাকা সারু লিম্বু বল পেয়ে যান। তবে তার ডান পায়ের দূরপাল্লার শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। অবশেষে ৬৪ মিনিটে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। খানিক আগেই বদলি নামা শাহেদা আক্তারের পাস পেয়ে নেপালের দুই ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে বক্সে ঢুকে আগুয়ান গোলরক্ষককে পরাস্ত করে জাল খুঁজে নেন সাবিনা খাতুন। ৭৩ মিনিটে নিশ্চিত গোল আটকে দেন গোলরক্ষক রুপনা চাকমা।
ডান দিক থেকে আক্রমণে ওঠেন সাবিত্রা ভান্ডারি। বাইলাইনের ওপর থেকে তার কাটব্যাক বক্সে ফাঁকায় পান রাশমি কুমারি ঘিসিং। তার শট দারুণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন রুপনা। পরের মিনিটেই ব্যবধান বাড়ানোর সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন সাবিনা। সমতায় ফিরতে মরিয়া নেপাল দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে পেয়ে যায় কাঙ্ক্ষিত সেই গোল। ডান দিক থেকে বক্সে বল বাড়িয়েছিলেন সাবিত্রা। ডিফেন্ডাররা সুযোগ পেলেও ক্লিয়ার করতে পারেননি। কয়েক পা ঘুরে ফের যায় সাবিত্রার পায়ে। জটলার ভেতর থেকে সুযোগ কাজে লাগান এই ফরোয়ার্ড। পরের মিনিটেই বাংলাদেশের রক্ষণে কাঁপন ধরান সেই সাবিত্রা। বক্সের কোনা থেকে তার নেওয়া শট দূরের পোস্ট ঘেঁষে চলে যায় বাইরে। পা ছোঁয়ানোর জন্য ছিলেন না কেউ। তাতে ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে দুই দল। আগামী ১৬ জুলাই দ্বিতীয় প্রীতি ম্যাচে মুখোমুখি হবে এ দুই দল।
খুলনা গেজেট/কেডি