যশোর জেনারেল হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের ইনচার্জ ডা. হাসান আব্দুল্লাহর অবসর সুবিধা স্থগিত করা হয়েছে। হাসপাতালের সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার চাকরি জীবনের শেষদিনে বৃহস্পতিবার হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এ সিদ্ধান্ত জানান। একইসাথে ডা. হাসান আব্দুল্লাহ ও তার সহকর্মী মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে ২২ লাখ ১৭ হাজার টাকা আত্মসাতের প্রমাণ মেলায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, চলতি বছরের মার্চ মাসে হাসপাতালের করোনা পরীক্ষার টাকার হিসেবে ব্যাপক গরমিলের আভাস পায় কর্তৃপক্ষ। এরপর হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়কের নির্দেশে গত ১২ মার্চ সার্জারি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আব্দুর রহিম মোড়লকে প্রধান করে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। কমিটি তদন্ত শেষে আর্থিক গরমিলের প্রমাণ পেয়ে প্রতিবেদন দাখিল করে।
তদন্ত কমিটির প্রধান ডা. আব্দুর রহিম মোড়ল জানান, প্যাথলজি বিভাগে কর্মরত সকলের গাফিলতিতে টাকা তছরুপের ঘটনা ঘটেছে। তদন্তে হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের ইনচার্জ ডা. হাসান আব্দুলাহ’র বিরুদ্ধে ২২ লাখের অধিক টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া যায়। যে কারণে কমিটি ওই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে।
এদিকে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে প্যাথলজি বিভাগের আয় ব্যয়ের অডিট করা হয়েছে। অডিটররাও তাদের দেয়া হিসাবে অডিট আপত্তি দাখিল করেন। আর এ কারণেই ডা. হাসান আব্দুলাহ’র অবসর সুবিধা স্থগিত করা হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্র আরো জানায়, ডাক্তার হাসান আব্দুল্লাহ পিআরএল এ থাকলেও তিনি প্যাথলজি বিভাগের দায়িত্ব পালন করছিলেন। ২১ সেপ্টেম্বর ছিল তার শেষ কর্মদিবস। এদিন তার ফেয়ারওয়েল দেয়ার দিন থাকলেও তিনি অফিসে অনুপস্থিত ছিলেন। দুপুরের দিকে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক তার অবসর সুবিধা স্থগিতের নির্দেশনা জারি করেন।
এ ব্যাপারে জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আক্তারুজ্জামান বলেন, অভ্যন্তরিন কমিটির তদন্তে ও স্বাস্থ্য বিভাগের অডিটে হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের ইনচার্জ ডা. হাসান আব্দুল্লাহ’র বিরুদ্ধে ২২ লাখ ১৭ হাজার টাকা আত্মসাতের প্রমাণ মিলেছে। যে কারণে ডা. হাসান আব্দুল্লাহ’র অবসর সুবিধা স্থগিত করা হয়েছে। একইসাথে তার নামে ও প্যাথলজি বিভাগের মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বিভাগীয় মামলা দায়েরের নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
ডা.আক্তারুজ্জামান জানান, আত্মসাতকৃত টাকা ফেরত দিলে ডা. হাসান আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে অবসরজনিত বিধিনিষেধ থাকবে না। তিনি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় অবসরে যেতে পারবেন।
তিনি আরো বলেন, ডা. হাসান আব্দুল্লাহ গত মঙ্গলবার ঢাকায় যাবার কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু বুধবার দুপুর ও বিকেলে তাকে হাসপাতালের আশপাশের ঘুরতে দেখা গেছে। যে কারণে প্যাথলেজি বিভাগের দায়িত্ব এখনো নতুন কাউকে বুঝিয়ে দেয়া সম্ভব হয়নি।