বাবা মায়ের অমতে প্রেম করে বিয়ে করেছিল তানিয়া আক্তার মীম। পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করতেন খালিশপুরের বিভিন্ন বিউটি পার্লারে। অর্থের লোভে স্বামী তাকে তুলে দেয় মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যদের হাতে। পরে তুলে দেওয়া হয় ভারতীয় দালালদের হাতে। এরপর শুরু হয় নির্মম নির্যাতন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, তানিয়া আক্তার মিম। দুর্বার সংঘ ক্লাব সংলগ্ন মুনসুর চৌধুরীর বাড়ির ভাড়াটিয়া আবুল হোসেনের মেয়ে। ২০১৮ সালে পরিবারের অমতে বিয়ে করেন চিত্রালী সিনেমা হল এলাকার মিরাজ মুন্সির ছেলে রিয়াজ মুন্সির সাথে। বিয়ের পর থেকে সংসারে অভাব অনটন লেগে থাকার কারণে তাকে খালিশপুরের বিউটি পার্লারে কাজ করতে হয়। পরে পরিচয় হয় পার্লার মালিক সবুজের সাথে। সেখানে কিছুদিন কাজ করার পর স্বামীকে অর্থ লোভ দেখানো হয়।
একপর্যায়ে সবুজ অধিক বেতনে চাকরী দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে নেওয়া হয়। তখনও মিম জানত না তাকে বিক্রি করা হচ্ছে। কলকতায় নিয়ে গিয়ে তুলে দেওয়া হয় দালালদের হাতে। পরে তাকে বিক্রি করা হয়া হয় হায়দ্রাবাদের একটি অভিজাত হোটেলে। সেখানে তার ওপর চলে অমানবিক নির্যাতন। একপর্যায়ে মেয়েটি লুকিয়ে ঘটনার বিবরণ জানান মালোয়েশিয়া প্রবাসী মামাকে। তিনি ফোন করে ঘটনাটি জানালে ভিকটিমের মা নড়ে বসেন। তিনি মেয়ের খোঁজ নেওয়ার জন্য জামাই বাড়িতে যান। সেখানে মেয়ের খোঁজ না পেয়ে হতবাক হন তিনি। পরে ঘটনা থানা পর্যন্ত গড়ালে আসল রহস্য বের হয়ে আসে। মেয়ের মা বাদী হয়ে থানায় মানবপাচার আইনে মামলা করেন। মামলায় জামাই ও তার ভাই গ্রেপ্তার হয়। তাদের দু’জনকে রিমান্ডে নেওয়া হলে তারা সব ঘটনার বিবরণ দেয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই খুলনা পুলিশ পরিদর্শক মোঃ আমানউল্লাহ খুলনা গেজেটকে জানান, মঙ্গলবার (১ জুন) এ মামলার দ্বিতীয় আসামি সুমন গ্রেপ্তার হয়। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে প্রেরণ করলে আদালত তাকে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডের প্রথম দিনে আসামি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করতে চাইলে আজ তাকে আদালতে হাজির করা হয়। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ১ এর বিচারক মোঃ শাহীদুল ইসলামের আদালতে সব বর্ণনা দেন।
তিনি আরও জানান, মেয়েটি হায়দ্রাবাদের পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য জোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি