যশোরের অভয়নগরে স্বেচ্ছাশ্রমে চার কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু করেছেন গ্রামবাসী। নিজেদের অর্থায়নে সম্পন্ন করেছে প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা। স্থানীয় আট গ্রামের জনগণ রাস্তাটি পাকাকরণের দাবি করেছেন।
জানা গেছে, উপজেলার প্রেমবাগ ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গা, আমডাঙ্গা, রামসরা, রাজাপুর, মাগুরা, বাহিরঘাট, বনগ্রাম ও চাঁপাতলা এই আট গ্রামের মধ্যে ধলিয়ার বিল অবস্থিত। বিলটিতে জমির পরিমাণ প্রায় ২ হাজার ৩শ’ বিঘা। এই বিলে কৃষকের উৎপাদিত ফসল ও পণ্য বহনের জন্য রয়েছে একটি মাত্র রাস্তা। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় একটু বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় রাস্তাটি। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়ে কৃষক।
রবিবার সরেজমিনে ধলিয়ার বিলে গিয়ে দেখা যায়, স্বেচ্ছাশ্রমে শতাধিক গ্রামবাসী মিলিত হয়ে চার কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের কাজ করছেন। তারা মাটি কেটে তলিয়ে যাওয়া রাস্তাটির সংস্কার করছেন। এ কাজের দেখভাল করছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন, মৎস্য চাষি ছামিদ মোল্যা, আব্দুল্লাহ বিশ্বাস, মহন সরকার, কৃষক ইউসুফ বিশ্বাস, ইউনুস শিকদার, মারুফ হোসেন, কামল শিকদার প্রমুখ।
এ কাজের উদ্যোক্তা সমাজসেবক ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতা শফি কামাল জানান, আমাদের এই ধলিয়ার বিলে আট গ্রামের কৃষক ধান, পাট ও মাছ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে। বিলে যাতায়াতের একটিই মাত্র রাস্তা। যার দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার। রাস্তাটি দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে তলিয়ে যায়। ফলে কৃষক তাদের উৎপাদিত পণ্য বাড়িতে আনতে ও বাজারজাত করতে চরম বিড়ম্বনার শিকার হয়।
স্থানীয় মৎস্য চাষি ও সমাজসেবক নাজিম উদ্দিন মোল্যা জানান, নিজেদের অর্থায়নে স্বেচ্ছাশ্রমে আমরা রাস্তাটির সংস্কারের কাজ শুরু করেছি। ইতোমধ্যে প্রায় দুই কিলোমিটার মাটি ভরাটের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। বাকি কাজ চলমান আছে। রাস্তাটি পাকাকরণ হলে কৃষি ও মৎস্য ক্ষেত্রে ব্যাপক সাফল্য আসবে এবং চেঙ্গুটিয়া রথখোলা মন্দির সংলগ্ন সড়কের সাথে সংযুক্ত হয়ে যশোর-খুলনা মহাসড়কের সাথে যুক্ত হবে।
প্রেমবাগ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মফিজ উদ্দিন জানান, ধরিয়ার বিলের রাস্তা সংস্কারের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অর্থ বরাদ্ধ না পাওয়ায় সংস্কার কাজ করা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাজমুল হুসেইন খাঁন বলেন, ‘বিষয়টি আমি জেনেছি। সরেজমিনে গিয়ে রাস্তাটির বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
গ্রামবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা সংস্কার কাজ করায় সাধুবাদ জানিয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহ্ ফরিদ জাহাঙ্গীর বলেন, ‘বর্তমান সরকার কৃষি বান্ধব সরকার।’ কৃষকের ভাগ্য উন্নয়নে এ উপজেলায় অর্থ বরাদ্দ হলে রাস্তাটি পাকাকরণ করা হবে বলে তিনি আশ্বাস প্রদান করেন।
খুলনা গেজেট/এনএম