খুলনা, বাংলাদেশ | ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ১৯ মে, ২০২৪

Breaking News

  বাজারে থাকা এসএমসি প্লাসের সব ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংকস প্রত্যাহারের নির্দেশ, বাজারজাতকারীকে ১৬ লাক টাকা জরিমানা
  ৭ ব্যক্তিকে জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী
কৃষি অফিসারের পরার্মশ না পাওয়ায় হতাশ কৃষক

অভয়নগরে সাড়ে ৭ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষ

অভয়নগর প্রতিনিধি

অভয়নগরের যেদিকেই চোখ সেদিকে শুধু সবুজ আর সবুজ। মাঠে আমন ধানের সবুজ ফসলের সমারোহ। এবছর বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষকরা।

অভয়নগর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, অভয়নগরে আমন চাষে এবছর ৭ হাজার ৪ শত ৯০ হেক্টর জমি লক্ষ্যমাত্রা ছিল। চাষ হয়েছে ৭ হাজার ৫ শত ৫০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬০ হেক্টর বেশি জমিতে আমনের চাষাবাদ বেড়েছে।

এবছর উপজেলার ৬০০ জন কৃষককে ৫ কেজি করে ব্রি-৭৫ ও ব্রি-৮৭ ধান বীজ এবং প্রতিজনকে ১০ কেজি এমওপি ও ১০ কেজি করে ডিএপি সার প্রদান করা হয়েছে। তাছাড়া ২০০ জনকে হাইব্রিড ধানের বীজ দেয়া হয়েছে। ধানের সবচেয়ে ক্ষতিকর রোগবালাই হচ্ছে মাজরা পোকা,বাদামী ফড়িং এবং গোড়াপচা রোগ। তবে এ রোগগুলো এবার কম হওয়ায় ফসল বেশ ভাল হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ইতোমধ্যে, আগাম জাতের আমন ধান ব্রি- ৭৫, ব্রি-৮৭, ব্রি -৩২,ব্রি – ৪৯ সহ বেশ কয়েকটি আগাম জাতের আমন ধান চাষ হয়েছে। এছাড়াও ব্রি – ১১, গুটি স্বর্ণা,ব্রি -৩০, ব্রি-৩৯ ধানের চাষ করেছে কৃষকরা। আবহাওয়া ভাল থাকলে কৃষকরা হাসিমুখে ফসল ঘরে তুলতে পারবে।

প্রথমদিকে বৃষ্টিপাত না হলেও মাঝে মাঝে বৃষ্টি হয়েছিল। প্রথমে বীজতলা লাগাতে দেরি করেছেন। পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় অনেককে সেচ দিতে দেখা গেছে। ধানে পোকামাকড়ের আক্রমণও দেখা গেছে বেশ। মাজরা পোকা,পামরী পোকা,বাদামী ফড়িং, গোড়াপচা রোগসহ নানাবিধ রোগ বালাই আক্রান্ত হচ্ছে।

মাঠ পর্যায়ে উপ সহকারী কৃষি অফিসারদের ঠিকমত পরামর্শ নেয়ার জন্য না পাওয়া গেলেও কীটনাশকের দোকানদারদের পরামর্শক্রমে কৃষকেরা বিভিন্ন কীটনাশক ব্যবহার করে ফসলের রোগ বালাই দমন রাখার চেষ্টা করেছেন। এতে কৃষকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বলে বেশ কয়েকজন কৃষক জানান। যদিও কীটনাশক ও সারের দাম সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের থেকেও খাতাপত্র ঠিক রেখে ডিলাররা বেশি নিচ্ছে। এবারের ফসলে খরচ একটু বেশিই হচ্ছে কৃষকদের। এবছর অভয়নগর জুড়ে মাঠের পর মাঠ সবুজ ফসলে ছেয়ে আছে।

সামনে যদি আর কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা রোগবালাই পোকামাকড়ের আক্রমণ না হয় তবে সোনার ফসলে মাঠ ভরে যাবে। কৃষান-কৃষাণীর মুখে হাসি ফুটবে। নবান্নের উৎসবে মেতে উঠবে প্রতিটা কৃষকের বাড়ি।

অভয়নগর উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামের কৃষক বাবলুর রহমান বলেন, এবছর বৃষ্টি দেরীতে এবং কম হওয়ায় বীজতলা তৈরী করতে এবং ধান রোপনে দেরী হয়েছে। ঠিকমত বর্ষা না হওয়ায় সেচ দিতে হয়েছে। পোকামাকড়ের আক্রমণ বেশি হয়েছে। সারের দাম আগের তুলনায় বেশী। ফলে খরচ একটু বেশী হয়েছে। তারপরেও ফসল ভাল হয়েছে। সামনে যদি কোনো দুর্যোগ না হয় তবে ভাল ফলন পাব বলে আশা রাখি। তাছাড়া সরকার ধানের দাম নির্ধারণ করে দেওয়ায় ভাল টাকা পাব। খরচ বাদে লাভ হবে।

দামখালী এলাকার কৃষক রবিউল ইসলাম, হোসেন আলী, সুন্দলী গ্রামের প্রশান্ত মন্ডল, অধির মন্ডল বলেন, আমন চাষে এ বার ফিল্ড অফিসারদের পর্রামশ পায়নি। যে কারণে আমার ধান ভালো হয়নি।

কৃষি অফিসার অশোক কুমার পাল বলেন, এই উপজেলায় ২৫ জন ফিল্ড অফিসার এর মধ্যে আছে ১২ জন ছিল । তার মধ্যে থেকে ৪ জন প্রমোশনে চলে গেছে। গত সপ্তাহে নতুন ৮ জন যোগদান করেছেন। এই নতুন যারা এসেছে তারা ঠিক মত কাজ বোঝে না। পুরাতন যারা আছে তাদের কাছ কাজ শিখে তার পর কৃষকদের পর্রামশ দেবে। যে কারণে এ আমন ধানের চাষে কৃষকদের পর্রামশ দিতে গ্যাপ পড়েছে।

এ বিষয়ে অভয়নগর উপজেলা কৃষি অফিসার লাভলী খাতুন বলেন,লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে ধান চাষ হয়েছে। বিশেষ করে ভবদহ অঞ্চলে চাষ বেড়েছে। বৃষ্টি দেরীতে হওয়ায় বীজতলা ও ধান রোপণ করতে দেরী হয়েছে। তারপরও ফসল বেশ ভাল দেখা যাচ্ছে। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে বাম্পার ফলন হবে বলে।

আমন চাষে উপ সহকারী কৃষি অফিসারের পরার্মশ না পাওয়ায় হতাশায় কৃষক এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ফিল্ড অফিসারদের মধ্যে ২৫ টি পদ ছিল। এখনো ২১ টা পূর্ণ আছে। এটাতে ১৬ জন ছিল । পরে নতুন ৫ জন যোগদান করেছে। চলিশিয়া ইউনিয়নের ৩ টা ব্লকে ২ জন অফিসার আছে। সুন্দলী ইউনিয়নের ২ জনের মধ্যে ১জন অফিসার শারীরিক ভাবে প্রতিবন্ধী। যারা নতুন তাদের ক্ষেত্রে একটু সমস্যা। যারা নতুন এসেছে তারা চেষ্ঠা করে যাচ্ছেন।

খুলনা গেজেট/ টিএ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!