খুলনা, বাংলাদেশ | ৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ২০ মে, ২০২৪

Breaking News

  হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিঁখোজ ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহীম রাইসি
  বাজারে থাকা এসএমসি প্লাসের সব ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংকস প্রত্যাহারের নির্দেশ, বাজারজাতকারীকে ১৬ লাক টাকা জরিমানা

অভয়নগরে দেদারছে কাঠ পুড়িয়ে তৈরি করছে কয়লা, পরিবেশ বিপন্ন

অভয়নগর প্রতিনিধি

যশোরের অভয়নগর উপজেলায় কাঠ ও শিসা পুড়িয়ে কয়লার ব্যবসা চালিয়ে আসছে স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি। কেবল উপজেলার সিদ্দিপাশা ইউনিয়নেই গড়ে উঠেছে এমন দেড় শতাধিক মাটির কাঁচা চুল্লি। সরকারি নিয়মনীতিকে থোড়াই কেয়ার করে এসকল ব্যক্তি কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করে আসছে। ইতিপূর্বে অভয়নগর উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে চারবার অভিযান চালিয়ে চুল্লিগুলো গুড়িয়ে দিলেও বন্ধ হয়নি এ অবৈধ ব্যবসা। প্রতিবারই আরও নতুন নতুন চুল্লি তৈরি হয়েছে। ফলে একদিকে যেমন পরিবেশ দূষিত হচ্ছে, উজাড় হচ্ছে গাছপালা অপরদিকে স্থানীয়রা শ্বাসকষ্টসহ নানাবিধ রোগে ভুগছে। এদের বিরুদ্ধে স্থানীয় কেউ প্রতিবাদ করলেই তাদের উপর নানা হুমকি ধামকি নেমে আসে বলে অভিযোগ রয়েছে।

সেই সাথে এই এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও পোহাতে হচ্ছে নানা বিড়ম্বনা। ফলে সচেতন এলাকাবাসী এ অবৈধ চুল্লির কালো ধোয়া থেকে বাঁচতে এবং পরিবেশ রক্ষার্থে অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পরিবেশ অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় পরিচালক বরাবর লিখিত আবেদন জানিয়েছেন।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, দীর্ঘ প্রায় ১৪/১৫ বছর যাবৎ উপজেলার সিদ্দিপাশা ইউনিয়নে কতিপয় সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ভুমিদস্যু এমনকি হত্যা মামলার আসামীরা জোটবদ্ধ হয়ে অবৈধভাবে মাটির চুল্লি বানিয়ে কাঠ ও শিসা পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করে আসছে। এমনকি সরকারি দাতব্য চিকিৎসালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন এলাকাতেও তারা এ পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কয়লা তৈরির চুল্লি নির্মাণ করেছে। উপজেলার সিদ্দিপাশা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে অবাধে চুল্লিতে এ কয়লা তৈরি হওয়ায় নির্গত ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি। স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে সাধারণ মানুষ।

অভিযোগে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের সোনাতলা গ্রামের জিয়া মোল্যা, ছোট্ট মোল্যা, শহিদ মোল্যা, হারুন মোল্যা, রফিক মোল্যা, তৌকির মোল্যা, কবীর শেখ, হাবিব হাওলাদার, তসলিম মিয়া, মনির শেখ কামরুল ফারাজী এবং ধূলগ্রামের হরমুজ সর্দর, রকশেদ সর্দার, ফারুক হাওলাদার এ অঞ্চলে ১শ’৫৯ টি চুল্লি তৈরি করে কয়লা বানিয়ে আসছেন। কিন্তু তারা এতটাই দূর্ধর্ষ যে স্থানীয়রা তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ তো দূরের কথা মুখ খুলতেও সাহস করেনা। মাটি, ইট ও কাঠের গুঁড়া মিশিয়ে তৈরি করা চুল্লিতে প্রতিদিন কয়েক’শ মণ কাঠ পোঁড়ানো হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, চুল্লির মধ্যে সারিবদ্ধভাবে কাঠ সাজিয়ে চুল্লির খোলা মুখ দিয়ে আগুন দেওয়া হয়। প্রায় ৭ থেকে ১০ দিন পোঁড়ানোর পর চুলা থেকে কয়লা বের করা হয়। প্রতিটি চুল্লিতে প্রতিবার ২০০ থেকে ৩০০ মণ কাঠ পোঁড়ানো হয়। কাঠ পুঁড়ে কয়লা হয়ে গেলে সে গুলো বের করে ঠান্ডা করে বিক্রির উদ্দেশ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে কয়েকজন চুল্লি মালিকের সাথে কথা বললে তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ঘাটে ঘাটে টাকা দিয়ে আমাদের ব্যবসা চালাতে হয়। স্থানীয় পর্যায় থেকে শুরু করে সব মহলকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করেই তারপর ব্যবসা চালাই।

এ বিষয়ে অভয়নগর উপজেলার ইউএনও মেজবাহ উদ্দিন বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। খোঁজ খবর নিয়ে দ্রুতই অভিযান চালানো হবে।

খুলনা গেজেট/ টি আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!