প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অভয়নগরে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় কতিপর প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এতে ওই এলাকার পরিবেশ হুমকির মধ্যে পড়ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
সরোজমিনে দেখা যায়, অভয়নগর উপজেলার সিদ্দিপাশা গ্রামের গাছপাল কেটে ছোট টুকরো করে কেটে চুল্লির মধ্য দিয়ে জ¦ালানো হচ্ছে। একপাশ থেকে ছোট কয়লা বের হচ্ছে, অন্যপাশ থেকে সেই কয়লা শুকনো করা হচ্ছে। পরে তা বস্তায় করে রাখা হচ্ছে। প্রায় ১০ দিন পোড়ানোর পর চুলা থেকে কয়লা বের করা হয়।
প্রতিটি চুল্লিতে প্রতিবার ৩শ’ মণ কাঠ পোড়ানো হয়। কাঠ পুড়ে কয়লা হলে সেগুলো বের করে ঠান্ডা করা হয়। পরে তা বিক্রির উদ্দেশ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রি করা হয়। সচেতন মহল বলেন, এ এলাকায় অনেক গাছপালা ছিল। কিন্তু কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করায় বর্তমানে গাছের সংখ্যা কমে যাচ্ছে।
এর আগে উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর কয়েকবার অভিযান চালিয়ে এ সকল চুল্লিগুলো গুড়িয়ে দিলেও আবারও নতুন করে চুল্লি তৈরি কারা হয়েছে। প্রভাবশালী ওই মহল সরকারি নিয়মকে অমান্য করে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করে আসছে দিনের পর দিন।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে সিদ্দিপাশা এলাকার এক ব্যক্তি বলেন, এ ব্যবসায়ীরা অনেক প্রভাবশালী। এদের বিরুদ্ধে স্থানীয় কেউ কোন কথা বলতে সাহস পায়না। কথা বললে তাদের ওপর নেমে আসে নানা ধরণের নির্যাতন। তার আরও বলেন, কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরির কারণে একদিকে যেমন গাছ উজাড়সহ পরিবেশ দূষিত হচ্ছে, অন্যদিকে স্থানীয়দের শ^াসকষ্টসহ নানবিধ রোগ দেখা দিচ্ছে।
স্থানীয়দের দাবি, কতিপয় ব্যক্তি জোটবদ্ধ হয়ে অবৈধভাবে মাটির চুল্লি বানিয়ে কাঠ ও শিসা পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করে আসছে। এমনকি সরকারি দাতব্য চিকিৎসালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন এলাকাতেও তারা এ পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কয়লা তৈরির চুল্লি নির্মাণ করেছে। উপজেলার সিদ্দিপাশা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে অবাধে চুল্লিতে এ কয়লা তৈরি হওয়ায় নির্গত ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি। স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে সাধারণ মানুষ। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের সোনাতলা গ্রামের জিয়া মোল্যা, ছোট্ট মোল্যা, শহিদ মোল্যা, হারুন মোল্যা, রফিক মোল্যা, তৌকির মোল্যা, কবীর শেখ, হাবিব হাওলাদার, তসলিম মিয়া, মনির শেখ কামরুল ফারাজী এবং ধূলগ্রামের হরমুজ সর্দর, রকশেদ সর্দার, ফারুক হাওলাদার এ অঞ্চলে ১শ’ চুল্লি তৈরি করে কয়লা তৈরি আসছেন। মাটি, ইট ও কাঠের গুঁড়া মিশিয়ে তৈরি করা চুল্লিতে প্রতিদিন কয়েক’শ মণ কাঠ পোঁড়ানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে কয়েকজন চুল্লি মালিকের সাথে কথা বললে তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ঘাটে ঘাটে টাকা দিয়ে আমাদের ব্যবসা চালাতে হয়। স্থানীয় পর্যায় থেকে শুরু করে সব মহলকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করেই তারপর ব্যবসা চালাই।
এ ব্যাপারে অভয়নগর উপজেলার নিবার্হী অফিসার মেজবাহ উদ্দীন বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে দ্রুত অভিযান চালানো হবে।