খুলনা, বাংলাদেশ | ১৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  মেহেরপুরের গাংনীতে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত গাড়ি উল্টে চালক নিহত
  ৮৬ কোটি টাকার দুর্নীতি মামলা : হলমার্কের জেসমিনকে জামিন দেননি আপিল বিভাগ
  আইনজীবী আলিফ হত্যা : ভিডিও দেখে শনাক্ত ১৩ জন, গ্রেপ্তার ৭

অবৈধ দখলে জোড়াগেট হতে আফিলগেট মহাসড়কের দু’পাশ, সওজ নির্বিকার

একরামুল হোসেন লিপু,

খুলনা মহানগরীর জোড়াগেট হতে আফিলগেট পর্যন্ত খুলনা-যশোর মহাসড়কের দু’পাশে স্থানভেদে খুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) এর সর্বোচ্চ ১৪০ ফুট থেকে সর্বনিন্ম ৫০ ফুট জায়গা রয়েছে। অথচ দৌলতপুর থেকে রেলিগেট পর্যন্ত সড়ক বাদে বাকী সড়কের পাশে দিয়ে পথচারীদের চলাচলের জন্য কোন স্পেসই নেই। বছরের পর বছর যুগ যুগ ধরে মহাসড়কের পাশে সরকারি এসব জায়গা অবৈধ দখলে রয়েছে। যাদের দেখার দায়িত্ব সেই সড়ক ও জনপথ বিভাগ এ ব্যাপারে নির্বিকার।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কের পাশে সরকারি জায়গা অবৈধভাবে দখল করে যে যার মতো করে ব্যবসা, মুদি দোকান, হোটেল, ফাস্টফুডের দোকান, চায়ের দোকান, ওয়ার্কশপ, ট্রাক, আটোরিকশা, ইজিবাইক, মোটরসাইকেল মেরামতের দোকান, মোটর পার্টসের দোকান, ওয়েল্ডিং শপ, ইট বালুর ব্যবসা, কাঠের গোলা, কাঠের ফার্নিচারের দোকান, স্যানিটারি পাইপ সামগ্রীর ব্যবসা, বাস কাউন্টার, বাঁশ রেখে বিক্রি করছে, কাঠের লগ, গুড়ি রেখে বাঁধাহীনভাবে ব্যবসা করে যাচ্ছে। কেউ বা সড়কের পাশের জায়গা দখল করে বসবাস করছে। কেউ বা টিনের ছাউনি দিয়ে গোডাউন তৈরী করে পাটের ব্যবসা শুরু করেছে।

রেলিগেট হতে ফুলবাড়িগেট পর্যন্ত সড়কের দু’পাশের জায়গা দখল করে মিনি ট্রাক স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে। এ এলাকায় সড়কের উপর দিবারাত্রি ট্রাক পার্কিং করা থাকে। যত্রতত্রভাবে সড়কের উপর ড্রাইভাররা ট্রাক পার্কিং করে রাখে এবং সড়কের উপর ট্রাক রেখে মেরামতের কাজ করতে দেখা যায়। ফলশ্রুতিতে পথচারী এবং যানবাহন চলাচলে প্রায়শই বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয় এবং দুর্ঘটনা ঘটে। রেলিগেট হতে ফুলবাড়িগেট পর্যন্ত একটি সড়কের এই অব্যবস্থাপনা নিত্য দিনের। এ ব্যাপারে ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ।

এছাড়া জোড়াগেট হতে আফিলগেট পর্যন্ত সড়কের দু’পাশে ট্রাক, অটোবাইক, সিএনজি, ইজিবাইক এবং মোটরসাইকেল মেরামতকারীরা সড়কের উপর যানবাহন রেখে মেরামত কাজ করে থাকে। বৈকালীর মোড়, নতুন রাস্তার মোড়, দৌলতপুর, মুহাসিন মোড়, রেলিগেট, মানিকতলা, ফুলবাড়িগেট, শিরোমণি বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কের উপর অটোবাইক, সিএনজি, ইজিবাইকের স্ট্যান্ড থাকায় এ সব সড়কে প্রতিনিয়ত যানজট লেগেই থাকে।

এছাড়া অধিকাংশ পেট্রোল পাম্পের মালিক তাঁদের পাম্পের সামনে সড়কের জায়গা দখল করে ট্রাক স্ট্যান্ডের মতো করে রেখেছে।

এ ব্যাপারে খুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আনিসুজ্জামান মাসুদ খুলনা গেজেটকে বলেন, ডাকবাংলা হতে আফিলগেট পর্যন্ত খুলনা-যশোর মহাসড়ক ৪/৬ লেনে উন্নীতকরণের পরিকল্পনা নিয়েছে সওজ। সে লক্ষ্যে সড়কের ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি এবং নকশা প্রণয়নের কাজ চলমান আছে। সড়কের পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ একটি চলমান প্রক্রিয়া। সর্বশেষ গত বছরের ৬ ডিসেম্বর আমরা খুলনা বাইপাস সড়কের আওতাভুক্ত খানজাহান আলী সেতু (রুপসা সেতু) সংলগ্ন এলাকার ৩ কিঃ মিঃ পর্যন্ত সড়কের উভয় পার্শ্বে সড়ক ও জনপথ বিভাগ কর্তৃক অধিগ্রহণকৃত ভূমিতে অবস্থিত সকল অবৈধ স্থাপনা সওজ খুলনা জোনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এবং এস্টেট ও আইন কর্মকর্তা অনিন্দিতা রায় (উপসচিব) এর সহযোগিতায় অপসারণ করেছি। খুলনা যশোর সড়কের অবৈধ স্থাপনা অপসারণের লক্ষে ইতিমধ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি। নুরনগর পর্যন্ত আমরা সার্ভের কাজ করেছি। সড়কের ম্যাপ সহ এ সংক্রান্ত কিছু কাগজপত্রে জটিলতা রয়েছে। ইতিমধ্যে আমরা ভূমি ও জরিপ রেকর্ড অধিদপ্তরে সড়কের অরিজিনাল ম্যাপ এবং এ সংক্রান্ত কাগজপত্র সংগ্রহের আবেদন করেছি। এ সংক্রান্ত কাগজপত্র হাতে পেলেই আমরা আবার কার্যক্রম শুরু করব।

খুলনা সওজ এর সার্ভেয়ার মোঃ নাইমুল ইসলাম খুলনা গেজেটকে বলেন, বৃটিশ শাসনামলে ১৯৪৫ সালে খুলনা-যশোর রোডের জমি অধিগ্রহণ হয়। তখন সড়কটি সিএনবি’র আওতাভুক্ত ছিলো। পরবর্তীতে সড়কটি খুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতাভুক্ত হয়। এ কারণে কাগজপত্রে কিছু জটিলতা রয়েছে। তবে সিএস, এসএ এবং সর্বশেষ বিআরএস জরিপে সওজ এ সংক্রান্ত কাগজপত্র রেকর্ডভুক্ত আছে।

খুলনা গেজেট/এইচআরডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!