সাতক্ষীরা মেডিকেল ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে অবশেষে মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালে চালু করা হয়েছে জরুরি বিভাগ। শনিবার সকালে ফিতা কেটে জরুরি বিভাগের উদ্বোধন করেন সাতক্ষীরা সদর সাংসদ মীর মোস্তাক আহমেদ রবি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আসাদুজ্জামান বাবু, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. কাজী হাবিবুর রহমান, সামেক হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. মোঃ রফিকুল ইসলাম, সহকারি পরিচালক ডা. কুদরত-ই খুদা, বিএমএ’র সভাপতি ডা. আজিজুর রহমান, ডা. মোখলেছুর রহমান, ডা. রুহুল কুদ্দুস, ডা. কাজী আরিফ আহমেদ, সামেক হাসপাতাল পরিচালনা কমিটির সদস্য অধ্যাপক সালেহা আক্তার প্রমুখ।
প্রধান অতিথি এমপি রবি বলেন, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ চালু হওয়ার মধ্য দিয়ে সাতক্ষীরাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হল। সাতক্ষীরার সুনাম ও ঐতিহ্য ধরে রাখার পাশাপাশি চিকিৎসা সেবায় ও সুনাম অর্জন করতে হবে। সারা বাংলাদেশের মধ্যে করোনা চিকিৎসা সেবায় সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সব থেকে ভাল চিকিৎসা সেবা দিয়েছে। মহান আল্লাহর রহমতে এ জেলায় করোনায় মৃতের হার সব চেয়ে কম। চিকিৎসা সেবায় সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা অনেক বেশী আন্তরিক।
উল্লেখ্য, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগ চালু না থাকায় শিক্ষার্থীরা তাদের ভবিষ্যত কর্মজীবন নিয়ে হতাশার মধ্যে ছিলো। অথচ দেশের প্রতিটি মেডিকেল কলেজে জরুরি বিভাগ চালু থাকলেও সাতক্ষীরায় তার ব্যতিক্রম ছিলো। যে কারণে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে জরুরি বিভাগসহ পূর্ণাঙ্গরূপে চালু করার জন্য মানবন্ধন, স্মারকলিপি, রক্ত দিয়ে আন্দোলন কর্মসূচি করে বিভিন্ন সেশনের শিক্ষার্থীরা। কিন্তু আশ্বাসের ভিত্তিতে আন্দোলন থামিয়ে দিলেও তা পূর্ণতা পায়নি। পরবর্তীতে একই দাবিতে গত চার বছর ধরে জরুরি বিভাগ চালুর জন্য ইন্টার্ন চিকিৎসকবৃন্দ নিয়মিতভাবে আন্দোলন করে আসছে। প্রতিবার আশ্বাস ও ভয়ভীতি প্রদান করে আন্দোলন থামিয়ে দেওয়া হয়।
চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি একই দাবিতে ফের আন্দোলন শুরু করে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। তাদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাসে ১২ ফেব্রুয়ারী কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। কিন্তু তা বাস্তবায়নের পরবর্তী কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। সর্বশেষ গত ২৪ সেপ্টেম্বর ইন্টার্ন চিকিৎসকবৃন্দ জরুরি বিভাগ চালুর জন্য কর্ম বিরতিতে যায়। কিন্তু কর্তৃপক্ষের সাথে দফায় দফায় আলোচনায় বসেও জরুরি বিভাগ চালুর নিমিত্তে কোন আশানুরূপ সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায়নি। পরবর্তীতে ২৯ সেপ্টেম্বর এক জরুরি সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সদর হানপতালের সিভিল সার্জন, সামেক হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক এবং ইন্টার্ন চিকিৎসক প্রতিনিধির উপস্থিতিতে ৭ দিনের মধ্যে জরুরি বিভাগ চালুর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে গত ১১ অক্টোবর জরুরি বিভাগ উদ্বোধনের তারিখ ঘোষণা করা হলেও তা বাস্তবায়িত না হওয়ায় ইন্টার্ন চিকিৎসকরা পুনরায় কর্ম বিরতি পালন শুরু করেন। দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের পর অবশেষে কলেজ কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে শনিবার সাতক্ষীরা মেডিকেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগ চালু করেন।
খুলনা গেজেট/এনএম