খুন বা আত্মহত্যার ময়না তদন্ত অথবা ধর্ষণ মামলার ডাক্তারী পরীক্ষা সবই করতে হয় ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসকদের। এছাড়া মেডিকেল শিক্ষার্থীদের ক্লাস পরীক্ষাতো রয়েছেই। অতি গুরুত্বপূর্ণ এই বিভাগটিই দীর্ঘদিন ছিলো চিকিৎসক শূন্য। এর ফলে বড় ধরণের প্রভাব পড়েছিলো বিভাগটির সামগ্রিক কার্যক্রমে। তবে এ নিয়ে খুলনা গেজেটে সংবাদ প্রকাশের পর খুলনা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে দু’জন প্রভাষকের পদায়ন হয়েছে রবিবার। এর মধ্যে একজন ইতোমধ্যে যোগদান করেছেন, অন্যজন করবেন মঙ্গলবার।
খুলনা মেডিকেল কলেজ সূত্রে জানা যায়, কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে দু’জন প্রভাষকের পদায়ন করা হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য শিক্ষা মহাপরিচালকের দপ্তর থেকে। রবিবার এ সংক্রান্ত দু’টি চিঠি খুলনা মেডিকেল কলেজে এসে পৌছায়। জাহিদুর রহমান এবং লোপা সাহা নামে দু’জন চিকিৎসকের একজন নারায়নগঞ্জ এবং অন্যজন যোগদান করছেন মেহেরপুর থেকে। এর মধ্যে ডাঃ জাহিদুর রহমান রবিবার দুপুরে খুলনা মেডিকেল কলেজে যোগদান করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খুলনা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের একজন অধ্যপক, একজন সহযোগী অধ্যাপক, দু’জন সহকারী অধ্যাপক পদ বর্তমানে শূন্য রয়েছে। প্রভাষকের তিনটি পদেও মধ্যে দু’টিতে পদায়ন হলো। তবে শিক্ষার্থীদের ক্লাস বা ময়না তদন্ত সঠিকভাবে করার জন্য বিশেষজ্ঞ বা ডিগ্রিধারী চিকিৎসকের কোন বিকল্প নেই বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
ময়নাতদন্ত করেও প্রতিবেদনে স্বাক্ষর না করা একাধিক চিকিৎসক বলেন, অনেক স্পর্শকাতর বিষয় থাকে, যেমন ‘হত্যা’, না ‘আত্মহত্যা’ সেটি নির্ধারণ করতে পারেন একমাত্র ফরেনসিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। সে কারণে অধ্যক্ষের দেওয়া রোস্টার রক্ষায় তারা ময়না তদন্তের দায়িত্বটি পালন করলেও স্বাক্ষর করে নিজেকে আদালতমুখী করতে চাচ্ছেন না।
কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ আব্দুল আহাদ খুলনা গেজেটকে বলেন, স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের দপ্তর এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে একাধিকবার চিঠি লিখে অবশেষে সান্তনা হিসাবে দু’জন প্রভাষক পেলাম। তবে আমি মনে করি এই স্পর্শকাতর বিভাগটিতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বা অন্তত সহকারী অধ্যাপক পদমর্যাদার একজন চিকিৎসক প্রয়োজন। কিন্তু বাস্তবতা হলো, সারা বাংলাদেশেই ফরেনসিক বিভাগে চিকিৎসক সংকট রয়েছে। আশাকরি সরকার এই বিভাগে চিকিৎসকদের বিভিন্ন প্রণোদনার মাধ্যমে নিয়ে আসবে। এতে এই বিভাগের সংকট দুর হবে বলে তিনি মনে করেন।
খুলনা গেজেট/ এমবিএইচ/এমএম