খুলনা, বাংলাদেশ | ২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৭ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ হাসানের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
  সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস
  দুর্নীতি ও আমলাতন্ত্র দেশে ব্যবসায় পরিবেশ নিশ্চিতের অন্যতম বাধা : সিপিডি
  সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন ও তার স্বামীর পাসপোর্টের আবেদন স্থগিত

অপহরণের ১১ ঘন্টা পর এনজিও কর্মকর্তা উদ্ধার : নারীসহ আটক ৬

যশোর প্রতিনিধি

যশোরের অভয়নগরে ইকবাল জাহিদ (৪০) নামে এক এনজিও কর্মকর্তাকে অপহরণের ১১ ঘণ্টা পর আহত অবস্থায় পুলিশ উদ্ধার করেছে। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত এক নারীসহ ছয়জনকে পুলিশ আটক করা করেছে। ইকবাল জাহিদ উপজেলার একতারপুর গ্রামের পীর মোহাম্মদ খাঁনের ছেলে। তিনি যশোরের আল আরাফা সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি অভয়নগর উপজেলা শাখার মাঠ কর্মকর্তা।

আটককৃতরা হলো, যশোর শহরের রায়পাড়ার এমএম শামসুর রহমানের ছেলে একাধিক মামলার আসামি এমএম রুবেল হাসান বাবু (৩৩), অভয়নগরের গুয়াখোলা প্রফেসরপাড়ার মৃত মানিক মোল্লার ছেলে আকাশ মোল্লা (২৪), বুইকারা গ্রামের মালেকের চাতাল এলাকার মুজিবর হাওলাদারের ছেলে রবিউল ইসলাম (৩৫), পাঁচকবর এলাকার মৃত গণি সরদারের ছেলে আব্দুল মালেক (৩২), শুভরাড়া ইছামতী গ্রামের মাজেদ খানের ছেলে ইমরুল খান (২৮) ও একই গ্রামের জাহিদ খানের মেয়ে কণা বেগম (২৫)। এ ঘটনায় জড়িত পলাতকরা হলো, অভয়নগরের সরখোলা গ্রামের এফ এম সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে শাকিল (৩২), আকাশ (২৫) ও সোহেল (২৮)।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ইকবাল জাহিদ রোববার সকালে উপজেলার শুভরাড়া ইউনিয়নের ইছামতী গ্রামের দক্ষিণপাড়ায় ঋণ প্রদান কাজে জাহিদ খানের মেয়ে কণা বেগমের বাড়িতে যান। এসময় ঋণ প্রদানে জটিলতা দেখা দিলে কণা বেগমের ভাই ইমরুল খান স্থানীয় ও বহিরাগত সন্ত্রাসী দিয়ে ইকবাল জাহিদকে আটকে রেখে দেড় লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা অভয়নগরের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী এমএম রুবেল হাসান বাবুর কাছে দিতে বলা হয়। টাকা পরিশোধ না করলে ইকবালকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। ইকবাল তার প্রতিষ্ঠানের জেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা এরশাদুলকে বিষয়টি অবহিত করলে বিকেলে রুবেলের কাছে এরশাদুল এক লাখ ৩০ হাজার টাকা পৌঁছে দেন। কিন্তু অপহরণকারীরা আরও ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। দাবিকৃত এ টাকা না দেয়ায় ওইদিন সন্ধ্যায় ইকবালকে একটি সাদা রঙের হাইএস মাইক্রোবাসযোগে ইছামতী গ্রাম থেকে নওয়াপাড়া বাজারের সোহাগ পরিবহন কাউন্টারে নিয়ে যায়। ওই কাউন্টারের ভেতরে নিয়ে তাকে টাকা পরিশোধে চাপ দিতে থাকে এবং মারপিট করে। পরে রাত ৯টার দিকে তাকে উপজেলার পাঁচকবর এলাকায় মৃত গণি সরদারের ছেলে আব্দুল মালেকের বাড়িতে নিয়ে আটকে রেখে বাকি ৫০ হাজার টাকার জন্য ইকবালের স্ত্রী সালমাকে ফোন করে অপহরণকারীরা।

এদিকে, শারীরিক নির্যাতনে ইকবাল অচেতন হয়ে পড়েন। এসময় অপহরণকারীরা আহত ইকবালকে ওই মাইক্রোবাসে করে যশোরের রায়পাড়া কাঁঠালতলা এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে আদায়কৃত এক লাখ ৩০ হাজার টাকা দশ অপহরণকারী নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে ইকবালকে নিয়ে অভয়নগরের সরখোলা গ্রামে ফিরে যায়। সেখানে সিদ্দিকের ছেলে শাকিলের নেতৃত্বে বিলের মধ্যে একটি গাছের সাথে ইকবালকে বেঁধে রাখে এবং অপহরণকারীরা বাকি টাকার জন্যে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সালমাকে আসতে বলে। ইকবালের স্ত্রী সালমাসহ পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি অভয়নগর থানার ওসি তাজুল ইসলামকে অবহিত করলে শুরু হয় উদ্ধার অভিযান। বাকি টাকা পৌঁছে দিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ইকবালের স্ত্রীর সাথে সাদা পোশাকে পুলিশ অবস্থান করে। রাত আনুমানিক ৩টার দিকে অপহরণকারীদলের সদস্য রবিউল ইসলাম মুক্তিপণের টাকা নিতে গেলে পুলিশ তাকে আটক করে। তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক অপহৃত ইকবাল জাহিদকে সরখোলা বিলের মধ্য থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় অপহরণকারী দলের হোতা রুবেলকে আটক করলেও শাকিল পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে কনা বেগমসহ আরও চারজনকে আটক করে। এ ঘটনায় সোমবার নয়জনের নাম উল্লেখ করে ইকবাল জাহিদ মামলা দায়ের করেন।

এ ব্যাপারে অভয়নগর থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানান, প্রায় ১১ ঘণ্টার অভিযান শেষে এক নারীসহ ছয় অপহরণকারীকে আটক করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে মুক্তিপণের ১৫ হাজার টাকা, একটি চাকু ও অপহৃত এনজিও কর্মকর্তা ইকবালের মোটরসাইকেল। অন্য আসামিদের আটকে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।

 

খুলনা গেজেট / এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!