দাকোপের কৈলাশগঞ্জ থেকে ৮ম শ্রেনীর এক ছাত্রীকে অপহরণ করে একই এলাকার যুবক সঞ্জয় মন্ডল ওরফে আকাশ। ঢাকার কদমতলী এলাকায় ভাড়া বাসায় রেখে ভয় দেখিয়ে মাসের পর মাস তাকে জোর পূর্বক ধর্ষণ করা হয়। ৯৯৯ নাম্বারে কিশোরীর ফোন পেয়ে কদমতলী ও দাকোপ থানা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে ভিকটিমসহ আসামিকে গ্রেপ্তার করে।
ভুক্তভোগী পরিবার ও দাকোপ থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দাকোপের কৈলাশগঞ্জ ইউনিয়নের রামনগর বিনাপানি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেনীর এক ছাত্রীকে একই এলাকার মৃঃ উপেন মন্ডলের পুত্র সঞ্জয় মন্ডল ওরফে আকাশ (২০) গত ১৭ নভেম্বর ২০২০ অপহরণ করে নিয়ে যায়। প্রথমে তাকে খুলনায় এরপর ঢাকার কদমতলী থানাধীন পোস্তগোলা এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে আটকে রাখে। এ সময় ভিকটিমকে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে স্ত্রী পরিচয়ে থাকতে বাধ্য করা হয়। এ বছর ০৯ মে উদ্ধার হওয়ার আগ পর্যন্ত সঞ্জয় তাকে জিম্মি করে অমানুষিক নির্যাতন এবং ধর্ষণ করে। দীর্ঘ ৬ মাস ২২ দিন পর কদমতলী থানা পুলিশের সহায়তায় দাকোপ থানার এস আই মল্লিক আঃ হালিম ঢাকা পোস্তগোলার ভাড়া বাসা থেকে কিশোরী ভিকটিমকে উদ্ধার এবং অপহরণকারী সঞ্জয়কে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসে।
জানা যায় গত বছরের ১৭ নভেম্বর ৮ম শ্রেনীর ওই ছাত্রী হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে গেলে তার পিতা সিরাজুল ইসলাম মেয়ে হারিয়ে গেছে মর্মে দাকোপ থানায় একটি অভিযোগ ও সাধারণ ডায়েরী করে। এরপর পুলিশ ও পরিবার কিশোরীর সন্ধান করতে থাকে। জানা গেছে, ঘটনার দিন সঞ্জয় তাকে জোর পূর্বক মোটর সাইকেল যোগে তুলে নিয়ে প্রথমে খুলনা শহরে এরপর ঢাকার পোস্তগোলায় নিয়ে যায়। সর্বশেষ গত ৯ মে ভিকটিম গোপনে সেখানকার প্রতিবেশী এক নারীর মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ৯৯৯ নাম্বারে পুলিশের কাছে ফোনে তার জিম্মিদশার কথা জানিয়ে উদ্ধারের আকুতি জানায়। এরপর দাকোপ থানা পুলিশ এবং কদমতলী থানা পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে ভিকটিমকে উদ্ধার এবং অপহরণকারী সঞ্জয় মন্ডল ওরফে আকাশকে গ্রেপ্তার করে দাকোপে নিয়ে আসে।
ভিকটিমের পিতা সিরাজুল ইসলাম মোড়ল বাদী হয়ে নারী শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী ২০০৩) এর ৭/৩০ ধারায় সঞ্জয়ের নাম উল্লেখসহ আরো ২/৩ জনকে অজ্ঞাত নামা আসামী করে দাকোপ থানায় মামলা দায়ের করেন। যা দাকোপ থানার মামলা নং ১০ তাং ১০/০৫/২০২১। ভিকটিমকে ডাক্তারী পরীক্ষা করালে সেখানে ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এদিকে গত ১২ মে আসামী সঞ্জয় ঘটনা স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। একই দিন ভিকটিম ২২ ধারায় আসামির বিরুদ্ধে ঘটনার বিবরণ দিয়ে জবানবন্দি দিয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই আঃ হালিম জানিয়েছেন তদন্ত শেষে আসামির বিরুদ্ধে চার্জশীট দেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে। এলাকাবাসী এ ঘটনার সাথে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি কামনা করেছে।
খুলনা গেজেট/ এস আই