১.
বাস্তব জীবনের সাথে অনেক কিছু মিলানো যায় না
যায় না চেনা, অচেনা মনের রূপ –
চেনা যায় না সুন্দরবন অরণ্যের অনেক প্রাণী,
প্রজাতি, জীব-বৈচিত্র্য, গুচ্ছ গুচ্ছ হরেক ফুল।
আগের মতো চেনা যায় না, সেই দিনের –
রাজপথ, পুরোনো ঢাকার রেলপথ, দালান
কোঠা, পায়ে হাঁটার লালবাগ বংশালের পথ।
আগের মতো শুনিনা সেই খরস্রোতা
সাইডুলি, নরসুন্দ্যা নদীর কলতান।
আগের মতো নেই কচুরিপানা ভরা শাপলা
শালুকের ঝিল, বউসন বিল। তবু, বাসনা অম্লান
বাস্তবে মিলাতে পারি না, সেদিনের পুরনো
স্মৃতি, চিরচেনা মলদীঘি, শনক্ষেত, বাঁশ
– ঝাড়, আম্রকানন, বাড়ীর পাশে রাজী নদী
তীরের সবুজাভ ঝাউবন। মুছে গেছে সব
সবুজ ছায়ার পত্র পল্লব – শানবান্দা ঘাট।
বিশ্রামের জায়গা শান্তির সুবাতাস
বহা, মায়াবী জায়গার আনন্দ কৌতূহল।
এখন তো যেতে পারি না ভ্রমণে, আর সুদূরের
পথ, স্মৃতির মোহনায় কপোতাক্ষ নদ,
কংশ নদ, বিরিশিরি, পাহাড়ি ঢালুপথ।
মোংলার করমজলে দলবাঁধা হরিনের –
বিচরণ পথ দেখিতে সাধ্যমত।
স্মৃতি হয়ে রয়, কক্সবাজার, টেকনাফ,
পতেঙ্গা, সমুদ্র সৈকত, – সূর্যাস্তচল আকাশ
– ঘন নীল – নীরব।
২.
এখন তো আর সেদিনের মতো সুন্দর রূপে
দেখিনা বীরত্ব, গৌরবে কেল্লা তাজপুরের ঘোড়দৌড়ের,
যুদ্ধের মাঠ, দিগন্ত বিস্তৃত পথ।
বাংলার ঐতিহ্য, সৌন্দর্য কৌতূহল।
‘বঙ্গ বীরাঙ্গনা সখিনার কবরের পাশে ঐ
বিহানে ফুল ফোটা গোলাপ, বেলীর
চামেলীর – সুগন্ধি ভরা – সুরভিত ব্যস্ত পথ।’
এখন তো মিলাতে পারি না মনের তরঙ্গ
রূপে, অপরূপে – প্রকৃতির সৌরভ, –
চোখের ধাঁধায় ভৈরব ধলেশ্বরী নদীর রূপালী
ঢেউয়ের পাল তুলো নৌকার পাটাতন।
তলার হাওর, টাঙ্গুয়ার হাওরের রূপালী মনের অশ্রুতে
বাসনা সুখ, বিলাস বহুল আনন্দ সুখ
– তপ্ত আবেগ অনল। ভ্রমণে হাওর অঞ্চল।
এখন তো দেখি না আগের মতো সেই যে
নৌ-বিহার, নৌকা বাইচ, ব্রহ্মপুত্র নদ, মগরা
গড়াই, রাজী নদীর তরঙ্গিত ঢেউ অবিচল।
আলোকিত মনের বাসনায় মহুয়া বনের
সবুজ প্রকৃতি, নয়ন জুড়ানো অপরূপ
রূপের নন্দিত চোখের কাজল। বহু
বিবর্তনে – ঋতু বৈচিত্র্যে বিচিত্র সুখানল, কভু –
দুর্যোগ, দাবানল।