খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ এন্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি (এফএমআরটি) ডিসিপ্লিন, গ্লোবাল ন্যাচার ফান্ড এবং বেসরকারি সংস্থা বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্ট এন্ড ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (বেডস) এর যৌথ উদ্যোগে ‘হেলদি ম্যানগ্রোভস এন্ড সাসটেইনেবল ফিশারিজ ফর ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট কোস্টাল কমিউনিটি ইন সাউথ এশিয়া’ শীর্ষক ৩ দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সিম্পোজিয়াম শুরু হয়েছে।
আজ ০১ মার্চ (বুধবার) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে এ সিম্পোজিয়ামের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন। এসময় তিনি বলেন, ম্যানগ্রোভ ও ফিশারিজের মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। এই দুইয়ের সাথে উৎপাদন, তাপমাত্রা ও লবণাক্ততা হ্রাস-বৃদ্ধি, বৃষ্টিপাত, জলবায়ুগত পরিবর্তন, দূষণসহ নানামাত্রিক প্রভাব সম্পৃক্ত। ঠিক আমরা জানি না কোন কারণে কি প্রজাতির ম্যানগ্রোভ বা মাছের উৎপাদন কমছে বা বাড়ছে। কি কি প্রভাব উপকূলের জল, জলজ প্রাণি ও উদ্ভিদের ওপর পড়ছে। তবে আমরা জানি যে ম্যানগ্রোভ ও মাছচাষের সাথে বিপুল জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকা নির্ভরশীল। উৎপাদন কমলে বা বাড়লে তা তাদের জীবন-জীবিকার ওপরও প্রভাব ফেলে। সামগ্রিকভাবে এসবের মধ্যে শৃঙ্খল বা বন্ধন কাজ করে। তা নিরূপণ জরুরি। দক্ষিণ এশিয়ার বিশাল উপকূলীয় অংশে ম্যানগ্রোভ ও মাছ বড় সম্পদ। যার ওপর আর্থ-সামাজিকসহ নানামাত্রিক উপযোগিতা নির্ভর করে।
তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্যকর ম্যানগ্রোভ ও টেকসই মৎস্যচাষের জন্য নতুন নতুন ক্ষেত্রে গবেষণা প্রয়োজন। এই আন্তর্জাতিক সিম্পোজিয়ামে যে সমস্ত বিষয়ে গবেষণা নিবন্ধ উপস্থাপিত হবে তার ফাইন্ডিংস থেকে অনেক তথ্য-উপাত্ত জানা যাবে। একই সাথে সিম্পোজিয়াম শেষে যে সুপারিশমালা গৃহীত হবে তা ভবিষ্যতে গবেষণাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করার নতুন দিকনির্দেশনা দেবে বলে তিনি আশা করেন। এই সিম্পোজিয়াম থেকে পারস্পারিক যোগাযোগ, গবেষণা তথ্য বিনিময় ও যৌথ শিক্ষা-গবেষণার নেটওয়ার্ক তৈরি হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এফএমআরটি ডিসিপ্লিন, বেডস এবং জিএনএফ’র আয়োজনে এই আন্তর্জাতিক সিম্পোজিয়ামে অংশগ্রহণকারী দেশ-বিদেশের গবেষক, বিজ্ঞানী ও অতিথিদের তিনি স্বাগত জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. আবুল কালাম আজাদ, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খঃ মাহবুবুল হক ও উপ-প্রধান বন সংরক্ষক মো. জাহিদুল কবির। স্বাগত বক্তব্য রাখেন এফএমআরটি ডিসিপ্লিনের শিক্ষক প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আব্দুর রউফ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. মো. গোলাম সরোয়ার। সিম্পোজিয়ামে কি-নোট পেপার উপস্থাপন করেন অস্ট্রেলিয়ার জেমস কুক ইউনিভার্সিটির প্রফেসর নরম্যান সি ডিউক। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর তিনটি টেকনিক্যাল সেশন ও একটি পোস্টার সেশন অনুষ্ঠিত হয়।
ফেডারেল মিনিস্ট্রি ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট (বিএমজেড) এর আর্থিক সহযোগিতায় আয়োজিত এ সিম্পোজিয়ামে বাংলাদেশসহ অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালদ্বীপ, নেদারল্যান্ডস, পাপুয়া নিউগিনি, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, সৌদি আরব, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষক এবং উন্নয়ন বিশেষজ্ঞগণ সশরীরে অংশগ্রহণ করছেন। এছাড়া স্পেন, যুক্তরাজ্য ও থাইল্যান্ডের গবেষকবৃন্দ সিম্পোজিয়ামে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন। সিম্পোজিয়ামে মোট ১৩৩টি গবেষণা নিবন্ধ উপস্থাপন করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সিম্পোজিয়াম শেষে একটি সুপারিশমালা গৃহীত হবে।
খুলনা গেজেট/ বিএমএস