সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটায় তামান্না খাতুন এক তরুণী ও তার বর্তমান স্বামীর গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়েছেন সাবেক স্বামী। গতকাল বৃহস্পতিবার (৫ মে) সন্ধ্যায় বড় কাশিপুর এলাকার কপোতাক্ষ নদীর পাড়ে এ ঘটনা ঘটে।
দগ্ধদের তাৎক্ষণিক উদ্ধার করে প্রথমে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সেখান থেকে চিকিৎসকের পরামর্শে তাদেরকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।
গৃহবধূ তামান্না খাতুন পাটকেলঘাটা থানার বড় কাশিপুর গ্রামের শেখ আব্দুল হকের মেয়ে। তার বর্তমান স্বামী ফরহাদ হোসেন সাতক্ষীরা সদরের আবুল হকের ছেলে। অভিযুক্ত সাবেক স্বামী সাদ্দাম হোসেন কলারোয়া থানার তুলসীডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা।
বড় কাশিপুর গ্রামের সকিনা বেগম জানান, সাতক্ষীরা সদরের পুরাতন সাতক্ষীরা কবিরাজ বাড়ির মোড়ের আবুল হক সরদারের ছেলে ফরহাদ সরদার দীর্ঘদিন তামান্নার বাড়িতে যাতায়াত করতো। এমন অবস্থায় গত ১৫ এপ্রিল তামান্নার সঙ্গে ফরহাদের বিয়ে হয়। এর আগে মালয়েশিয়া প্রবাসী কলারোয়া থানার তুলসীডাঙ্গা গ্রামের সাদ্দাম নামে এক যুবকের সঙ্গে তামান্নার ফেসবুকের মাধ্যমে ভিডিও কলে বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু মালয়েশিয়া প্রবাসী সাদ্দাম দুই বছরের ভেতরে দেশে আসেননি। পরে তামান্না সাদ্দামকে তালাক দেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ফেসবুকে ভিডিও কলের মাধ্যমে দুই বছর আগে তামান্না ও সাদ্দামের বিয়ে হওয়ার পর তারা কখনো একত্রে থাকেননি। সাদ্দাম মালয়েশিয়ায় ছিলেন। কখনো তামান্নার বাড়িতে আসেননি। তামান্না দুই বার স্বামী সাদ্দামের বাড়িতে গিয়েছিলেন। এক বছর আগে সাদ্দামকে তালাক দেন তামান্না।
দগ্ধ তামান্নার ছোট বোন রুমানা খাতুন জানান, সন্ধ্যায় আপু ও দুলাভাই ফরহাদ সরদার বাড়ির পেছনে কপোতাক্ষ নদীর পাড়ে ঘুরতে গিয়েছিলেন। আপুর সমস্ত শরীর পুড়ে গেছে। আপু-দুলাভাই একসঙ্গে বাড়ির গেটের সামনে এসে মাকে বলতে থাকেন- মা, আমাদেরকে জ্বালিয়ে দিয়েছে। বাঁচাও বাচাঁ বলে চিৎকার করতে থাকে।
স্থানীয় বাসিন্দা শেখ রবিউল ইসলামের ছেলে মিলন শেখ জানান, তামান্নার গায়ের কাপড়সহ পুরো শরীর পুড়ে ঝলসে গেছে। তার স্বামীর হাতের কিছু অংশ পুড়ে গেছে।
দগ্ধ তামান্নার বাবা শেখ আব্দুল হক বলেন, মেয়ে জানিয়েছে সাদ্দাম তার গায়ে আগুন দিয়েছে। আমার মেয়েকে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে ওই সাদ্দাম। আমি থানায় অভিযোগ দিয়েছি। আমি তার শাস্তি চাই।
পাটকেলঘাটা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাঞ্চন কুমার রায় বলেন, মেয়েটির সাবেক স্বামী মালয়েশিয়া প্রবাসী এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ করছে পরিবার। মেয়েটির গায়ে পেট্রল দিয়ে আগুন দেওয়া হয়েছে। আমরা অভিযান পরিচালনা করছি। দ্রুতই ঘটনার রহস্য জানা যাবে।
খুলনা গেজেট/ এস আই