সাতক্ষীরায় স্কুল শিক্ষিকা স্ত্রীর দায়েরকৃত যৌতুকের মামলায় স্বামী শিক্ষক আব্দুস সামাদ গাজীর জামিন আবেদন না’মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বৃহষ্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান উভয়পক্ষের শুনানী শেষে এই আদেশ দেন।
স্কুল শিক্ষক আব্দুস সামাদ (৪৪) সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার খড়িয়াটি গ্রামের সোলায়মান গাজীর ছেলে ও গুনাকারকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৬ জুলাই সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার গুনাগারকাটি গ্রামের তোফায়েল আহম্মেদের ডিভোর্সি মেয়ে ও মাদারবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা তাছলিমা খাতুনের সাথে খড়িয়াটি গ্রামের সোলায়মান গাজীর ডিভোর্সী ছেলে গুনাকারকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আব্দুস সামাদ গাজীর দেড় লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে হয়। বর্তমানে তাদের চার মাসের একটি ছেলে রয়েছে।
বিয়ের পর থেকে আব্দুস সামাদ ও তার পরিবারের লোকজন যৌতুকের দাবিতে তাছলিমাকে প্রায়ই নির্যাতন করতো। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তাছলিমা গত বছরের ২৫ অক্টোবর ১০ লাখ টাকার যৌতুকের দাবিতে তার স্বামী আব্দুস সামাদ, শ্বশুর সোলায়মান গাজী, শ্বাশুড়ি সখিনা খাতুন ও দেবর সেলিম রেজার নাম উল্লেখ করে সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করে চলতি বছরের ৪ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আশাশুনি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন আদালত।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ বাকী বিল্লাহ গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা শেষে চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি আদালত চারজন আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেন। বিষয়টি মীমাংসার শর্তে গত ১৯ জানুয়ারি আদালত চারজনকে জামিনে মুক্তি দেয়। কিন্তু মীমাংসা করতে ব্যর্থ হওয়ায় আদালত বৃহষ্পতিবার ধার্য দিনে আব্দুস সামাদের জামিন আবেদন না’মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। একই আদেশে তাছলিমার শ্বশুর, শ্বাশুড়ি ও দেবরের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।