সাতক্ষীরার নগরঘাটায় পিতা হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত মা ও মায়ের প্রেমিকের ফাঁসির দাবি জানিয়েছে ছেলে। বুধবার (১৬ মার্চ) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে পাটকেলঘাটা থানার নগরঘাটা মঠবাড়ী গ্রামের নিহত গোলাম মোড়লের ছেলে সাব্বির হোসেন এই দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান নিহতের বড় ভাই আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, গত ১ মার্চ রাতে আমার ছোট ভাই গোলাম মোড়ল স্ট্রোক জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করেছে মর্মে আমার কাছে সংবাদ প্রদান করা হয়। আমিসহ স্থানীয়রা সেখানে গিয়ে আমার ছোট ভাইয়ের লাশের গলায় কালো একটি দাগ দেখতে পাই এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। এরপর আমরা বুঝতে পারি তাকে হত্যা করা হয়েছে। পরকীয়া প্রেমের বলি হতে হয়েছে আমার ভাইকে। নিজের স্ত্রী রেহেনা এবং রাব্বির অবৈধ প্রেমলীলায় বাঁধা দেওয়ায় তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমার ভাইয়ের স্ত্রী রেহেনার সাথে যশোর জেলার ঝিকরগাছা থানার শিমুলিয়া গ্রামের জের আলী মোড়লের ছেলে রাব্বির সাথে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল। বিষয়টি নিয়ে পারিবারিকভাবে একাধিবার শালিস হলেও রেহেনা রাব্বির সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিন্ন করেনি। এটি নিয়ে স্বামী স্ত্রী মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরেই পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ১ মার্চ রাতে খাওয়া দাওয়া শেষে আমার ভাই গোলাম মোড়ল খাটে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়লে স্ত্রী রেহেনা এবং তার প্রেমিক রাব্বিসহ তার সহযোগিরা তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এছাড়া মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য শরীরের বিভিন্ন অংশে গুরুতর আঘাত করে জখম করে। হত্যার ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে স্ট্রোক করে মারা গেছে মর্মে প্রচার দিতে থাকে আমার ভাইয়ের স্ত্রী রেহেনা পারভীন। যদিও রেহেনা ও তার প্রেমিকের উদ্দেশ্যে সফল হয়নি। পুলিশ রেহেনা এবং রাব্বিকে আটক করে কারাগারে পাঠিয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দড়ি এবং ইনজেকশনের সিরিঞ্জ উদ্ধার করেছে।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, গোলাম মোড়ল ও রেহেনা খাতুন দম্পত্তির ২ ছেলে সাগর হোসেন (১৮) ও সাব্বির হোসেন (১৫)। আত্মীয়তার সম্পর্ক ধরে যশোরের ঝিকরগাছার শিমুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা গোলাম রাব্বির (৩০) সাথে রেহেনা পারভীনের পরকীয়া সম্পর্ক থাকায় প্রায়ই রাব্বি তাদের বাড়িতে আসতো। ঘটনার রাতে রাব্বি তাদের বাড়িতেই ছিলো। হত্যার ঘটনায় আমি বাদী হয়ে ৩ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করি। কিন্তু মামলাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে আসামিরা তাদের আত্নীয় স্বজনদের মাধ্যমে নানা চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছেন। রেহেনার আত্নীয়রা মোটা অংকের অর্থ নিয়ে মাঠে নেমেছেন তাদের কে নির্দোষ প্রমাণিত করতে। এমনকি মামলার বাদী হওয়ায় আমাকেও নানানভাবে হয়রানির চেষ্টা করে যাচ্ছেন তারা। মামলায় দু’জন আসামি আটক হলেও একজন প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
তিনি পরকীয়া প্রেমের জেরে নিহত হওয়া ভাইয়ের হত্যাকারীদের সঠিক বিচার দাবি করে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার, সিআইডিসহ সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেনে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত নিহত গোলাম মোড়লের ছোট ছেলে সাব্বির হোসেন পিতা হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত তার মা রেহেনা পারভীন ও মায়ের প্রেমিক গোলাম রাব্বির ফাঁসির দাবি জানান। এসময় সে দ্রুত পিতা হত্যার বিচার কার্যক্রম শেষ কারার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানান।
খুলনা গেজেট/ এস আই
