খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ডেঙ্গুতে একদিনের ৯ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১ হাজার ২১৪

সুস্থ থাকতে প্রতি বছরই নিতে হতে পারে করোনার টিকা

গে‌জেট ডেস্ক

করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে সুস্থ থাকতে প্রতিবছরই করোনা টিকা নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ফাইজারের সহ-নির্মার্তা এবং বায়োএনটেকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) উগুর শাহিন। বিশেষ করে যারা ফাইজারের টিকা নিচ্ছেন, তাদের প্রতিবছরই টিকা নিতে হতে পারে।

রোববার (২১ নভেম্বর) এক সাক্ষাৎকারে উগুর শাহিন একথা বলেন বলে জানিয়েছে রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম আরটি। সাক্ষাৎকারে উগুর শাহিন ফাইজারের বুস্টার ডোজের প্রশংসা করেন।

তুর্কি বংশোদ্ভূত মুসলিম জার্মান দম্পতি উগুর শাহিন ও ওজলেম তুরেসি ২০০৮ সালে নিজস্ব ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি বায়োএনটেক প্রতিষ্ঠা করেন। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জার্মানির এই প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ কোম্পানি ফাইজারের সাথে মিলে ‘ফাইজার-বায়োএনটেক’ নামে করোনার প্রথম টিকা উদ্ভাবন করে।

রোববার জার্মান সংবাদপত্র বিল্ড’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বায়োএনটেকের সিইও বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে তাদের উদ্ভাবিত টিকাকে তিনি ‘খুবই কার্যকর’ বলে মনে করেন।

করোনা টিকা নেওয়ার পর অনেকে ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন। এমনকি ফাইজারের পূর্ণ ডোজ টিকা নেওয়ার পরও অনেকের শরীরে করোনার উপসর্গ দেখা গেলেও উদ্বেগ উড়িয়ে দিয়ে উগুর শাহিন বলেন, ৬০ বছরের বেশি বয়সীদের গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়া ঠেকাতে তাদের টিকা ৯০ শতাংশ কার্যকর।

বায়োএনটেকের সিইও শাহিন বলেন, করোনায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়া ঠেকাতে ফাইজারের টিকার কার্যকারিতা ৯ মাস পর্যন্ত স্থায়ী থাকে। তবে টিকা নেওয়ার চতুর্থ মাস থেকেই এর কার্যকারিতা ও প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে। আর তাই করোনার বিরুদ্ধে নিরাপত্তা নিশ্চিতে অত্যন্ত জোরালো ভাবে তিনি বুস্টার ডোজের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

তার ভাষায়, বুস্টার ডোজ মানবদেহে কেবল প্রতিরোধ ক্ষমতায় বৃদ্ধি করবে না, একইসঙ্গে এটি সংক্রমণের চেইনও ভাঙতে সহায়তা করে। আর তাই আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে টিকার আওতায় আনতে চিকিৎসকদেরও যতটা সম্ভব বাস্তবিক হওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।

উগুর শাহিনের বিশ্বাস, করোনাভাইরাস থেকে নিরাপদে থাকতে ভবিষ্যতে মানুষকে বছরে একবার করে টিকার বুস্টার ডোজ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। তার মতে, প্রাথমিক ভাবে করোনা টিকার দু’টি ডোজ যে পরিমাণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে, বুস্টার ডোজে এর চেয়ে আরও দীর্ঘ সময় নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে বলে প্রত্যাশা করছেন তিনি।

তিনি বলছেন, করোনা টিকা প্রতিবছরই একবার করে নেওয়া প্রয়োজন হতে পারে, ঠিক ইফ্লুয়েঞ্জার মতো।

এর আগে গত আগস্ট মাসে এক গবেষণার তথ্য সামনে এনে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছিল, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার চেয়ে ফাইজার-বায়োএনটেক এর করোনা টিকা দ্রুত কার্যকারিতা হারায়।

করোনা টিকার ডোজ সম্পূর্ণ করেছেন- এমন ৩ লাখ স্বেচ্ছাসেবীকে পরীক্ষা করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছায় অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দল। স্বেচ্ছাসেবীদের সবারই বয়স ১৮ বছরের বেশি এবং তাদের সবাইকে দু’টি দলে ভাগ করে তথ্য বিশ্লেষণ করেন গবেষক দলের সদস্যরা।

ফাইজার-বায়োএনটেকের দাবি, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে তাদের প্রস্তুতকৃত টিকা মানবদেহে ৯৪ শতাংশ কার্যকর, অন্যদিকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার দাবি, মানবদেহে তাদের টিকার কার্যকারিতা ৮৫ শতাংশেরও বেশি।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চলমান টিকাদান কার্যক্রমে ফাইজার-বায়োএনটেক ও অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা; এই দুই করোনা টিকাই বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে করোনার অতিসংক্রামক ধরন ডেল্টার সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা নিশ্চিতে ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানিসহ কয়েকটি দেশে টিকার দুই ডোজ নেওয়া নাগরিকদের তৃতীয় বা বুস্টার ডোজ দেওয়া হচ্ছে।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!