নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা।।
গঠনতন্ত্র বহির্ভূতভাবে সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির ঘোষিত নির্বাচন কমিশনার অ্যাড. এসএম হায়দার আলীসহ সাত সদস্যের বিরুদ্ধে অ্যাড. আমিুনর রহমান চঞ্চলের দায়েরকৃত মামলার আরজি বাতিলের আবেদন না’মঞ্জুর করা হয়েছে। সাতক্ষীরা সদর সিনিয়র সহকারি জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক যুগ্ম জজ রাখিবুল ইসলাম রোববার শুনানী শেষে সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি)এ আদেশ দেন।
এদিকে সাতক্ষীরা আইনজীবী সমিতির আগামি ২৪ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনকে ঘিরে অ্যাড, আব্দুল জলিল (১) এর নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নামের তালিকা নোটিশ বোর্ডে টানিয়ে দিয়েছেন। তালিকায় ১১টি পদের মধ্যে আটজনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় জয়ী দেখানো হয়েছে। সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক পদে দু’জন করে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সহকারি নির্বাচন কমিশনার এ্যাড, কুন্ডু তপন কুমার জানান, সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যকরি কমিটির ১১ সদস্যের মধ্যে ৭জন গত ২৭ জানুয়ারি ও একজন ৩০ জানুয়ারি পদত্যাগ করেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাড. আব্দুল জলিল (১) এর অনুপস্থিতিতে পরবর্তী জ্যেষ্ঠ সহকারি কমিশনার হিসেবে তিনি গঠনতন্ত্র অনুযায়ি ৩০ জানুয়ারি সাবেক কমিটির সভাপতি অ্যাড. আবুল হোসেন (২) ও সাধারণ সম্পাদক আ.ক.ম রেজোয়ান উল্লাহ সবুজকে অবহিত করে ওই কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন। অথচ সাবেক কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গঠনতন্ত্র বহির্ভুতভাবে ৩১ জানুয়ারি সাধারণ সভা ডেকে ২৭ জানুয়ারি অ্যাড. এসএম হায়দার আলীকে দায়িত্ব দেন। কমিটি ভেঙে দেওয়ায় জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ তাকে (তপন) মোবাইল ফোনে হুমকি দেন। সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে অ্যাড. শাহানাজ পারেভিন মিলি, অ্যাড. সেলিনা আক্তার শেলী, অ্যাড. মিজানুর রহমান বাপ্পি, অ্যাড. এবিএম সেলিম, এ্যাড. নুরুল আমিনসহ কয়েকজন তার নির্বাচনী কার্যালয়ের একটি তালা ভেঙ্গে অপরটি ভেঙ্গে ফেলার চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় তিনি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এমন পরিস্থিতিতে আদালতের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট হয়। সমিতির আয় ও ব্যয় সংক্রান্ত কার্যক্রমের অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়।
অ্যাড. কুন্ডু তপন কুমার আরও জানান, অ্যাড. আবুল হোসেন ও অ্যাড. সবুজের আহুত ৩১ জানুয়ারির সাধারণ সভা ও তাদের ঘোষিত ২৭ জানুয়ারির নির্বাচন কমিশনার অ্যাড. এসএম হায়দার আলীসহ সাতজন সদস্যকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে গত ৬ ফেব্রুয়ারি আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাড. আমিনুর রহমান চঞ্চল বাদি হয়ে সাতক্ষীরা সদর সিনিয়র সহকারি জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলায় ওই অবৈধ কমিটির কার্যত্রমের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়। ভারপ্রাপ্ত বিচারক যুগ্ম জজ প্রথম আদালতের বিচারক রাখিবুল ইসলাম বিবাদীদের দু’দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ি বাদিপক্ষকে মামলার কাগজপত্র দাখিল না করার অভিযোগ তুলে আদালতে সময়ের আবেদন করেন বিবাদীপক্ষ। একইসাথে বাদির আরজি বাতিলের আবেদন জানানো হয়।আদালত ওই আবেদন না’মঞ্জুর করে বৃহষ্পতিবারেই আপত্তি দাখিল ও রোববার দু’তরফা শুনানী অন্তে আদেশের জন্য দিন ধার্য করেন। রোববার দু’পক্ষের শুনানী শেষে সোমবার বিবাদীপক্ষের বাদির আরজি বাতিলের আবেদন না’মঞ্জুর করা হয়। একই আদেশে ২০ ফেব্রুয়ারি নিষেধাজ্ঞা শুনানীর জন্য দিন ধার্য করা হয়।
এদিকে গত বছরের ১৮ মার্চ সাতক্ষীরা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত পাঁচ সদস্যের প্রধান অ্যাড. আব্দুল জলিল (১) তার অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত নির্বাচন কমিশনার অ্যাড. কুন্ডু তপন কুমারের নির্বাচন তপশীল যথাযথ মনে করে সমিতির কার্য নির্বাহী পরিষদের নির্বাচন ২০২২-২০২৩ এর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রাথীদের চুড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করেছেন। চুড়ান্ত তালিকায় আরও ৪জন সহকারি নির্বাচন কমিশনার সাক্ষর করেছেন।
তালিকায় ১১ সদস্যের কার্যকরি কমিটির আটজন প্রতিদ্বন্দ্বীকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় জয়লাভ দেখানো হয়েছে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় জয়লাভ কারীরা হলেন, সহ-সভাপতি পদে অ্যাড. আব্দুস সামাদ (৪), যুগ্ম সম্পাদক পদে অ্যাড. সাঈদুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ পদে অ্যাড. আমিনুর রহমান চঞ্চল, সহ-সম্পাদক লাইব্রেরিয়ান পদে অ্যাড. আ.ক.ম শামসুদ্দোহা (খোকন), সহ-সম্পাদক মহিলা বিষয়ক পদে অ্যাড. মোছাঃ ফারজানা জাহান টুকটুকি, সদস্য পদে অ্যাড. রফিকুল ইসলাম রফিক, অ্যাড. সাঈদুজ্জামান জিকো ও অ্যাড. মোঃ সাহেদুজ্জামান (সাহেদ)।
তালিকায় সভাপতি হিসেবে অ্যাড. রবিউল ইসলাম খান ও অ্যাড. এম শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক পদে অ্যাড. অ্যাড. শেখ এমদাদুল ইসলাম ও অ্যাড. তোজাম্মেল হোসেন তোজাম এবং সহ-সম্পাদক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক পদে অ্যাড. সিরাজুল ইসলাম (৫) ও অ্যাড. মোঃ সালাহ উদ্দিন প্রতিদ্বন্দ্বী করবেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।