সাতক্ষীরায় করোনা সংক্রমণ ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাওয়ায় শনিবার (৫ জুন) সকাল ৬ টা থেকে অগামী এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সভায় জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল জানান, লকডাউনের সময় সকাল ৯টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত জরুরি নিত্য প্রয়োজনীয় দোকান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়া এ সময় সকল প্রকার গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। লকডাউনের সময় সাধারণ মানুষের চলাচল ও ভিড় এড়ানোর জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সাতক্ষীরার সাথে যশোর ও খুলনাসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়ক যোগাযোগের পয়েন্ট গুলিতে পুলিশ চেকপোষ্ট থাকবে। এ সময় সীমান্ত পারাপার বন্ধ থাকবে। শহরে থাকবে ভ্রাম্যমাণ আদালত। বাধা নিষেধ অমান্যকারীদের জরিমানা করা হবে।
জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন সাফায়াত, পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান, সাতক্ষীরা ৩৩ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ আল মাহমুদসহ সংশ্লিষ্টরা।
সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন শাফায়েত বলেন, করোনা সংক্রমণরোধে সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। মুখে মাস্ক ব্যবহারের পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলতে হবে। জেলায় করোনার উর্দ্ধমুখি সংক্রমণের হার দ্রুত কমাতে তিনি বিনা প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে না আসার জন্য সকলকে অনুরোধ জানান।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতিকালে সাতক্ষীরা জেলায় করোনা সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পায়। এরই মধ্যে ভারত ফেরত বৈধ ও অবৈধ যাত্রীদেরকে নিয়ে চরম বিড়ম্বনায় পড়ে প্রশাসন। এসব যাত্রীদের বিভিন্ন হোটেলে বা কোন আবাসিকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যেই করোনা সংক্রমণের হার ৫০ শতাংশ অতিক্রম করায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর লকডাউনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে। গত দুই দিনে সাতক্ষীরায় করোনা সংক্রমণের হার ছিল প্রায় ৫৪ শতাংশ। করোনা পজিটিভ নিয়ে এখন পর্যন্ত হাসপাতালে এবং প্রাতিষ্ঠানিক ও পারিবারিক কোয়ারেন্টিনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২৪৫ জন।
এদিকে, ভোমরা স্থলবন্দরে ভারতীয় আমদানিজাত পন্যবাহি ট্রাকের ড্রাইভার ও হেলপারদের বন্দর এলাকায় অবাধ বিচরণ করোনা সংক্রমণের অন্যতম কারণ। সবদিক দিয়ে বিবেচনা করে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় এক সপ্তাহের লকডাউনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
খুলনা গেজেট/এনএম