সাতক্ষীরায় জাল সনদধারী শিক্ষকের তালিকায় জেলা শহর বিভিন্ন উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠোনে ১৬ জন শিক্ষক রয়েছেন। অফিসিয়ালি সরকারি নির্দেশনা পেলে এসব জাল সনদধারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়েছেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সহকারী সচিব সেলিম শিকদার স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপন সম্প্রতি প্রকাশ পেলে সাতক্ষীরায় এই নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে।
দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ৬৭৮ জন জাল সনদধারী শিক্ষককের মধ্যে সাতক্ষীরায় ১৬ জন শিক্ষক রয়েছেন। তারা হলেন সাতক্ষীরা দিবা নৈশ কলেজের ইসলামের ইতিহাসের প্রভাষক বিলকিছ জাহান সিদ্দিকা, মার্কেটিং বিভাগের শিল্পী রানী পাল ও রাষ্ট্র বিজ্ঞানের প্রভাষক শান্তি রঞ্জন পাল, তালার শহীদ মুক্তিযোদ্ধা কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক সুচিত্রা রায়, কলারোয়া বেগম খালেদা জিয়া কলেজের ইতিহাসের প্রভাষক মোঃ আমিরুল ইসলাম, কলারোয়া সোনার বাংলা ডিগ্রি কলেজের মনো বিজ্ঞানের প্রভাষক তৌহিদুর রহমান, কলারোয়া বোয়ালিয়া মুক্তিযোদ্ধা কলেজের সমাজকল্যাণের প্রভাষক নির্মল কান্তি সরকার, বামনখালি দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কম্পিউটার আবুল কাশেম, আশাশুনির গদাইপুর জোহর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কৃষি মোঃ ইলিয়াস হোসেন, পুইজালা বি এম আর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সমাজ ঝর্না তরফদার, সদর সুন্দরবন টেক্সটাইল মিল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজ কাকলী দেবনাথ, আশাশুনি গোদাড়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কৃষি মোঃ ফজলুর রশিদ ও সহকারী শিক্ষক কম্পিউটার নির্মল কুমার বিশ্বাস, তালার ফলেয়া চাঁদকাটি অগ্রণী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক শেখ ফিরোজ আহমেদ, তালার শুভাষিনী কলেজের প্রদর্শন/কম্পিউটার শিক্ষক মোঃ ইয়াকুব আলী শেখ, সাতক্ষীরা শহীদ স্মৃতি ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক সাচিবিক বিদ্যা মোঃ মনিরুজ্জামান।
প্রসঙ্গত, দেশের বিভিন্ন স্কুল-কলেজে কর্মরত ৬৭৮ জন জাল সনদধারী শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে তাদের এমপিও বন্ধ করার এবং অবৈধভাবে এমপিও বাবদ ভোগ করা টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরকে। এ ছাড়া জাল সনদধারী যেসব শিক্ষক অবসরে গেছেন তাদের অবসর সুবিধা বাতিল করতে বলেছে মন্ত্রণালয়। যারা অবসরে গেছেন বা চাকরি ছেড়েছেন তাদের টাকা অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে আদায় করতে বলা হয়েছে। আর জাল সনদধারীদের বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের। জাল সনদধারী শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে অধিদপ্তরকে বলেছে মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে এসব নির্দেশনা দিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ দেশব্যাপী এক জরিপে এর সত্যতা প্রকাশ পায়। তারই ধারাবাহিকতায় ১৮ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সহকারী সচিব সেলিম শিকদার স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপন প্রকাশ পেলে সাতক্ষীরায় শুরু হয় ব্যাপক তোলপাড়।
সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা অফিসার অজিত কুমার সরকার প্রজ্ঞাপনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, জাল সনদধারী শিক্ষকদের বিষয়টি জেনেছি। সারা দেশে ৬৭৮ শিক্ষককে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে এমন নির্দেশনাটি অফিসিয়ালি এখনও আমরা পায়নি। পেলে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খুলনা গেজেট/এনএম