সাতক্ষীরায় মানবাধিকার বিষয়ক সিএসও কোয়ালিশন, পিস ফোরাম সদস্য ও যুব ভলেন্টিয়ারদের এক যৌথ সমন্বয় সভা শুক্রবার সকালে শহরের সুলতানপুর ক্যাথলিক মিশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।
ইউএনডিপি এইচআরপি এর সহায়তায় স্বদেশ পরিচালক মাধব দত্তের সভাপতিত্বে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত সভায় আলোচনায় আরও অংশ নেন সাংবাদিক সুভাষ চৌধুরী, এনজিও ব্যক্তিত্ব অপরেশ পাল, হেনরি সরদার, এসআই মোস্তাফিজুর রহমান, আশাশুনি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অসীম চক্রবর্তী সহ অন্যরা।
সভায় বক্তারা বলেন, সার্বিক মানবাধিকার রক্ষায় সুশীল সমাজকে আরও বেশী তৎপর হতে হবে। একই সাথে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে বিষয়গুলির বিচার নিশ্চিত করতে হবে। দেশজুড়ে চলমান মানবাধিকার পরিস্থিতি সন্তোষজনক নয় উল্লেখ করে এসব পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে হলে সামাজিক আন্দোলনের উপরও গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।
বক্তারা সমাজে সংঘটিত নানা বিষয় চিহ্নিত করে বলেছেন, এসব ঘটনা মানবাধিকার লংঘন করেছে। আলোচনায় উঠে আসে সমাজে বাল্যবিবাহের অবাধ গতি ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করছে। এছাড়া শিশু ধর্ষণ, শিশু খুন এবং পারিবারিকভাবে নারীর প্রতি সহিংসতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনাকালে আগের যেকোন সময়ের তুলনায় শিশুশ্রমও বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনকি নারী শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য মজুরি থেকে বৈষম্যমূলকভাবে বঞ্চিত হচ্ছেন। আলোচনায় আরও উঠে আসে বাক স্বাধীনতা ও তথ্য আইন প্রয়োগের বিষয়টি। সমাজে এমন ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকলে বারবার মানববন্ধন, সামাজিক আন্দোলন, প্রতিরোধ আন্দোলন এবং গনমাধ্যমে তা প্রকাশ ও প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে।
বিচার বহির্ভূত হত্যা সম্পর্কে বক্তারা বলেন, ২০১৯ সালে সাতক্ষীরায় এমন ঘটনা ৯টি ঘটলেও চলতি বছর এই সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। এমন ধরনের ঘটনা ঘটলে মানবাধিকার কর্মীদের দায়িত্ব পড়ে ঘটনাস্থলে যাওয়া এবং সংশ্লিষ্ট পরিবারের সাথে কথাবার্তা বলে একটি রিপোর্ট তৈরী করে তা আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার নজরে নিয়ে আসা। সাতক্ষীরায় শিশু খুনের বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে উলেখ করে তারা আরও বলেন, কলারোয়ার ৫ মাসের শিশু মারিয়া তার বাবা মাকে হারিয়ে অন্ধকার ভবিষ্যতের মধ্যে পড়ে রয়েছে। দীর্ঘ সময়ের এই আলোচনায় আরও উঠে আসে নারী ও শিশু পাচারের কাহিনী এবং তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যদের অসহনীয় দিন যাপন।
সাতক্ষীরাতে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করেন এমন ৪০জন প্রতিনিধি তারা প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সভায় মানবাধিকার পরিস্থিতি বিশ্লেষন করেন এবং যত দ্রুত সম্ভব তা স্থানীয় গ্রাম আদালত, জনপ্রতিনিধি, থানা এবং সর্বোপরি আদালতের মাধ্যমে কাঙ্খিত বিচার পাওয়ার লক্ষ্যে কাজ করার আহবান জানান।
খুলনা গেজেট/কেএম