সাতক্ষীরায় গত ২৪ ঘন্টায় করোনা উপসর্গ নিয়ে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩১ জানুয়ারি তাদের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে জেলায় ১ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মোট ৮৮ জন এবং করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন মোট ৭৯৯ জন।
করোনা উপসর্গে মৃত ব্যক্তিরা হলো, সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার চেহারা গ্রামের মৃত ইছাক আলীর ছেলে মোকছেদ আলী (৬০) ও কলারোয়া উপজেলার তুলসিডাঙ্গা গ্রামের রফিকুল ইসলামের স্ত্রী সখিনা খাতুন (৬৫)।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ করোনার নানা উপসর্গ নিয়ে গত ১৭ জানুয়ারি থেকে ৩০ জানুয়ারির মধ্যে তারা সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩১ জানুয়ারি ভোর রাত সোয়া ১২টা ও বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে তাদের মৃত্যু হয়।
এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় সাতক্ষীরায় নতুন করে আরো ৭৬ জন করোনা পজেটিভ সনাক্ত হয়েছে। এসময় র্যাপিড এন্টিজেন কীট ও সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালের আরটি পিসিআর ল্যাবে মোট ১৮৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। শনাক্তের হার ৪১দশমিক ০৮ শতাংশ। এর একদিন আগে শনাক্তের হার ছিল ৫৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
সামেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ করোনার নানা উপসর্গ নিয়ে ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে মোট ৫৬ জন রোগী । এর মধ্যে ১৬ জনের করোনা পজেটিভ ও বাকি ৪০ জন সন্দেহজনক (সাসপেক্টেড)। নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (আইসিইউ) ভর্তি আছে ৮ জন।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডাঃ হুসাইন সাফায়াত জানান, গত ২৪ ঘন্টায় সাতক্ষীরা সামেক হাসপাতালের আরটি পিসিআর ল্যাবে ৭৬ টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৮ জনের করোনা সনাক্ত হয়। এছাড়া সদর হাসপাতাল সহ বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে র্যাপিড এন্টিজেন কীটে ১০৯ টি নমুনা পরীক্ষা করে আরো ৫৮ জনের করোনা পজেটিভ সনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৪১ দশমিক ০৮ শতাংশ।
তিনি আরো বলেন, জেলায় ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সাতক্ষীরা জেলায় মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭ হাজার ৪৩৭ জন। জেলায় মোট সুস্থ হয়েছেন ৬ হাজার ৮৭৫ জন। গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ্য হয়েছে ১৬ জন। বর্তমানে জেলায় করোনা রোগী রয়েছে ৪৭৪ জন। এরমধ্যে হাসপাতালে ভর্তি করোনা রোগীর সংখ্যা ১৬ জন। বাড়িতে হোম আইসোলেশনে আছেন ৪৫৮ জন। জেলায় প্রথম থেকে ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৮৮ জন এবং উপসর্গে মারা গেছেন আরো ৭৯৯ জন। জেলায় গড় সংক্রমনের হার ২০ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
সিভিল সার্জন আরো জানান, গত ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত জেলায় ১ লক্ষ ৬২ হাজার ৫১ জন এস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন। আর দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ৯৩ হাজার ৭৫৩ জন। এদিকে সেনোফর্ম ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ৯ লক্ষ ১৪ হাজার ৬১৯ জন এবং দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ৮ লক্ষ ৩ হাজার ৯৫ জন। ফাইজার ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ২ লক্ষ ২৩ হাজার ৪৭ জন। দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ২৪ হাজার ৩১০ জন। সিনোভ্যাক ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ১ লক্ষ ২৫ হাজার ৪৫০ জন। সিনোভ্যাক ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ৮২ জন। এছাড়া এস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের বুষ্টার ডোজ গ্রহণ করেছেন ২০ হাজার ৬৮২ জন এবং ফাইজার ভ্যাকসিনের বুষ্টার ডোজ গ্রহণ করেছেন ৯১ জন।
তিনি আরো জানান, সাতক্ষীরা জেলায় এপর্যন্ত প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে ১৪ লক্ষ ২৫ হাজার ১৬৭ জনকে। দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে ৯ লক্ষ ২১ হাজার ২৪০ জনকে এবং তৃতীয় ডোজ ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে ২০ হাজার ৭৭৩ জনকে।
খুলনা গেজেট/এনএম