সাতক্ষীরায় গত ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে ও উপসর্গে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬ ফেব্রুয়ারি তাদের মৃত্যু হয়। এনিয়ে জেলায় ৬ ফেব্রুয়ারি রোববার পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৯০ জন এবং করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন মোট ৮১৪ জন।
করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তি হলেন, সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর এলাকার মৃত কাদের গাজীর ছেলে ওয়াজেদ আলী (৬৬) ও উপসর্গে মৃত ব্যক্তিরা হলেন, দেবহাটা উপজেলার শুসিলগাতি গ্রামের মৃত জুম্মান গাজীর ছেলে শোকর আলী গাজী (৭০) এবং কলারোয়া উপজেলার জাফরপুর গ্রামের মৃত মুনসুর আলীর ছেলে আব্দুল মাজেদ (৭০)।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ করোনা আক্রান্ত হয়ে ও করোনার নানা উপসর্গ নিয়ে গত ৩১ জানুয়ারি হতে ৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বিভিন্ন সময় তারা সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬ ফেব্রুয়ারি বেলা সাড়ে ১০ টা থেকে রাত ৯ টার মধ্যে বিভিন্ন সময় তাদের মৃত্যু হয়।
এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় সাতক্ষীরায় নতুন করে আরো ২৮ জন করোনা পজেটিভ সনাক্ত হয়েছে। এসময় র্যাপিড এন্টিজেন কীট ও সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালের আরটি পিসিআর ল্যাবে মোট ১২৫ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৪৩ শতাংশ এর একদিন আগে শনাক্তের হার ছিল ৪৪ দশমিক ২৭ শতাংশ।
সামেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ করোনার নানা উপসর্গ নিয়ে ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে মোট ৪৯ জন রোগী । এর মধ্যে ১৪ জনের করোনা পজেটিভ ও বাকি ৩৫ জন সন্দেহজনক (সাসপেক্টেড)। নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (আইসিইউ) ভর্তি আছে ৬ জন।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডাঃ হুসাইন সাফায়াত জানান, গত ২৪ ঘন্টায় সাতক্ষীরা সামেক হাসপাতালের আরটি পিসিআর ল্যাবে ৪৭ টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৩ জনের করোনা সনাক্ত হয়। এছাড়া সদর হাসপাতাল সহ বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে র্যাপিড এন্টিজেন কীটে ৭৮ টি নমুনা পরীক্ষা করে আরো ১৫ জনের করোনা সনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
তিনি আরো বলেন, জেলায় ৬ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭ হাজার ৭০৫ জন। জেলায় মোট সুস্থ হয়েছেন ৭ হাজার ২৫ জন। গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ্য হয়েছে ৩৫ জন। বর্তমানে জেলায় করোনা রোগী রয়েছে ৫৯০ জন। এরমধ্যে হাসপাতালে ভর্তি করোনা রোগীর সংখ্যা ১৪ জন। বাড়িতে হোম আইসোলেশনে আছেন ৫৭৬ জন। জেলায় প্রথম থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি প্রর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৯০ জন এবং উপসর্গে মারা গেছেন আরো ৮১৪ জন। জেলায় গড় সংক্রমনের হার ২০ দশমিক ৮৫ শতাংশ।
সিভিল সার্জন আরো জানান, গত ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেলায় ১ লক্ষ ৬৪ হাজার ৮৬১ জন এস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন। আর দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ৯৭ হাজার ৭৪৮ জন। এদিকে সেনোফর্ম ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ৯ লক্ষ ১৭ হাজার ৭৭ জন এবং দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ৮ লক্ষ ১১ হাজার ৩৭১ জন। ফাইজার ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ২ লক্ষ ২৩ হাজার ৪৯ জন। দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ২৫ হাজার ১৭৮ জন। সিনোভ্যাক ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ১ লক্ষ ২৫ হাজার ৬৫৭ জন। সিনোভ্যাক ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ২৩ হাজার ৭২৩ জন। এছাড়া এস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের বুষ্টার ডোজ গ্রহণ করেছেন ২৮ হাজার ৯৮ জন এবং ফাইজার ভ্যাকসিনের বুষ্টার ডোজ গ্রহণ করেছেন ৯১ জন।
তিনি আরো জানান, সাতক্ষীরা জেলায় এপর্যন্ত প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে ১৪ লক্ষ ৩০ হাজার ৬৪৪ জনকে। দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে ৯ লক্ষ ৫৮ হাজার ২০ জনকে এবং তৃতীয় ডোজ ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে ২৮ হাজার ১৮৯ জনে।
খুলনা গেজেট/এএ