সাতক্ষীরায় গত ২৪ ঘন্টায় করোনা উপসর্গে নারীসহ দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১২ ফেব্রুয়ারি তাদের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে জেলায় ১২ ফেব্রুয়ারি শনিবার পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৯১ জন এবং করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন মোট ৮২৭ জন। কমেছে সংক্রমণের হার।
করোনা উপসর্গে মৃত ব্যক্তিরা হলেন, সাতক্ষীরা পাটকেলঘাটা থানার কুমিরা গ্রামের আসমত আলীর স্ত্রী ছকিনা খাতুন (৫৫) ও তালা উপজেলার বারুইহাটি গ্রামের মৃত কফিল উদ্দিনের ছেলে মোঃ আয়ুব আলী ৫৫)।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ করোনার নানা উপসর্গ নিয়ে গত ৯ ফেব্রুয়ারি ও ১২ ফেব্রুয়ারি তারা সামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১২ ফেব্রুয়ারি বেলা সাড়ে ১১টা ও বিকাল ৪টার সময় তারা মারা যান।
এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে আরো ২১ জন করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছে। এসময় র্যাপিড এন্টিজেন কীট ও সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালের আরটি পিসিআর ল্যাবে মোট ১১৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ১০শতাংশ। এর আগের দিন আগে শনাক্তের হার ছিল ২৫ দশমিক ৪৫ শতাংশ। জেলায় কমেছে সংক্রমণের হার।
সামেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ করোনার নানা উপসর্গ নিয়ে ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে মোট ৩৮ জন রোগী। এর মধ্যে ১০ জনের করোনা পজেটিভ ও বাকি ২৮ জন সন্দেহজনক (সাসপেক্টেড)। নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (আইসিইউ) ভর্তি আছে ৫ জন।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডাঃ হুসাইন সাফায়াত জানান, গত ২৪ ঘন্টায় সাতক্ষীরা সামেক হাসপাতালের আরটি পিসিআর ল্যাবে ৫৯ টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এছাড়া সদর হাসপাতাল সহ বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে র্যাপিড এন্টিজেন কীটে ৫৭টি নমুনা পরীক্ষা করে আরো ৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ১০ শতাংশ। জেলায় গড় সংক্রমণের হার ২১ দশমিক ০৮ শতাংশ।
তিনি আরও বলেন, জেলায় ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭ হাজার ৮৩৯ জন। জেলায় মোট সুস্থ হয়েছেন ৭ হাজার ২৭০ জন। গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ্য হয়েছে ৪৫ জন। বর্তমানে জেলায় করোনা রোগী রয়েছে ৪৭৮ জন। এরমধ্যে হাসপাতালে ভর্তি করোনা রোগীর সংখ্যা ১০ জন। বাড়িতে হোম আইসোলেশনে আছেন ৪৬৮ জন। জেলায় প্রথম থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি প্রর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৯১ জন এবং উপসর্গে মারা গেছেন আরও ৮২৭ জন।
সিভিল সার্জন আরও জানান, গত ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেলায় ১ লক্ষ ৬৬ হাজার ৬৫৮ জন এস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন। আর দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ১ লক্ষ ১ হাজার ৯৩৮ জন। এদিকে সেনোফর্ম ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ৯ লক্ষ ১৯ হাজার ৩১জন এবং দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ৮ লক্ষ ২৪ হাজার ৫৫০ জন। ফাইজার ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ২ লক্ষ ২৩ হাজার ৪৯ জন। দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ২৮ হাজার ৬৮২ জন। সিনোভ্যাক ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ১ লক্ষ ২৫ হাজার ৮২২ জন। সিনোভ্যাক ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ৫৬ হাজার ৯০৫ জন। এছাড়া এস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের বুষ্টার ডোজ গ্রহণ করেছেন ৩২ হাজার ৩১১ জন এবং ফাইজার ভ্যাকসিনের বুষ্টার ডোজ গ্রহণ করেছেন ৯১ জন।
তিনি আরও জানান, সাতক্ষীরা জেলায় এ পর্যন্ত প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে ১৪ লক্ষ ৩৪ হাজার ৫৬০ জনকে। দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে ১০ লক্ষ ১২ হাজার ৭৫ জনকে এবং তৃতীয় ডোজ ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে ৩২ হাজার ৪০২ জনে।
খুলনা গেজেট/ এস আই
