ঘূর্ণিঝড় ইয়াস বড় ধরণের আঘাত করেছে সাতক্ষীরার প্রতাপনগরের ওপর। জোয়ার ভাটার সাথে লড়াই করে টিকতে না পেরে অনেকেই পৈত্রিক ভিটা ছেড়ে বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিচ্ছে। গত পাঁচ দিনে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করেছে। গত বছরের ২০ মে আম্ফানের আঘাতে বিধস্ত হয় প্রতাপনগর। ফেব্রুয়ারিতে বাধ সংস্কার হয়ে স্বাভাবিক জীবন ফিরে আসে।
প্লাবিত প্রতাপনগর ইউনিয়নের মানুষের দুঃখ ও দুর্ভোগের শেষ নেই। বসত ভিটে ভাঙ্গনে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে বহু মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছে।
অনেক পরিবার বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধে ও সংসার জীবন পরিচালনার প্রধান আয়ের উৎস মাছ ধরার নৌকায় বসবাস করছে। ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হওয়া পরিবারগুলো বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাকা ভবনে আশ্রয় নিলেও আশ্রয় শিবিরে দুর্ভোগ বাড়ছে। কপোতাক্ষ ও খোলপেটুয়া নদীর অথৈ পানিতে ডুবে আছে প্রতাপনগর। জোয়ারের সময় রাস্তার ওপরে অনেকেই ধরছে আবার মাছ ধরছে । গত ২৬ মে ঘূর্নিঝড় ইয়াসের প্রভাবে নদীতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি, ঝড়ো হাওয়ায় দুপুরের জোয়ারে কপোতাক্ষ ও খোলপেটুয়া নদীর আঘাতে প্রতাপনগরের সাত গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ছয় হাজার মানুষ আজ পানি বন্দি অবস্থায় সীমাহীন দুর্ভোগ ও মানবেতর জীবনযাপন করছে। হরিশখালির দুটি ভাঙ্গন পয়েন্ট, শ্রীপুর-কুড়িকাহুনিয়া লঞ্চ ঘাটের দক্ষিণ অংশের দুটি পয়েন্ট ও পার্শ্ববর্তী পদ্মপুকুর ইউনিয়নের বন্যতলা গ্রামের একটি পয়েন্ট ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।
ইতোমধ্যে হরিশখালির দক্ষিণ পশ্চিম অংশের ভাঙ্গন পয়েন্টে ভাঙ্গন রোধে ঠিকাদার শাহিনুর রহমান বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করলেও অন্যান্য স্থানে ভাঙ্গন রোধের কাজ শুরু হয়নি।
ইউপি চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেন জানান, ভাঙ্গনরোধের প্রক্রিয়া চলছে। কপোতাক্ষ নদের তীরে গোকুলনগর গ্রামের ভাঙ্গন সংস্কার করেছে গ্রামবাসীরা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিক্তিতে। অসহায়রা আশ্রয়কেন্দ্রের নিরাপদ স্থানে রয়েছে। আম্ফানের চেয়েও বড় ধরণের ক্ষতি বলে তিনি উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য আইলার আঘাতে প্রতাপনগর ইউনিয়নের চাকলা, সুভদ্রাকাটি, রুইয়ের বিল, দিঘলারআইট, শ্রীপুর,কুড়িকাহুনিয়া ও সোনাতনকাটি গ্রামের ব্যাপক ক্ষতি হয়। আম্ফানে ইউনিয়নের ১৯ টি গ্রামের মধ্যে ১৮ টিতে ক্ষতি হয়। বাকি গ্রাম গোকুলনগর এবার ইয়াসের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তিনদিন পানি বন্দি ছিল এ গ্রামের মানুষ।
খুলনা গেজেট/কেএম