খুলনা, বাংলাদেশ | ২৪ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৯ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  এনআইডির তথ্য ফাঁসের ঘটনায় সজীব ওয়াজেদ জয় ও জুনাইদ আহমেদ পলকসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে কাফরুল থানায় মামলা
  হাইকোর্টে ২৩ জনকে অতিরিক্ত বিচারপতি নিয়োগ, আজ শপথ

সাতক্ষীরার পৌর মেয়র চিশতির বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগের তদন্ত হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতির বিরুদ্ধে ১১ কাউন্সিলরের আনা দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত হচ্ছে। অভিযোগে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিধিনিষেধ পরিপন্থি কার্যক্রম পরিচালনা, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। কেবলমাত্র ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর হোসেন কালু এই অভিযোগে স্বাক্ষর করেননি।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে পৌর মেয়র ৭৬ লাখ ৫৬ হাজার ৯২০ টাকার পানির বিল মওকুফ করেছেন। যা পৌর আইন লঙ্ঘন করেছেন। অথচ পানি সরবরাহ শাখার সাড়ে ৫ কোটি বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। তিনি বাজার ব্যবস্থাপনায় অনিয়মের মাধ্যমে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেছেন। সম্পূর্ণ বিধি নিষেধ পরিপন্থীভাবে তিনি হাট বাজার বজিারা গ্রহীতা গ্রহণের নিকট প্রায় ১ কোটি ১৮ লাখ ৯৫ হাজার ৯৭১ টাকা বকেয়া রেখেছেন। তিনি অবৈধ সিন্ডিকেট করে তা দলীয় পছন্দ লোকের নিকট হাট বাজার ইজারা প্রদান করেছেন। এছাড়া বিগত তিন বছরের ময়লার ও সেপটি ট্যাংক পরিষ্কারের সমুদয় অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। এ খাতে তিনি ১৩ কোটি ২৮ লাখ ৯৬ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে ১ কোটি ৩৩ লাখ ৩ হাজার ২২১ টাকার পৌরকর ও ১০ লাখ ২ হাজার ৬৯৬ টাকার লাইসেন্স ফি মওকুফ করেছেন। এছাড়া তিনি ভুয়া ভ্রমন ও আপ্যায়ন বিল দেখিয়ে ৩২ লাখ ৯৮ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তিনি প্রতারণার মাধ্যমে বাজেট ছাড়া ২০২০-২১ অর্থবছরে এডিপির ১ কোটি ৩৪ লাখ টাকার ৯টি স্কিমে টেন্ডার প্রদান করেছেন। এছাড়া তিনি বিগত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ২৭ লাখ ৪৫ হাজার ৫৪৮ টাকার, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৫৭ লাখ ৬৭ হাজার ২০০ টাকার, ২০২০-২১অর্থবছরে ৭৯ লাখ ৩৬ হাজার ৮৭৩ টাকা ও ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৪ লাখ ২২ হাজার ৭২৭ টাকার ভুয়া ভাউচার দিয়ে মালামাল ক্রয় করে তা আত্মসাৎ করেছেন।
পৌর মেয়র চিশতি গত ৬ বছর পৌরফান্ড থেকে কোন কারণ ছাড়া তার দলীয় লোকজনের ১ কোটি ৮ লাখ ৮৯ হাজার ৭৪৮ টাকার আর্থিক সাহায্য প্রদান করেছেন। পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরদের পৌরসভার কোন ঠিকাদারী কাজে যুক্ত হওয়ার সুযোগ না থাকলেও তিনি পৌরসভা থেকে নিজনামে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ঠিকাদারী লাইসেন্স গ্রহণ করেছেন এবং তিনি সরাসরি জলবায়ু সহিষ্ণু অবকাঠামো প্রতিষ্ঠানিকান প্রকল্পে অংশগ্রহণ করেছেন তার লাইসেন্সে। এছাড়া পৌরসভার মাষ্টাররোলের কর্মচারী দিয়ে তিনি নিজের আবাসিক হোটেল, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও পরিবহন ব্যবসায় কাজে লাগিয়েছেন। সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে মেয়র চিশতির করা সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদে সোমবার এক পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে কাউন্সিলররা মেয়রের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেন।

এদিকে পৌর সভার প্যানেল মেয়র কাউন্সিলর ফিরোজ আহমেদ বলেন, পৌর সভার ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ মাহমুদ পাপা কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার বহু আগে ১৯৭৬ সালে শহরের মিনি মার্কেট হওয়ার পর তার বাড়ির পিছনে তৎকালীন পৌর চেয়ারম্যানের কাছ থেকে দু’টি দোকান বরাদ্দ নেন এবং ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হিমেল কাউন্সিলর হওয়ার আগে আনুমানিক ১৫-১৬ বছর আগে তার বাবা মা মিনি মার্কেটে পৌরসভা থেকে দোকান ঘর বরাদ্দ নিয়ে বৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন।
তিনি আরো বলেন, পৌর মেয়র ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ৪২ লাখ ৬৯ হাজার ৫০০ টাকা ও ব্যক্তিগত গাড়ি বাবদ পৌরসভা থেকে ৬ হাজার ৬৩৯ লিটার অকটেন বাবদ ৩ লাখ ২৮ হাজার আত্মসাৎ করেছেন। তিনি পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতির এসব দুর্নীতি ও অনিয়মের তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবী জানিয়েছেন।

এবিষয়ে মেয়র তাজকিন আহম্মেদ চিশতি বলেন, আমি ২০২১ সালের ১০ মার্চ টানা দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য সাতক্ষীরা পৌর সভার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করি। আমি পৌরসভার সকল স্তরের দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধে কার্যকরি পদক্ষেপ নিয়েছি। কাউন্সিলরদের দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় ও অবৈধ সুযোগ সুবধা না দেয়ায় তারা কয়েকজন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যেচার করছেন। নিজেদের রক্ষায় মিথ্যে অভিযোগ দিয়ে আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে। তারা ১০ কাউন্সিলর আমার বিরুদ্ধে বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অভিযোগ দাখিল করেছেন। যেটির তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!