চিকিৎসা অবহেলাজনিত কারণে দৈনিক জন্মভূমির সাংবাদিক মামুন খানের স্ত্রী শায়লা শারমিনের মৃত্যু হয়েছে বলে নাগরিক নেতারা অভিযোগ করেছেন। এ ঘটনায় তারা গরীব নেওয়াজ ক্লিনিকের উদাসীনতা, হাত-পা বেধে অধিমাত্রায় এনেসথেসিয়া প্রয়োগকে দায়ী করেছেন। এমনকি তাদের অপরাধ ধামাচাপা দিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি করে অন্যত্র বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে। এসব ঘটনায় দায়ী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তারা।
সোমবার (১৫ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ মোঃ মনজুরুল মুরশিদের কাছে দেওয়া স্মারকলিপিতে তারা এ দাবি জানান। স্বাস্থ্য পরিচালক বিষয়টি শুনেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ^াস দেন।
উল্লেখ্য, টানা ১১ দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর দৈনিক জন্মভূমির স্টাফ রিপোর্টার মামুন খানের স্ত্রী সায়লা শারমীন চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৬ মার্চ দিকে শহিদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে মারা যান।এর আগে গত ১৪ মার্চ তাকে গরীব নেওয়াজ ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সেখানে অপারেশনের জন্য তাঁকে এনেসথেসিয়া দেওয়া হলে তার অবস্থার অবনতি হয়। চিকিৎসকরা দ্রুত রক্ত লাগবে বলে রোগীর স্বজনদের জানান। পরে তাকে দ্রুত খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে অপারেশন শেষে দেখা যায়, চিস্ট ফুলে গেছে। ওই অবস্থায় তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। প্রায় এক সপ্তাহ সেখানে থাকার পর কোনো অগ্রগতি না হওয়া হলে তাকে শহিদ শেখ আবু নাসের হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছিল।
মামুন খান বলেন, অপারেশনের দিন তাঁর স্ত্রীকে সান্তনা ও নির্ভয় দিতে অপারেশন থিয়েটারে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে এ্যানেসথেসিয়া ডাঃ দিলিপ কুন্ডু তাঁকে বের হয়ে যেতে বলেন। তখন তাঁর স্ত্রীর দুই হাত স্যালাইনের পাইপ দিয়ে বাধা ছিল। ছবি তুলতে গেলে ডাঃ দিলিপ বাধা দেন।
তিনি আরো বলেন, আমার স্ত্রীকে দফায়-দফায় অজ্ঞানের ওষুধ প্রয়োগ করে পুরো শরীর অজ্ঞান করা হয়। গরীব নেওয়াজ ক্লিনিক থেকে একপ্রকার মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে খুলনা সিটি মেডিকেলে নেওয়া হয়। বলা হয় এখানে আইসিইউ নেই। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এনেসথেসিয়া বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ দিলিপ কুমার কুন্ডু ও গাইনী চিকিৎসক ডাঃ সানজিদা হুদা সুইটির অবহেলা এবং গরীব নেওয়াজ ক্লিনিকের অব্যবস্থপনার জন্য তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
নাগরিক নেতৃবৃন্দ, তদন্ত পূর্বক দোষি চিকিৎসক এবং ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করেন। মামুনের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টির জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এস এ রশীদ, ওয়ার্কার্স পার্টির মহানগর কমিটির সভাপতি শেখ মফিদুল ইসলাম, সিপিবি মহানগর কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান বাবু, বৃহত্তর আমরা খুলনাবাসীর সাধারণ সম্পাদক এস এম মাহাবুবুর রহমান খোকন, বেলার সমন্বয়কারী মাহফুজুর রহমান মুকুল, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারন সম্পাদক শরিফুল ইসলাম সেলিম, ডিবিসির ব্যুরো প্রধান আমিনুল ইসলাম, দীপ্ত টেলিভিশনের ব্যুরো প্রধান ইয়াসীন আরাফাত রুমী, দৈনিক জন্মভূমির সিনিয়র সাংবাদিক দেবব্রত রায় প্রমুখ।
নাগরিক নেতারা এর আগে রবিবার (১৫মে) খুলনা সিভিল সার্জনের কাছেও একই অভিযোগ ও দাবি উপস্থাপন করেন।
খুলনা গেজেট/কেডি