পৈত্রিক সম্পত্তি জবর দখলের উদ্দেশ্যে বড় ভাইকে হত্যার প্রচেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। এতে রক্তাক্ত জখম হয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আহতরা। এর মধ্যে দোকান ও বাড়ী-ঘরে ভাঙচুর-লুটপাট করছে প্রতিপক্ষরা। এখানেই শেষ নয়; পুলিশ উল্টো হয়রানি করা হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্তদের।

তেরখাদা উপজেলার বারাসাত ইউনিয়নের আড়পাঙ্গাসিয়া এলাকায় গত ২০ আগস্ট সকালের এ ঘটনায় উভয়পক্ষের ৭ জন জখম হয়েছে। ঘটনাটি ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। জখম মোল্যা নজরুল ইসলাম টিপু (৫৫), তার স্ত্রী নাজমা (৪৫) খুমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

শনিবার (২২ আগস্ট) সকালে অজ্ঞাত কতিপয় ব্যক্তি টিপু মোল্যার বাড়ীতে গিয়ে তাদের খুঁজতে থাকে, বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটি।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত বৃহস্পতিবার সকালে আড়পাঙ্গাশিয়া এলাকায় নজরুল ইসলাম টিপু ওরফে টিপু মোল্যার দোকানের সামনে এসে সেখান থেকে দোকান সরাতে বলে লাহু মোল্যা (৫০)। কেন দোকান সরাতে হবে, এমন প্রশ্ন করলে টিপু মোল্যার ছেলে শিমুল মোল্যা (২৪) কে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে লাহু মোল্যা। মুহর্তেই ধারালো অস্ত্র ধরেন শিমুলের পিতা টিপু মোল্যা। এতে তার ডান হাতের তালু প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটে পড়লে লাহু মোল্যা (৫০), লাবলু মোল্যা (৪৫), হাজা মোল্যা (৪০) ও হাসান মোল্যা (৩৮) বড় ভাই টিপু মোল্যাকে ধারালো অস্ত্র, হাতুড়ি, লোহার রড দিয়ে বেধড়ক আঘাত করে। এসময়ে তাকে উদ্ধার করতে আসলে টিপু মোল্যার স্ত্রী নাজমাকেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে তারা। এতে রক্তাক্ত জখম হন মোল্যা নজরুল ইসলাম টিপু ওরফে টিপু মোল্যা, তার স্ত্রী নাজমা ও ছেলে শিমুল মোল্যা। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে প্রথমে তেরখাদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নাজমা ও শিমুলের অবস্থা উন্নতি হলেও টিপু মোল্যার অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক।

কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, টিপু মোল্যার ডান হাতের তালু থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন অবস্থা; সেটা মেজর অপারেশন করা হয়েছে। এছাড়া মাথায়, বুকে-পিঠে প্রচন্ড আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন তিনি। এখনো শঙ্কামুক্ত নন তিনি।

অপর সূত্রে জানা গেছে, এই ঘটনায় মোঃ সিরাজুল ইসলাম মোল্যা (৬৮), তার ছেলে লাবলু মোল্যা (৫০), হাসান মোল্যা (৩৫), হাসানের স্ত্রী মরিয়াম (৩০) আহত হন। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে লাবলু মোল্যা ও হাসান মোল্যাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে তেরখাদা থানার অফিসার ইনচার্জ (চলতি) স্বপন কুমার রায় বলেন, ‘পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে আপন ভাই-ভাইয়ের মধ্যে এঘটনাটি ঘটেছে। উভয়পক্ষের লোকজন আহত হয়েছেন। আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অভিযোগ পেয়ে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

খুলনা গেজেট/এনএম