সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ীর গাঙআটি গ্রামে শ্বশুরবাড়ির পরিত্যক্ত রান্না ঘর থেকে জামাইয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) সকালে শ্যামনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে।
নিহত জামাইয়ের নাম আসাদুজ্জামান তাছের (২৫)। তিনি শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ীর ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের নুর হোসেন গাজীর ছেলে।
নিহতের স্ত্রী গাঙআটি গ্রামের মৃত সুরাত আলী সরদারের মেয়ে মারুফা খাতুন (২৩) জানান, নিজেদের মধ্যে সাংসারিক ঝামেলার জেরে গত ৪ মাস আগে স্বামী তাছের তাকে মৌখিকভাবে তালাক দেয়। পরে গত সপ্তাহে তিনি নিজেই স্বামীকে তালাকনামা পাঠিয়েছিলেন। আজ বৃহস্পতিবার(২১ এপ্রিল) সকালে পার্শ্ববর্তী তার বড় বোনের রান্না ঘরের মধ্যে তাছেরের ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে বলে বড় বোন তাকে খবর দেয়।
নিহত আসাদুজ্জামান তাছেরের বড় শালিকা ছকিনা খাতুন জানান, বৃহস্পতিবার সকালে আমি আমার পরিত্যক্ত রান্না ঘরটি গোছাতে গেলে ঘরের মধ্যে একজনকে ঝুঁলে থাকতে দেখে ডাকচিৎকার দিলে আশেপাশের লোকজন ছুটে আসে। এসময় ছোট বোনের স্বামী তাছেরকে ঝুঁলে থাকতে দেখে থানায় খবর দেয়া হয়। পরে পুলিশ এসে তার মরদেহ নিয়ে গেছে।
নিহতের বোন খাদিজা ও নিহতের মামী রহিমা খাতুন জানান, আসাদুজ্জামান তাছেরকে স্বামী পরিত্যক্তা গর্ভবতী নারী মারুফা খাতুনের সাথে জোর করে বিয়ে দেয়া হয়। এরপর থেকে তারা আসাদুজ্জামান তাছেরকে বিভিন্ন সময়ে মারপিটসহ নানানভাবে শারিরীক নির্যাতন করতো। ওরা তাছেরকে মেরে ফেলেছে।
নিহতের পিতা নুর হোসেন গাজী জানান, গত কয়েক দিন আগে আমার ছেলেকে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন মারপিট করে তার ফোন ও টাকা পয়সা কেড়ে নিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। পরে বুধবার (২০ এপ্রিল) সেই ফোন আনতে গিয়ে আর ফিরে আসেনি। বৃহস্পতিবার সকালে শুনতে পাচ্ছি যে আমার ছেলে নাকি গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমার ছেলেকে ওরা জোর করে ওখানে নিয়ে এক থেকে দেড় বছর আগে বিয়ে দিয়েছিল। আমার ছেলেকে ওরা হত্যা করে ঝুলিয়ে দিয়েছে। কারণ আমার ছেলের পা দুটি মাটি স্পর্শ করেছিল।
শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাজী ওয়াহিদ মোর্শেদ জানান, খবর পেয়ে মরদেহটির সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির পর ময়না তদন্তের জন্যে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট পাওয়া গেলে প্রকৃত রহস্য জানা যাবে। তবে নিহতের স্বজনদের দাবি আসাদুজ্জামান তাছেরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচার দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ অভিযোগের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখছে।
খুলনা গেজেট/ এস আই