আবেদা বেগম (৬৯), অনেক বছর ধরেই মানসিক রোগে আক্রান্ত। সব কিছু মনে রাখতে পারেন না। ১৫ বছর আগে ঝড়-বৃষ্টির এক রাতে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন তিনি। এলাকায় মাইকিং, থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি), পত্র-পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ আর বহু স্থানে খুঁজেও মায়ের সন্ধান পাননি আবেদা বেগমের ছেলে-মেয়েরা।
এদিকে বাগেরহাট জেলার মোংলা থানার জিরোধারাবাজি এলাকার ঘরখোল গ্রামের আল আমিন শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে প্রতিবেশীর সঙ্গে এক আত্মীয়ের বিয়েতে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের চাঁদনীমুখা গ্রামে এসেছিলেন।
বিয়ে বাড়িতে এসে পাশের বাজারে চা পান করতে গিয়ে আল আমিন লোকমুখে শোনেন, সেখানে মানসিক ভারসাম্যহীন নামাজি এক বৃদ্ধা থাকেন। আল আমিনের হারিয়ে যাওয়া মাও নামাজ পড়তেন। তাই কৌতূহল নিয়ে তাকে দেখতে এগিয়ে যেতেই দেখেন ওই বৃদ্ধা তারই হারিয়ে যাওয়া মা। মাকে খুঁজে পেয়ে আল আমিন তাকে জড়িয়ে ধরেন। কিন্তু প্রথমে ছেলেকে চিনতে পারেননি আবেদা বেগম। বেশ কিছুক্ষণ পর মাও ছেলেকে চিনতে সক্ষম হন এবং চিৎকার করে কান্নাকাটি শুরু করেন।
আল আমিন বলেন, শুক্রবার দুপুরে প্রতিবেশীর সঙ্গে এক আত্মীয়ের বিয়েতে গাবুবায় আসি। বিয়েতে এসে স্থানীয় বাজারে গিয়ে জানতে পারি গত দুই বছর ধরে বাজারে এক নামাজি ‘পাগলি’ থাকেন। তার ঠিকানা কেউ জানেন না। বিষয়টি শুনেই এগিয়ে গিয়ে গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদের পাশের একটি দোকান ঘরের চালের নিচে বসে থাকা অবস্থায় ১৫ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া মাকে খুঁজে পাই।
গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম জানান, এক বৃদ্ধা বছর দুয়েক আগে এসে গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদের পাশে থাকতেন। শুক্রবার বিয়ে বাড়িতে এসে তার ছেলে তাকে শনাক্ত করেন। তিনিও ছেলেকে চিনতে পারায় তাকে নিজ ঠিকানায় পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এআইএন