আগের ম্যাচেই হারের স্বাদ পেয়েছিল আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল। তাই সুপার ক্লাসিকো ম্যাচটি লাতিনের দুই পরাশক্তির কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কিন্তু সংঘাত ও ফাউলময় ম্যাচে শেষ হাসি হেসেছে আর্জেন্টিনা। পুরো ম্যাচে ফাউল হয়েছে ৪২টি যার ২৬টিই এসেছে ব্রাজিলের কাছ থেকে। এমনটি প্রথমার্ধে হওয়া ২২টি ফাউলের ১৬টিই করে সেলেসাওরা।
ফুটবল বিশ্বকাপে সবথেকে বেশি শিরোপা জয়ী দল ব্রাজিল। তবে পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়নরা শিরোপা ক্ষরায় ভুগছে গত ২১ বছর ধরে। সবশেষ ২০০২ সালে বিশ্বসেরার মুকুট মাথায় পড়েছিল সেলেসাওরা। কাতার বিশ্বকাপেও নেইমাররা বাদ পড়েছে ক্রোয়েশিয়ার কাছে হেরে। আর্জেন্টিনার কাছে হারের মধ্য দিয়ে আরেকটি রেকর্ড হারিয়েছে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। নিজেদের ফুটবল ইতিহাসে ব্রাজিল কখনই বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচে হারেনি। কিন্তু এবার সেই হারের স্বাদ দিয়েছে আর্জেন্টিনা। টানা ৬৪ ম্যাচ পর ৬৫তম ম্যাচে এসে সেই হারের স্বাদ পেয়েছে সেলেসাওরা।
এদিকে আসন্ন ২০২৬ বিশ্বকাপে রদ্রিগো-ভিনিসিয়ুসরা খেলতে পারবেন কিনা তা নিয়েও শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। ২০২৬ বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে এখন চলছে বাছাইপর্ব। আর এই বাছাইপর্বেই টানা তিন ম্যাচ হেরে বেশ বেকায়দায় পড়েছে ব্রাজিল। টানা দুই হারের পর সব মিলিয়ে শেষ তিন ম্যাচে এসেছে মাত্র ১ পয়েন্ট।
কনমেবল অঞ্চলের দেশগুলোর বিশ্বকাপ টিকিট নিশ্চিতের লড়াইয়ে আজ আর্জেন্টিনার বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল সেলেসাওরা। আলবিসেলেস্তেদের বিপক্ষে এ ম্যাচ আজ শুরু থেকেই ছড়িয়েছে উত্তাপ। দুই দলের সমর্থকদের দাঙ্গায় জড়ানোর পর পুলিশি লাঠিচার্জের শিকার হন আর্জেন্টাইন সমর্থকরা। খেলাও শুরু হয় আধা ঘণ্টা বিলম্বে। উত্তাপ ছড়ানো এই ম্যাচ শেষ পর্যন্ত জিতে নিয়েছে আর্জেন্টিনাই। ৬৩ মিনিটে নিকোলাস ওতামেন্দির দেয়া একমাত্র গোলে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে মেসিরা। এ নিয়ে এটি বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ব্রাজিলের টানা তিন পরাজয়।
এদিকে ব্রাজিলের বিপক্ষে আজকের জয়ের পর ৬ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে এখন দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে আছে আর্জেন্টিনা। অন্যদিকে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলের অবস্থান এখন ৬ নম্বরে। ৬ ম্যাচের ৩টিতে হারায় সেলেসাওদের পয়েন্ট এখন ৭। আর্জেন্টিনার পরেই আছে উরুগুয়ে এবং কলম্বিয়া।
এদিকে কনমেবল অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইকে অন্যতম প্রতিযোগীতা পূর্ণ টুর্নামেন্ট হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। এখানে দশটি দল একে অপরের বিপক্ষে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ম্যাচের ভিত্তিতে মোট ১৮টি ম্যাচ খেলবে। এরপর সেরা ছয়টি দল সরাসরি বিশ্বকাপ-২০২৬ এ খেলার সুযোগ পাবে।
সাত নম্বরে থাকা দলটিকে অংশ নিতে হবে ফিফা প্লে অফ টুর্নামেন্টে। মহাদেশীয় এই প্লে অফ টুর্নামেন্ট থেকে দুইটি দল পাবে বিশ্বকাপের টিকিট। এদিকে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বাকি আছে আরও ১২টি ম্যাচ। এক তৃতীয়াংশ ম্যাচ শেষে ব্রাজিলের অবস্থান ৬ নম্বরে। শেষ পর্যন্ত যদি ঘুরে দাঁড়াতে না পারে পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা তবে ইতালির মতই ভাগ্য বরণ করতে হতে পারে নেইমার-রদ্রিগোদেরও। এদিকে ফুটবল বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাজে পরিস্থিতির মাঝে থাকলেও ঘুরে দাঁড়ালে নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করতে পারবে সেলেসাওরা।
খুলনা গেজেট/এমএম