খুলনা, বাংলাদেশ | ৮ পৌষ, ১৪৩১ | ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  গাজীপুরে কারখানায় আগুন : নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২
  হাইকোর্টের বেশ কয়েকজন বিচারপতির বিরুদ্ধে অনিয়ম তদন্তে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন
  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১৬৫

রোগী ও চিকিৎসকদের ভরসাস্থল ডাঃ মেহেদী নেওয়াজ

বশির হোসেন

মার্চের শুরুতে বাংলাদেশে যখন করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু; তখন মরণঘাতি এ ভাইরাসের সম্ভাব্য চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা নিয়ে সারাদেশ ছিল ধোঁয়াশার মধ্যে। করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য আলাদা ডেডিকেটেড হাসপাতাল, চিকিৎসকদের জন্য হোটেলে থাকা ও কোয়ারেন্টিনের ধারণা নিয়ে খুলনায় প্রক্রিয়া শুরু করেন ডাঃ মেহেদী নেওয়াজ। পরবর্তীতে তার এ পরিকল্পনার আলোকেই সারাদেশে করোনা চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় সুনির্দিষ্ট অনেক বিষয় সংযোজিত হয়েছে। করোনা চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনায় বিশেষ ভূমিকার স্বীকৃতিও পেয়েছেন তিনি। তাকেই দায়িত্ব দেয়া হয় খুলনার করোনা চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা কমিটির সার্বিক সমন্বয়কের। একদিকে, আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতকরণে চিকিৎসকদের সাথে সমন্বয় করা। অন্যদিকে, জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে খুলনায় করোনা ব্যবস্থাপনার নীতি নির্ধারণী বৈঠক করা। সবই করেছেন দক্ষতার সাথে।

ডাঃ মেহেদী নেওয়াজ। খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন গত ৪ বছরের বেশি সময় যাবত। এর আগে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষও ছিলেন তিনি। তার আরও পরিচয় তিনি বিএমএ খুলনার সাধারণ সম্পাদক। স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) খুলনা জেলার সাধারণ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদকও তিনি। ফলে ২০০৯ সাল থেকেই খুলনার চিকিৎসক রাজনীতিতে অপ্রতিদ্বন্দ্বী জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন এ পেশাজীবী নেতা। সর্বশেষ ২০১৫ সালে বিএমএ নির্বাচনে জয়ের পর খুলনার চিকিৎসকরা প্রায় একক নেতৃত্ব চলছে তার।

তবে করোনা মহামারীর এইসময়ে এই পদের সদ্ব্যবহার করেছেন তিনি। জেলা করোনা ব্যবস্থাপনার সভায় উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে খুলনার বাস্তবতা তুলে ধরা তার মুখ্য কাজ। রোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় সকল চিকিৎসা সামগ্রী চেয়েছেন। ব্যবস্থা করেছেন চিকিৎসকদের চিকিৎসা দেয়ার নিরাপদ পরিবেশ। করোনা রোগীদের জন্য আলাদা ডেডিকেটেড হাসপাতাল, করোনা চিকিৎসা দেয়া চিকিৎসকদের জন্য হোটেলে কোয়ারেন্টিন থাকার চিন্তা এসেছে তার মাথা থেকেই। শুধু পরিকল্পনা করে ক্ষ্যন্ত হননি; নিজে একাধিকবার করোনা হাসপাতালে রোগীদের কাছে গিয়েছেন। তাদের সাথে কথা বলেছেন। তাদের অভিযোগ শুনেছেন, করেছেন সমাধানও। খুলনায় করোনা পরীক্ষার জন্য আরটি পিসিআর মেশিন স্থাপনে তার ভূমিকা অগ্রগণ্য। খুলনায় মিডিয়া কর্মীদের অত্যন্ত পরিচিত মুখ ডাঃ মেহেদী নেওয়াজ ল্যাব ও করোনার যাবতীয় সর্বশেষ খবর তুলে দেন সাংবাদিকদের। যাতে খুলনা তথা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ সচেতনতার মাধ্যমে মহামারী করোনা থেকে সুরক্ষিত থাকতে পারেন। নিয়েছেন সচেতনতামূলক নানা উদ্যোগও।

করোনার শুরুতে অনেক চিকিৎসক যখন ব্যক্তিগত প্রাকটিস বন্ধ রেখেছিলেন। মানুষের হয়রানি, ভোগান্তি ও অসুস্থতার কথা ভেবে চেম্বার, অপারেশন কিছুই বন্ধ রাখেননি এই মানব সেবক। দিনে করোনার চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার সমন্বয়কারীর দায়িত্ব পালন শেষে রাতে চেম্বার ও অপারেশন করে গভীর রাতে বাড়ি ফিরতেন এই করোনা যোদ্ধা।

সহকারী অধ্যাপক ডাঃ মেহেদী নেওয়াজ বলেন, করোনা হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসার জন্য ইতোমধ্যে হাই ফ্লো নেজাল কেনোলা ব্যবস্থা করা হয়েছে। পদ্মার এপারে একমাত্র করোনা হাসপাতাল যেখানে আমরা কিডনি রোগীদের জন্য ডায়ালসিস এর ব্যবস্থা করেছি। এছাড়া ইর্ন্টাণ চিকিৎসকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য আলাদা ডরমেটরীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি বলেন, করোনার শুরু থেকে আমরা মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও জীবন বাঁচানোর জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। অনেক সময় নিজের স্বাভাবিক জীবনের প্রতি অনিয়ম হয়েছে। কখনও পরিবারের প্রতি দায়িত্ব পালন করতে পারিনি। বাবা মায়ের কাছে যেতে পারিনি। তারপরও সারাদেশের তুলনায় যদি খুলনাকে করোনামুক্ত রাখতে পারি, তাহলে নিজের পরিশ্রম সার্থক মনে করবো।

খুলনা গেজেট/এমবিএইচ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!