রাত পোহালেই ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে অনুষ্ঠিত হচ্ছে সাতক্ষীরা পৌরসভা নির্বাচন। নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতিমধ্যে নেয়া হয়েছে সব ধরনের প্রস্তুতি। কেন্দ্রে কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে নির্বাচনী সরঞ্জমাদী। শনিবার দুপুর ২ টা থেকে এ নির্বাচনী সামগ্রী পাঠানোর কার্যক্রম শুরু হয়। নির্বাচনে মেয়র পদে ৫ জন, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১২ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৫১ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এদিকে, সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণের লক্ষ্যে পর্যাপ্ত সংখ্যক আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। নির্বাচনে মোট ভোটার ৮৯ হাজার ২২৪ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৪৩ হাজার ৪১৮ জন ও মহিলা ভোটার ৪৫ হাজার ৮০৬ জন। ৯টি ওয়ার্ডে ৩৭ টি কেন্দ্রে ২৪৮টি বুথে ভোট গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার শরিফুল ইসলাম।
মেয়র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারি ৫জন হলেন-বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের শেখ নাসেরুল হক, বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের বর্তমান মেয়র আলহাজ্ব তাসকিন আহমেদ চিশতি, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত হাতপাখা প্রতীকের ডাঃ এসএম মুসতাফীজউর রউফ, স্বতন্ত্র প্রার্থী নারিকেল গাছ প্রতীকের নাছিম ফারুক খান মিঠু ও অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী জগ প্রতীকের জামায়াত নেতা নুরুল হুদা। বিগত পৌর নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী থাকলেও এবার নেই। ফলে পৌরসভায় জাতীয় পার্টির ভোট কোন বাক্সে পড়বে তা বলা মুশকিল। সামগ্রিক ভোটের সমীকরণ কেবলমাত্র সাধারণ ভোটারদের ভোটাধিকারের মাধ্যমেই স্পষ্ট হবে বলে মনে করছেন নির্বাচন বিশ্লেষকরা।
এবারের নির্বাচন হবে ইভিএম পদ্ধতিতে। শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়েছে মক ভোটিং পদ্ধতি। নির্বাচনকে অবাধ, শান্তিপূর্ণ এবং নিরপেক্ষ করতে নির্বাচন কমিশনের ঘোষণায় সাধারণ ভোটারদের মাঝে বিশেষ ধরনের উৎসবের সৃষ্টি হয়েছে। সাতক্ষীরার আইন-শৃংখলা বাহিনীর তৎপরতা চোখে পড়ার মতো। যেকোন ধরনের বিশৃংখলা রোধে শহরের মোড়ে মোড়ে পুলিশী টহল, পুলিশী অবস্থান ভোটারদের মাঝে আস্থার সৃষ্টি করছে। সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মির্জা সালাউদ্দিন পৌরসভার বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন। ভোট কেন্দ্র গুলোতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিতকরণে পুলিশ সুপারের নির্দেশনা, কর্মতৎপরতা মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের মাঝে বিশেষ আস্থা বিরাজ করছে। শুক্রবার শহরের প্রতিটি এলাকায় মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা নির্বাচনী মিছিল, পথসভা, শোডাউন, শোভাযাত্রা করেছে। প্রচার প্রচারণার শেষ দিনেও শান্তিপূর্ণ পরিবেশের সামান্যতম ঘাটতি ছিল না।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডে ৩ জন, ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডে ৪ জন এবং ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডে ৫ জন। সাধারণ সদস্য কাউন্সিলর পদে ১নং ওয়ার্ডে ১০ জন, ২নং ওয়ার্ডে ৩ জন, ৩নং ওয়াডে ৬ জন, ৪নং ওয়ার্ডে ৪ জন, ৫নং ওয়ার্ডে ৯ জন, ৬নং ওয়ার্ডে ৫ জন, ৭নং ওয়ার্ডে ৬ জন, ৮নং ওয়ার্ডে ৪ জন এবং ৯নং ওয়ার্ডে ৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এবারে নির্বাচনী তফসীল ঘোষণা, প্রতিক বরাদ্দসহ দীর্ঘ কয়েকদিনের প্রচার প্রচারণা এবং গণসংযোগের সময় প্রার্থী ও প্রার্থীদের কর্মি সমর্থকের মধ্যে কোথাও কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যেমন ঘটেনি। অনুরূপ প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদের আচরণ বিধি লঙ্ঘনের ঘটনাও ঘটেনি। নির্বাচনী পরিবেশ ছিল উৎসবমুখর। রবিবার বিশ্ব ভালবাসা দিবস। আর ভালবাসা দিবসে ভোটাররা কোন মেয়র প্রার্থী এবং কাউন্সিলর প্রার্থীদের ভালবাসা আর ভাললাগায় আবদ্ধ করবেন-সেটাই দেখার বিষয়। কেবল পৌরবাসি নয়, সাতক্ষীরা জেলার বিশ লক্ষাধিক জনগোষ্ঠী অপেক্ষার প্রহর গুনছেন মেয়র হিসেবে কে এবং কাউন্সিলর হিসেবে কে কে বিজয়ের হাসি হাসবেন।
সাতক্ষীরা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মীর্জা সালাহ উদ্দীন জানান, সাতক্ষীরা পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে ৩৭ টি কেন্দ্রেই গুরুত্বপূর্ন। কেন্দ্র গুলোতে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও রাখা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে ৬ শতাধিক পুলিশ ও আনসার সদস্য নিয়োজিত রয়েছে বলে তিনি জানান।
খুলনা গেজেট/ টি আই