এক ছিল রাজা। তার ছিল সাত রাণী। তাদের কোন সন্তান নেই। রাজার বড় দুঃখ। রাজ্যের সবাই হাট কুড়ে রাজা বলে। একদিন এক ভিক্ষুক এসে বললো,
: মা আমাকে ভিক্ষা দাও।
রাণী বললো
: আমাদের কোন সন্তানকে ভিক্ষা দিবে?
: এই নাও এই ফল পিশে খাবে।
রাজা ছোট রাণীকে বেশি আদর করতেন। তাই ৬ রাণী হিংসা করত তাকে খেতে দিবে না বলে। বললো,
: এই টুকরী করে পুকুর থেকে পানি নিয়ে এসো।
ছোট রাণী পানি আনতে টুকরী নিয়ে গেল কিন্তু পানি আনতে পারে না। টুকরী দিয়ে পানি পড়ে যায়। অনেকক্ষন চেষ্টা করে খালি টুকরী নিয়ে ফিরে এলো।
: পানি আনতে পারলামনা।
: আর লাগবে না। তোমার দেরী দেখে আমরা পিশে খেয়ে ফেলেছি।
: আমাকে দিলেন না।
: ঘরের পিছে রেখে আসছি ধুয়ে খেয়ে নাও।
এক সময় ছয় রাণীর ছয় ছেলে হল। আর ছোট রাণীর হল বেজীর বাচ্চা (নেউল)। রাজা ছোট রাণীকে জঙ্গলে ঘর করে দিল। রাণী সেখানে থাকে। এক সময় সবাই বড় হয়ে গেল। বেজী মানুষের মত কথা বলে। রাজা ছয় ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করে দিল। বেজীর খুব পড়ার ইচ্ছে তাই স্কুলের পিছনে থেকে পড়া শেখে। ওদের পড়ার প্রতি মনোযোগ ছিল না। ছয় ভাই বেজীকে শুধু হিংসা করত কিন্তু বেজী ওদের খুবই শ্রদ্ধা করতো। ছয় ভাই একসাথে স্কুলে যেত কিন্তু বেজীকে নিত না। বেজী দূরে দূরে ওদের পিছে পিছে হাঁটতো। ছয়জন একদিন দেখে গাছে কাঁঠাল পেকে আছে। তারা বললো,
: বেজী যদি আসতো কাঁঠাল খাওয়া যেত।
: এইতো আমি।
: ঐ কাঁঠালটা পাড়।
বেজী গাছে উঠে কাঁঠাল পাড়ল। তারা খেল কিন্তু তাকে দিল না। উপরন্তু তাড়িয়ে দিল। বেজী তাতে দুঃখ পেল না। মনে মনে গর্বিত ভাইদের কাজে আসতে পেরে।
মাঝে মাঝে ছয় ভাই যখনই সমস্যায় পড়ে বেজীকে স্মরণ করে। বেজী এসে সমস্যা সমাধান করে দেয় কিন্তু তারা অবহেলা করে। এক সময় পরীক্ষা এলো। সবাই পরীক্ষা দিবে। বেজী প্রধান শিক্ষককে বললো। তিনি তাকে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দিলেন। ফল দেওয়ার সময় দেখা গেল বেজী সবার চেয়ে বেশী নাম্বার পেয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। আর ছয় ভাইয়ের কেউ পাস করতে পারেনি। সকল শিক্ষক অবাক হয়ে গেল। রাজা শুনে রাগে আগুন। ৬ ছেলের পিছনে হাজার হাজার টাকা খরচ করছে। আর বেজীকে অবহেলা করলো। ছোট রাণীকে বাড়ি ফিরিয়ে আনল। ওদেরকে বনবাসে দিল। বেজী ঘুমানোর সময় তার খোলস খোলে ঘুমায়। রাণী দেখে তার খোলস জ্বালিয়ে ফেললো দেখতে পেল সুন্দর এক ছেলে।
খুলনা গেজেট/কেএম