যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের গার্ড ভবনের বাথরুমের জানালা ভেঙে ৮ বন্দি কিশোর পালিয়েছে। এরমধ্যে ৩ জনকে পুলিশ আটক করেছে। এছাড়া অন্যদের আটক করতে তাদের বাবা, মা ও স্বজনদের সাথে যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ। বন্দি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দ্রুত ৫ পলাতককে আটক করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন সমাজ সেবা অধিদপ্তর যশোরের উপ পরিচালক অসিত কুমার সাহা।
রবিবার দিবাগত রাত ২টা ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে মূল ভবনের পাশের গার্ড রুমের বাথরুমের জানালা ভেঙে পালিয়ে যায় কোয়ারেন্টাইনে থাকা ৮ বন্দি কিশোর। যশোর কোতোয়ালি থানায় করা জিডি অনুসারে এরা হচ্ছে, যশোরের হৃদয়, ফারদিন, আব্দুল কাদের, খুলনার রোহান গাজী, সোহাগ শেখ, নড়াইলের মুন্না গাজী, গোপালগঞ্জের শাহ আলম, বরিশালের মাইনুর রহমান শাকিব।
পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় ৭ ডিসেম্বর সকালে যশোর কোতোয়ালি থানায় জিডিসহ বিষয়টি সমাজসেবা অধিদপ্তরের উর্ধŸতন কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ সুপারকে অবগত করা হয়। তৎক্ষণাৎ পলাতকদের আটকে অভিযান শুরু হয়। যশোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফ হোসেনের তত্বাবধানে পুলিশ পলাতক কিশোরের বাড়ি ও তাদের আত্মীয় স্বজনের কাছে অভিযান চালায়। এসব বাড়িতে খোঁজ নিয়ে ৩ জনের সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর সন্ধ্যায় পলাতক ৩ জনকে পুলিশ আটক করে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ আটককৃতদের নাম জানাতে রাজি হননি।
এ ব্যাপারে সমাজসেবা অধিদপ্তর যশোরের উপ পরিচালক অসিত কুমার সাহা ও শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের সহকারি পরিচালক জাকির হোসেন জানিয়েছেন, তিনজনকে আটক করা হলেও অন্য ৫ পলাতককে আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তাদের পরিবারে সাথে সর্বোচ্চ যোগায়োগ রক্ষা করা হচ্ছে। দ্রুত তাদের কেন্দ্রে ফেরত আনা সম্ভব হবে। কিশোর পালিয়ে যওয়ার ঘটনায় ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামি ৩ কর্মদিবসের মধ্যে কমিটি তাদের রিপোর্ট পেশ করবে। কেন কিভাবে কি কারণে তারা পালিয়ে গেল, কাদের গাফিলতি ছিল এসব ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। ঘটনায় জড়িত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে ১৩ আগস্ট দুপুরে যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে মারপিটে নিহত হয় বগুড়ার শিবগঞ্জের তালিবপুর পূর্বপাড়ার নান্নু পরামানিকের ছেলে নাঈম হোসেন (১৭), খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা সেনপাড়ার রোকা মিয়ার ছেলে পারভেজ হাসান রাব্বি (১৮) ও বগুড়ার শেরপুর উপজেলার মহিপুরের নুরুল ইসলাম নুরুর ছেলে রাসেল হোসেন ওরফে সুজন (১৮)। এ সময় আরো ১৫ শিশু গুরুতর জখম হয়। এ ঘটনার পর কেন্দ্র থেকে ৩ দফা বন্দি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
খুলনা গেজেট / এমএম