যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে ধর্ষণ মামলায় আটক থাকা ৪ শিশুকে উচ্চ আদালতের নির্দেশে তাদের অভিভাবকের কাছে পৌঁছে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ৮ অক্টোবর রাত আড়াইটায় যশোর থেকে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়। এর আগে ওইদিন এ ৪ শিশুকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসে করে রাতের মধ্যে অভিভাবকদের কাছে পৌঁছে দেয়ার নির্দেশনা দেয় হাইকোর্ট। ওই আদেশ যথাযথভাবে র্কাযকর হয়েছে বলে জানিয়েছেন সমাজসেবা অধিদপ্তর যশোরের উপ পরিচালক অসিত কুমার সাহা।
ধর্ষণ মামলায় আটক চার শিশুকে যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর একটি সংবাদ আমলে নিয়ে ৮ অক্টোবর রাত ৯ টায় বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে আদেশ দেন তাদের আভিভাকের কাছে পৌঁছাতে। ওই আদেশে বরিশালের শিশু আদালতের বিচারককে ওই চার শিশুর জামিন নিষ্পত্তির বিষয়ে বলা হয়।
বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালককে আগামী ১১ অক্টোবরের মধ্যে ভিকটিম শিশুর ধর্ষণ সংক্রান্ত মেডিকেল রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়। নির্দেশ দেয়ার দিন রাতেই শিশুদের তাদের মা বাবার কাছে পৌঁছে দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমানকে অবগত করতে নির্দেশ দেয়া হয়। পরে সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ কর্মকর্তা হাইকোর্টের সব নির্দেশনা বরিশালের শিশু আদালতের বিচারক, জেলা প্রশাসক, পরিচালক, বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, সংশ্লিষ্ট সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, বাকেরগঞ্জ থানার ওসিকে টেলিফোনে অবগত করেন। হাইকোর্টের আদেশ অবগত হওয়ার পর বরিশালের শিশু আদালতের বিচারক ওই চার শিশুর জামিন মঞ্জুর করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বরিশালের বাকেরগঞ্জে গত ৪ অক্টোবর ছয় বছরের প্রতিবেশি এক কন্যা শিশুর সাথে ওই চার ছেলে শিশু বাগানে বসে খেলছিল। এরপর মেয়ে শিশুটিকে তার পরিবার অসুস্থ অবস্থায় বরিশাল মেডিকেলে নিয়ে যায়। এরপর সেই চার ছেলে শিশুকে গত ৬ অক্টোবর আসামি করে বাকেরগঞ্জ থানায় কন্যা শিশুর বাবা ধর্ষণের মামলা করেন। ওই মামলায় চার শিশুকে আটক করে গত ৭ অক্টোবর আদালতে হাজির করা হলে তাদের যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেন বরিশালের বাকেরগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এনায়েত উল্লাহ।
এদিকে, ধর্ষণের মামলায় ওই চার শিশুকে যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে কেন পাঠানো হয়েছে আগামি ১১ অক্টোবর সশরীরে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বরিশালের বাকেরগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এনায়েত উল্লাহকে তলব করেন হাইকোর্ট। একই আদেশে বাকেরগঞ্জ থানার ওসিকে ওই চার শিশুর অভিভাবকসহ আগামি ১১ অক্টোবর হাইকোর্টে সশরীরে উপস্থিত হওয়ার আদেশ দেয়া হয়।
শিশুদের স্বজনরা অভিযোগ করেন, তাদের শিশুরা ধর্ষক নয়। পূর্বশত্রæতার জের ধরে তাদের শিশু সন্তানদের এ মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।
এ ব্যাপার যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা সমাজসেবা অধিদপ্তর যশোরের উপ পরিচালক অসিত কুমার সাহা বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় ৮ অক্টোবর রাত আড়াই টাই বিশেষ নিরাপত্তা দিয়ে কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনায় ৪ শিশুকে বাবা মায়ের কাছে পৌছে দেয়া হয়েছে। আদালতের ওই আদেশ শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ যথাযথভাবে পালন করেছে।
খুলনা গেজেট/কেএম